নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে আজ রোববার জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাটের সড়ক ব্লকেড ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। নোয়াখালী বিভাগ বাস্তবায়ন পরিষদের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শাখার উদ্যোগে আজ রোববার দুপুরে বসুরহাটের জিরো পয়েন্টে ওই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। এ সময় সড়ক ব্লকেড কর্মসূচির কারণে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘নোয়াখালীকে স্বতন্ত্র প্রশাসনিক বিভাগ ঘোষণার দাবি আমাদের প্রাণের দাবি। এই দাবির সঙ্গে এ অঞ্চলের এক কোটির বেশি মানুষের আবেগ, অনুভূতি জড়িয়ে আছে। এই দাবির বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো ধরনের ছলচাতুরি সহ্য করা হবে না। কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র মেনে নেওয়া হবে না। আমরা যেকোনো মূল্যে আমাদের দাবি আদায় করে ছাড়ব।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কর্মসূচি পালন উপলক্ষে আজ সকাল থেকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিনিধি, বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিসংবলিত ব্যানার, পোস্টার নিয়ে বসুরহাটের জিরো পয়েন্টে সমবেত হতে থাকেন। বেলা ১১টার সময় তাঁরা জিরো পয়েন্টে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে সড়ক ব্লকেড ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বিভাগ বাস্তবায়ন কমিটির উপজেলা শাখার আহ্বায়ক সাংবাদিক এহছানুল হক। বিভাগ বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যসচিব নুর নবী আহমেদের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব মাহমুদুর রহমান, উপজেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ বেলায়েত হোসেন, জামায়াতের বসুরহাট পৌরসভা আমির মোশাররফ হোসেন, কোম্পানীগঞ্জ শিক্ষক সমিতির নেতা হারুনুর রশীদ, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ফজলুল করিম, সদস্যসচিব জাহিদুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উই ফর ইউর ইব্রাহিম সায়েম প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ‘একটি মহল নোয়াখালীকে প্রস্তাবিত কুমিল্লা বিভাগের সঙ্গে যুক্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। এই ষড়যন্ত্র নোয়াখালীর মানুষ কখনো সফল হতে দেবে না। বৃহত্তর নোয়াখালীর তিন জেলাকে নিয়ে আলাদা বিভাগ ঘোষণা করতে হবে। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দল ছাড়াও সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উই ফর ইউ, জীবন আলো, অফুরন্ত ব্লাড ব্যাংক, একাডেমি বাজার সমাজকল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, কোম্পানীগঞ্জ কনটেন্ট ক্রিয়েটর, একতা বাজার যুব উন্নয়ন সংস্থা, আল-আনফাল ফাউন্ডেশন, শাহজাদপুর ফ্রেন্ডস ক্লাব, আল-আকসা স্বেচ্ছাসেবী যুব সংগঠন, কোম্পানীগঞ্জ সাংবাদিক সমিতি, যুগান্তর স্বজন সমাবেশ, চরহাজারী ঈদগাহ যুব ও সমাজকল্যাণ পরিষদ, একাডেমি বাজার ইয়ুথ সোসাইটি, কোম্পানীগঞ্জ ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড আর্কিটেকচার, মুক্তিযোদ্ধা বাজার তারুণ্যের আলো মানবিক সংগঠন, প্রিমিয়াম শিক্ষা পরিবার, নব জাগরণ যুব সংঘ, গ্রিন শ্যাডো সোসাইটি, কোম্পানীগঞ্জ সচেতন নাগরিক ফোরাম, বসুরহাট ফুটবল ক্লাব, পূর্বাশার আলো, মুসলিম নগর যুবসমাজ, মোল্লা বাজার সামাজিক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, তেরোবাড়ী যুবকল্যাণ ফাউন্ডেশনসহ প্রায় ৩০টি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।

সমাবেশের পর বিক্ষোভকারীরা কোম্পানীগঞ্জের সমাজসেবা কর্মকর্তা মাইন উদ্দিনের হাতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি তুলে দেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব লক ড উপজ ল স গঠন সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

কুমিল্লা বিভাগের দাবিতে হাজারো মোটরসাইকেল নিয়ে মহাসড়কে শোভাযাত্রা

কুমিল্লা বিভাগের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে হাজারো মোটরসাইকেল নিয়ে শোভাযাত্রা করেছেন তরুণেরা। আজ শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকার হোটেল নুরজাহানের সামনে থেকে এ শোভাযাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি মহাসড়কের কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচর হয়ে আবার পদুয়ার বাজারে আসে। পরে সেখান থেকে নগরের কান্দিরপাড় পূবালী চত্বরে এসে শেষ হয়।

