মাদাগাস্কারের সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ বিদ্রোহী সেনাদের হাতে
Published: 12th, October 2025 GMT
মাদাগাস্কারে সরকারবিরোধী জেন-জিদের বিক্ষোভে সমর্থন দিয়েছে সেনাবাহিনীর একটি অংশ। গতকাল রোববার বিদ্রোহী ওই সেনা ইউনিটের পক্ষ থেকে মাদাগাস্কারের পুরো সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা বলেছেন, অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা চলছে।
মাদাগাস্কারের যে বিদ্রোহী সেনা ইউনিট সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, সেটি ক্যাপস্যাট নামে পরিচিত। এ ইউনিট প্রশাসনিক ও কারিগরি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত। গত শনিবার সেনাবাহিনীর এই ইউনিটটি কর্তৃপক্ষের আদেশ উপেক্ষা করে রাজধানী আন্তানানারিভোতে জমায়েত হওয়া হাজার হাজার সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারীর সঙ্গে যোগ দেয়।
বিদ্যুৎ ও পানির সংকটকে কেন্দ্র করে গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে মাদাগাস্কারে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। শনিবার তরুণদের নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভকারীরা প্রথমবারের মতো মাদাগাস্কারের রাজধানী শহরের মে থার্টিন চত্বরে প্রবেশ করেন। চলমান এ বিক্ষোভে এ পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বড় জমায়েতগুলোর একটি এটি। এর আগে ইউনিটটির পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি করার নির্দেশ না মানার ঘোষণা দেওয়া হয়।
সম্প্রতি কেনিয়া ও নেপালে হওয়া সরকারবিরোধী বিক্ষোভের অনুপ্রেরণায় ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রটিতে এমন বিক্ষোভ হচ্ছে। কেনিয়া ও নেপালের ওই বিক্ষোভ জেন-জি বিক্ষোভ হিসেবে পরিচিত। মাদাগাস্কারের পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে স্টান গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ার পর কিছুসংখ্যক সেনাসদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছান। বিক্ষোভকারীরা তখন সেনাসদস্যদের স্বাগত জানান এবং উল্লাস প্রকাশ করেন।
গতকাল ক্যাপস্যাট কর্মকর্তারা এক ভিডিও বার্তায় দাবি করেন, এখন থেকে মাদাগাস্কার সেনাবাহিনীর সব আদেশ—হোক তা স্থল, বিমান বা নৌ—ক্যাপস্যাট সদর দপ্তর থেকেই জারি হবে। কর্মকর্তারা বলেন, তাঁরা জেনারেল ডেমোস্থেন পিকুলাসকে সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। অন্য ইউনিটগুলো বা বর্তমান সামরিক কমান্ড থেকে এ তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
এর আগে আন্তানানারিভো শহরের উপকণ্ঠে অবস্থিত একটি সেনা ব্যারাকে সেনাসদস্যদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়। ওই সময় মাদাগাস্কারের সেনাবাহিনীর বিশেষ ইউনিট সিএপিএসএটির সেনাসদস্যরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভকারীদের করা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশের আবেদন জানান, যা বিরল ঘটনা। কারণ, ২০০৯ সালে রাজোয়েলিনার উত্থানের ক্ষেত্রে এই সিএপিএসএটি ইউনিটের মুখ্য ভূমিকা ছিল।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাতটি দেশের প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিবন্ধন কার্যক্রম স্থগিত করেছে ইসি
সব প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের ‘পোস্টাল ব্যালটের’ মাধ্যমে ভোট দেওয়ার জন্য নিবন্ধন অ্যাপ উন্মুক্ত করার আড়াই ঘণ্টার মাথায় ঠিকানা–সংক্রান্ত জটিলতায় সাতটি দেশের নিবন্ধন কার্যক্রম স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামীকাল শুক্রবার সকাল থেকে পুনরায় এসব দেশে নিবন্ধন শুরু করার কথা জানিয়েছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর সবার জন্য নিবন্ধন অ্যাপ উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।
বর্তমানে সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, ওমান, কুয়েত, আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়ার ভোটাররা তাঁদের ঠিকানা দিয়ে নিবন্ধন করতে গিয়ে জটিলতায় পড়ে নিবন্ধন করতে পারছেন না।
বিষয়টি তুলে ধরে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আউট অব কান্ট্রি ভোটিং (ওসিভি) প্রকল্পের টিম লিডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সালিম আহমেদ খান। তিনি বলেন, ‘কালকে রাতে যখন আমরা শুরু করেছি, শুরু করার পর রেসপন্স খুব হাই ছিল।...আনুমানিক আড়াইটার দিকে আমরা দেখলাম যে আমাদের স্পেশালি সাতটা দেশে সৌদি আরব, কাতার, বাহরাইন, ওমান, কুয়েত আর এদিকে মালয়েশিয়া...ইউনাইটেড আরব এমিরেটসসহ এই কয়টা দেশের প্রবাসী ভোটাররা ওনাদের কিছু অ্যাড্রেসে ভুল হচ্ছে। অ্যাড্রেসগুলো ওনারা ঠিকমতো দিতে পারছেন না।’
প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটারদের ঠিকানা ভুল হলে তাঁদের ব্যালট পৌঁছাবে না উল্লেখ করে সালিম আহমেদ খান বলেন, ‘আমরা যখন নোটিশ করলাম, তখন আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিলাম যে এখন এই সাতটা দেশে বন্ধ রাখাটাই ভালো হবে সাময়িকভাবে।’
সালিম আহমেদ খান বলেন, এ নিয়ে কাজ হচ্ছে। সকাল থেকে ওই দেশগুলোর দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। কাল সকালের মধ্যে অ্যাপটা উন্মুক্ত করে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ এবং যেকোনো জটিলতার সমাধানে বোটিম, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিকল্প মাধ্যমে কাজের কথাও জানান তিনি।
এ সময় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিবালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘প্রবাসী ভোটারদের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে এক্সপেক্টেশন যেটা হাই ছিল, এখনো আমাদের হাই আছে।’ নিবন্ধন–সংক্রান্ত সৃষ্ট জটিলতা শিগগিরই কেটে যাবে জানিয়ে তিনি বলেন, নিবন্ধনের সময়সীমা আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্তই থাকছে।