যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের সবকটিতে শনিবার ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। কর্তৃত্ববাদী শাসনের দিকে ধাবিত হওয়া ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে সতর্কবার্তা দিতেই এই বিক্ষোভ বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে বামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর একটি জোট এই এক দিনের গণবিক্ষোভের নেতৃত্ব দিয়েছে। এই জোট জুনে ‘নো কিংস’ প্রতিবাদ দিবসের নেতৃত্ব দিয়েছিল। আয়োজকরা জানিয়েছেন, এই বিক্ষোভকে নো কিংস বলার কারণ হচ্ছে, আমেরিকায় কোনো ধরণের নিরঙ্কুশ শাসক নেই তা তুলে ধরার জন্য এই প্রতিবাদ এবং এটি ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ।

মাত্র ছয় মাস আগে ডেমোক্রেটদের জাতীয় নির্বাচনে পরাজয়ের পর হোয়াইট হাউস এবং কংগ্রেসের উভয় কক্ষ রিপাবলিকানদের দখলে চলে যায়। এতো স্বল্পসময়ের ব্যবধানে রিপাবিলকানদের বিরুদ্ধে এতো বড় বিক্ষোভ রীতিমতো ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।

আয়োজক ও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবারের সমাবেশে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ উপস্থিত ছিলেন - যার মধ্যে নিউ ইয়র্কে  এক লাখেরও বেশি মানুষও ছিলেন। প্রধান শহরগুলোতে বৃহত্তর অনুষ্ঠানের পাশাপাশি, লাল এবং নীল রাজ্যের ব্যস্ততম রাস্তাগুলোতে, ছোট শহরের স্কোয়ারগুলোতে এবং পৌর পার্কগুলোতে ‘নো কিংস’ বিক্ষোভকারীদের ছোট ছোট দল জড়ো হয়েছিল।

শিকাগোতে কমপক্ষে এক লাখ মানুষ জড়ো হয়েছিল। এদের অনেকেই ফেডারেল ইমিগ্রেশন এজেন্টদের বিরুদ্ধে বা ট্রাম্পকে উপহাস করা প্ল্যাকার্ড হাতে রেখেছিল। 

শিকাগোর মেয়র ব্র্যান্ডন জনসন জনতাকে বলেছেন, ট্রাম্প প্রশাসন “সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে তারা গৃহযুদ্ধের নতুন খেলা চায়। আমরা এখানে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছি এবং অঙ্গীকারবদ্ধ যে আমরা নত হব না, আমরা নত হব না, আমরা ভয়ের কাছে নত হব না, আমরা আত্মসমর্পণ করব না। আমরা আমাদের শহরে সেনা চাই না।”

ওয়াশিংটন ডিসির দুই লাখেরও বেশি বাসিন্দা মার্কিন ক্যাপিটলের কাছে সমাবেশ করেছিলেন। 

অনেক বিক্ষোভকারী গণতন্ত্রের গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন - ট্রাম্পের নির্বাহী ক্ষমতা সম্প্রসারণের প্রচেষ্টার ফলে প্রশাসন ধ্বংস হচ্ছে বলে তারা আশঙ্কা করছেন।

এক বিক্ষোভকারী বলেছেন, “আমরা গণতান্ত্রিক দেশে বাস করি। গণতন্ত্রে মানুষ উঠে দাঁড়াতে পারে এবং তাদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। এবং আমরা চুপ করে থাকব না।” 
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ সন র

এছাড়াও পড়ুন:

মত ও পথের পার্থক্য থাকবে, কিন্তু এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: আলী রীয়াজ

একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা ব্যক্ত করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘আমাদের মতের পার্থক্য থাকবে। রাজনীতিতে মতপার্থক্য না থাকলে তা গণতান্ত্রিক হয় না। মতের পার্থক্য থাকবে, পথের পার্থক্য থাকবে, কিন্তু এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’

সেই অভীষ্ট জায়গা গণতন্ত্র বলে উল্লেখ করেছেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। প্রত্যাশা জানিয়ে আলী রীয়াজ বলেছেন, ‘বহু স্রোত যেন মোহনায় এসে মেলে, যেন আমরা বলতে পারি যে আমাদের অনেক স্রোত, কিন্তু মোহনা একটি। সেটি হচ্ছে, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ তৈরি করা। আমাদের বহু স্রোত, আমরা সকলে এক জায়গায় যে আমরা যেকোনো ধরনের স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সবাই দাঁড়িয়ে থাকব।’

আজ শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন অধ্যাপক আলী-রীয়াজ। যিনি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি হিসেবে আট মাস ধরে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার মধ্য দিয়ে দেশের নানা ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে জুলাই সনদ চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে সবাইকে স্বাগত জানিয়ে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘এই দিন বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি অভূতপূর্ব এবং অনন্য সময়। একটি ক্রান্তিকালে দাঁড়িয়ে থাকা বাংলাদেশের জন্য এটি হচ্ছে আমাদের দীর্ঘ পথের যাত্রার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক। সাম্য, মানবিক মর্যাদা এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের আদর্শের যে রাষ্ট্র গঠনের প্রচেষ্টা তা, ৫৩ বছর ধরে বারবার হোঁচট খেয়েছে। এরপরও দেশের নাগরিকেরা গণতন্ত্র এবং জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়।’

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান, ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা স্মরণ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় আজকে এই জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর হতে যাচ্ছে। একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রায় এক বছর ধরে পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে এই জাতীয় সনদে উপনীত হয়েছে।

এই জুলাই জাতীয় সনদ কেবল রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি নয়, এটা নাগরিকের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ও রাষ্ট্রের একটি সামাজিক চুক্তি বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে যাঁরা প্রাণ দিয়েছেন, যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের অবদানের মধ্য দিয়ে এই সনদ তৈরি হয়েছে।

রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য সবার যে চেষ্টা, তা এক দিনে সাফল্য অর্জন করবে না এবং একটি দলিল কেবল সেই নিশ্চয়তা দেবে না বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ। আশাবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যে জাতীয় দলিল তৈরি হয়েছে, তার বাস্তবায়ন ঘটবে। দ্রুততার সঙ্গে বাস্তবায়ন ঘটবে। নাগরিকদের মতামতের মধ্য দিয়ে এই দিক দিশা নির্দেশক বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ভবিষ্যতে পরিচালনা করবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে এগিয়ে আসার আহ্বান মির্জা ফখরুলের
  • নেতানিয়াহুর সঙ্গে ফোনে কী কথা বললেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মাচাদো
  • দুর্গাপূজায় প্রতিকূলতার আশঙ্কা ছিল, সবার সহযোগিতায় সেটা ঠেকানো গেছে: বিজন কান্তি সরকার
  • মত ও পথের পার্থক্য থাকবে, কিন্তু এক জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে: আলী রীয়াজ
  • ‘নোট অব ডিসেন্টগুলো’ লিপিবদ্ধ হলে বিএনপি জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে: মির্জা ফখরুল
  • ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান দুদুর