ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সাবেক পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন (অব.) এম কে জাকির হাসান বলেছেন, কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডের কারণ তদন্তে বেরিয়ে আসবে। নাশকতার সন্দেহের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ঢিল ছোড়া ঠিক নয়।’

আজ শনিবার রাতে প্রথম আলোকে জাকির হাসান বলেন, ঢাকার বিমানবন্দরের অগ্নিনির্বাপণের ব্যবস্থা ভালো। এটি ক্যাটাগরি–৯–এ রয়েছে; অর্থাৎ সেখানে আগুন নেভানোর জন্য আছে তিনটি ‘ফায়ার ফাইটিং ইউনিট’। তবে বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ এলাকায় আগুন নেভানোর জন্য আরও বেশি সরঞ্জাম দরকার।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আজ শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে আগুন লাগে। রাত ৯টা ১৮ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। আগুনের কারণে বিমানবন্দরে উড়োজাহাজ ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়।

বিষয়টি নিয়ে জাকির হাসান বলেন, মনে রাখতে হবে, এটা এয়ারক্রাফট ফায়ার নয়; অর্থাৎ কোনো উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার কারণে আগুন লাগেনি। ফলে এই অগ্নিকাণ্ড হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রেটিংয়ের ওপর প্রভাব ফেলবে না। আগুনটি লেগেছে কার্গো ভিলেজে। যেখানে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যের মালামাল রাখা হয়।

তিনটি ফায়ার ফাইটিং ইউনিট কার্গো ভিলেজের আগুন নেভাতে ভূমিকা রাখতে পারে উল্লেখ করে জাকির হাসান বলেন, তবে এত বড় আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস এবং সেনা, বিমান ও অন্যান্য বাহিনীর সহযোগিতা দরকার। সেটা করাও হয়েছে।

আগুন লাগা ঠেকানো ও নেভানোর ক্ষেত্রে কোনো ঘাটতি ছিল কি না, জানতে চাইলে জাকির হাসান বলেন, ‘ঘাটতি বলব না, তবে এটা একটি শিক্ষা। বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে আগুন নেভানোর ফায়ার হাইড্রেন্টসহ আরও সরঞ্জাম দরকার। সেখানে নানা সরঞ্জাম আছে। তবে ফায়ার হাইড্রেন্ট নেই।’

ফায়ার হাইড্রেন্ট হলো পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। বড় স্থাপনায় এ ব্যবস্থা থাকে। আগুন নেভাতে তা কাজে লাগে।

জাকির হাসান বলেন, ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে সাধারণত রাসায়নিক, ওষুধের কাঁচামালসহ নানা পণ্য থাকে। ফলে আগুন লেগে গেলে নেভানো কঠিন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ ক র হ স ন বল ন আগ ন ল গ আগ ন ন ভ ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এতিমখানার সুপারকে আসামি করে দুদকের মামলা

মাদারীপুরে একটি এতিমখানার অন্তত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এতিমখানার সুপারকে আসামি করে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক সাইদুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন মাদারীপুরের সাবেক শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা শ্যামল পাণ্ডে ও হজরত শাহ মাদার (র.) দরগাহ শরিফ এতিমখানার সুপার মোহাম্মদ আল-আমিন। সমাজসেবা কর্মকর্তা শ্যামল বর্তমানে মাদারীপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে সমাজসেবা কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।

এর আগে গত ১৫ জুলাই মাদারীপুর পৌর এলাকার দরগাহ শরিফ–সংলগ্ন এলাকায় হজরত শাহ মাদার (র.) দরগাহ শরিফ এতিমখানায় অভিযান চালায় দুদক। এ সময় দুদকের সদস্যরা এতিমখানার মোহতামিম মোহাম্মদ আল-আমিনসহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। অভিযানে এতিমদের জন্য প্রাপ্ত সরকারি বরাদ্দ, ছাত্রসংখ্যা এবং আর্থিক লেনদেনের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হলে সেখানে ব্যাপক অনিয়ম লক্ষ করা যায়।

দুদকের সূত্র জানায়, ২০১৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ৬ বছরে সরকারি হিসাবে ১৪৫ জন এতিম শিশুর জন্য মাসে ২ হাজার টাকা হারে প্রায় ২ কোটি ৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে এতিমখানায় মাত্র ৪০ জন শিক্ষার্থী আছে। এ ছাড়া এতিমখানার সুপার আল-আমিনের বিরুদ্ধে ৪৭ লাখ টাকার এফডিআর (স্থায়ী আমানত) জাল স্বাক্ষরের মাধ্যমে উত্তোলন করার অভিযোগ আছে।

মামলায় দুদক উল্লেখ করে, সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এতিমখানার সুপার দুজনে পরস্পর যোগসাজশে ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তাঁরা উভয়ই এতিমখানায় প্রকৃত এতিমের সংখ্যা গোপন করেছেন। ৪ বছরে অতিরিক্ত ক্যাপিটেশনগ্র্যান্ট–ভুক্ত দুস্থ ও এতিম নিবাসী দেখিয়ে ৪৩ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং স্বাক্ষর জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে এতিমদের কল্যাণে ব্যবহৃত ইসলামী ব্যাংক, মাদারীপুর শাখার এমএমপিডিআর (মুদারাবা মান্থলি প্রফিট ডিপোজিট স্কিম) ৪৭ লাখ টাকা, অনুদানকৃত ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৯১৭ টাকাসহ মোট ১ কোটি ১ লাখ ১৯ হাজার ৯১৭ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

মামলা রেকর্ডকারী কর্মকর্তা ও দুদকের উপসহকারী পরিচালক শ্যামল চন্দ্র সেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি, ১৮৬০–এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করার প্রমাণ পাওয়া যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশে তাঁদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করা হয়েছে।’

দুদকের মাদারীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের অভিযানের পর কমিশন থেকে মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে আজ মামলা করা হয়। এখন পর্যন্ত তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হয়নি। তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ হলেই আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বারবার অগ্নিকাণ্ড স্পষ্ট করেছে নিরাপত্তাব্যবস্থার দুর্বলতা: তারেক রহমান
  • কার্গো ভিলেজ কী, সেখানে কী থাকে
  • শাহজালাল বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে আগুন
  • বিমানবন্দরে ক্রিকেটারদের হেনস্থা, জড়িতদের ধরতে আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছে বিসিবি
  • কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সমাজসেবা কর্মকর্তা ও এতিমখানার সুপারকে আসামি করে দুদকের মামলা