কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের পূর্বঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে নাশকতা ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় কক্সবাজারে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে কক্সবাজার শহরের কলাতলী মোড়, বাস টার্মিনাল, বিমানবন্দর সড়ক, লাল দীঘির পাড়সহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সেনা টহল জোরদার করা হয়েছে। পাশাপাশি রামু, লিংক রোড, কোর্ট বাজার ও উখিয়ায় ভ্রাম্যমাণ চেকপোস্ট স্থাপন করে যানবাহন ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের তল্লাশি করা হচ্ছে।
সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ, র্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে থেকে সমন্বিতভাবে কাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, সরকারি দপ্তর, পরিবহন টার্মিনাল এবং পর্যটন এলাকাগুলোতেও বিশেষ নজরদারি অব্যাহত আছে।
কক্সবাজার ট্রাফিক পুলিশের সার্জেন্ট রুবায়েত হোসেন বলেছেন, “বর্তমানে কক্সবাজারে প্রতিটি যানবাহন তল্লাশির আওতায় আনা হয়েছে। আমরা সন্দেহভাজন গাড়িগুলোর কাগজপত্র, যাত্রীদের পরিচয় এবং মালামাল খুঁটিয়ে পরীক্ষা করছি। শহরে প্রবেশের প্রতিটি রাস্তায় চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। পর্যটক ও স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্রাফিক বিভাগ সার্বক্ষণিক তৎপর আছে।”
তিনি আরো বলেন, “যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে আমরা সেনাবাহিনী, র্যাব ও জেলা পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করছি। জনগণ যেন নিরাপদে চলাফেরা করতে পারে, সেটিই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন কঠোর তৎপরতায় এখন পর্যন্ত কক্সবাজারে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর বা নাশকতামূলক ঘটনা ঘটেনি। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কক্সবাজার শহরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক আছে। তবে, দূরপাল্লার বাসে বেশি যাত্রী চোখে পড়েনি।
ঢাকা/তারেকুর/রফিক
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাইব্যুনাল ফেস না করে যানবাহনে আগুন মানুষ ভালোভাবে নিচ্ছে না: প্রসিকিউটর
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মুখোমুখি (ফেস) না হয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা, যানবাহনে আগুন দেওয়ার বিষয়টি সাধারণ মানুষ মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গাজী মোনাওয়ার এ কথা বলেন।
নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মন্তব্য করে এক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ কেন এ ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে? ট্রাইব্যুনাল বা আদালত ফেস (মুখোমুখি) না করে রাস্তাঘাটে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা, যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষের ওপর নির্যাতন বা মানুষের ভোগান্তির কারণ সৃষ্টি করা নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেবে না। সাধারণ মানুষ এটাকে মোটেই ভালোভাবে নিচ্ছে না বলে তাঁরা মনে করেন।
একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, শেখ হাসিনার রায়কে কেন্দ্র করে আজ ডিএমপির কমিশনার এসেছিলেন। নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে সার্বিকভাবে কোনো কথা হয়েছে কি না? আর রায়ের সার্বিক পরিস্থিতি কেমন?
এর জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে ১৩ নভেম্বর রায়ের দিন নির্ধারণ করা হবে। কবে রায় হবে, এটা ১৩ নভেম্বর জানা যাবে। সেটাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ বা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও সেই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
এরই ধারাবাহিকতায় হয়তো আজ ডিএমপির কমিশনার ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে এসেছিলেন উল্লেখ করে প্রসিকিউটর বলেন, ট্রাইব্যুনাল সম্পর্কে কমিশনারের সঙ্গে প্রসিকিউশনের কোনো কথা হয়নি। বাইরে কী করে গেছেন, এটা কমিশনার ভালো জানবেন। তাঁরা আশা করছেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, তাঁদের (প্রসিকিউশন) সবকিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে। কোনো ধরনের চাপ নেই। রায়ের তারিখ এলে রায় হবে। আজ আবু সাঈদের মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণ হয়েছে।এভাবেই ট্রাইব্যুনাল স্বাভাবিক গতিতে চলছে।
অন্য আরেক সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ১৩ নভেম্বর ঘিরে সার্বিকভাবে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাসে আগুন দেওয়া হচ্ছে, ককটেল বিস্ফোরিত হচ্ছে—এই বিষয়গুলো কি স্বাভাবিক?
জবাবে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার বলেন, এ জন্য সুপ্রিম কোর্ট, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস, প্রসিকিউশন অফিসসহ আশপাশের এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ হয়েছে। সাধারণ বা যাঁরা অপ্রয়োজনীয় কাজে ঘোরেন বা ভবঘুরে আছেন, তাঁদের চলাচলের ব্যাপারে কিছু নিয়ন্ত্রণও আরোপ করা হয়েছে। এসব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে করা হয়েছে। এর সঙ্গে প্রসিকিউশন বা ট্রাইব্যুনালের কোনো সম্পর্ক নেই। যেকোনো পরিস্থিতিতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং সেটা নিচ্ছে বলেও দেখা যাচ্ছে।