এর আগে দুপুরে জুমার নামাজের পর থেকেই কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকা থেকে দলে দলে মোটরসাইকেল নিয়ে পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় জড়ো হন তরুণেরা। তাঁরা এটিকে কুমিল্লার ইতিহাসে সর্ববৃহৎ মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বলে দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, অরাজনৈতিক এ শোভাযাত্রায় কুমিল্লার প্রতি ভালোবাসা থেকে প্রায় পাঁচ হাজার বাইকার জড়ো হন।

কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তরুণেরা বলছেন, একটি বিভাগ হওয়ার জন্য যাবতীয় যোগ্যতা থাকার পরও যুগের পর যুগ ধরে কুমিল্লাকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। যখনই কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণার সময় হয়, তখনই শুরু হয়ে যায় ষড়যন্ত্র। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যখন কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই শুরু হয়েছে নতুন ষড়যন্ত্র। তবে এবার আর ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না। বিভাগ ছাড়া ঘরে ফিরবে না কুমিল্লাবাসী।

শোভাযাত্রার সময় তরুণদের ‘দাবি মোদের একটাই, কুমিল্লার নামে বিভাগ চাই’, ‘তুমি কে আমি কে, কুমিল্লা কুমিল্লা’, ‘মিল্লা জিল্লা, কুমিল্লা কুমিল্লা’, ‘কুমিল্লা বিভাগ, কুমিল্লা বিভাগ’ স্লোগানে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। কারও কারও হাতে, মোটরসাইকেলে ও বুকে ছিল জাতীয় পতাকা। এই মোটরসাইকেল শোভাযাত্রাকে স্বাগত জানিয়ে অনেকেই দোকানপাটের সামনে দাঁড়িয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন।

কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফখরুল ইসলাম (মিঠু) বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা অতীতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ দায়িত্বে থেকে তাঁর ব্যক্তিগত আক্রোশে কুমিল্লা নামে বিভাগ হতে দেননি। শেখ হাসিনা কুমিল্লাকে ‘কু’ বলে অপমান করেছেন। এই অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে যখন কুমিল্লা বিভাগ ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে, ঠিক তখনই শুরু হয়েছে নতুন ষড়যন্ত্র। তবে কুমিল্লাবাসীর দাবির মুখে কোনো ষড়যন্ত্রই টিকবে না। এই কুমিল্লা ছিল ত্রিপুরার রাজধানী। টালবাহানা করে কুমিল্লাকে আর দাবিয়ে রাখার সুযোগ নেই।

শিহাব উদ্দিন নামের এক তরুণ বলেন, হাজারো ঐতিহ্যে ভরা কুমিল্লা যখনই বিভাগ ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে যায়, তখনই নানা মহল থেকে ষড়যন্ত্র শুরু করে। নোয়াখালীসহ বৃহত্তর কুমিল্লার ছয়টি জেলার বিভিন্ন দপ্তরের ৪২টি আঞ্চলিক কার্যালয় কুমিল্লায়। অবিলম্বে কুমিল্লা নামে বিভাগ চাই। দ্রুত বিভাগের ঘোষণা না এলে কঠোর কর্মসূচি পালন করবে কুমিল্লার মানুষ।

দেলোয়ার হোসেন নামের আরেকজন বলেন, ‘আজ কুমিল্লার তরুণেরা পাঁচ হাজারের বেশি মোটরসাইকেল নিয়ে শোভাযাত্রা করেছেন। এটা কুমিল্লার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা। এটা থেকেই বোঝা যায় যে কুমিল্লার তরুণ সমাজ বিভাগের দাবিতে কতটা ঐক্যবদ্ধ। আমাদের আর ষড়যন্ত্র করে দাবিয়ে রাখা যাবে না। দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিভাগ ঘোষণার দাবি জানাচ্ছি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এফবিআই ষড়যন্ত্র করছে! ভেবেছিলেন নায়িকা পারভিন ববি
  • অভিমত-কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ড: দুর্ঘটনা, নাকি ষড়যন্ত্র—খতিয়ে দেখতে হবে
  • জনগণ বিশ্বাস করে এসব অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত: ফখরুল
  • ‘ষড়যন্ত্র করে আর কুমিল্লা বিভাগ আটকে রাখা যাবে না’
  • কুমিল্লা বিভাগের দাবিতে হাজারো মোটরসাইকেল নিয়ে মহাসড়কে শোভাযাত্রা
  • ‘নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে হাসিনা নানামুখী ষড়যন্ত্র করছেন’