কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউনকে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। এ সময় গণপূর্ত অফিস ও গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় বেশ কয়েকটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপের ঘটা ঘটে। এতে একটি পিকআপ পুড়ে যায়। এ ছাড়া জেলার ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া আঞ্চলিক সড়কের বিভিন্ন স্থানে গাছ ফেলে যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে শহরের মডেল স্কুল রোড এলাকায় ও বুধবার দিবাগত রাতে সদর উপজেলার উলপুর এবং ঢাকা-খুলনা মহাসড় ও গোপালগঞ্জ-কোটালীপাড়া আঞ্চলিক সড়কে এসব ঘটনা ঘটে।

গণপূর্ত অফিস কর্তৃপক্ষ জানায়, আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউনকে কেন্দ্র করে ভোরে গোপালগঞ্জ গণপূর্ত অফিসে বেশ কয়েকটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এ সময় একটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। পরে গণপূর্ত অফিসের কর্মচারীরা গাড়ির আগুন নিভিয়ে ফেলে। এতে এলাকাজুড়ে  আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। 

গণপূর্ত অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী আব্দুর রহিম জানান, ভোরে কে বা কারা অফিসের মধ্যে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এতে একটি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। 

এদিকে, গোপালগঞ্জের উলপুর গ্রামীণ ব্যাংক শাখায় বেশ কয়েকটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। ব্যাংকটির ফিল্ড অফিসার নাগর আলী বলেন, ‌‌‌‌‌‌‘‘রাত সাড়ে ৩টার দিকে একটি কালো মাইক্রোবাসে করে বেশ কয়েকজন দুর্বৃত্ত অফিস লক্ষ্য করে বেশ কয়েকটি পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করে। এ সময় অফিসে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যাক্তি তাদের ধাওয়া দিলে তার দিকে লক্ষ্য করেও কয়েকটি পেট্রোল বোমা তারা নিক্ষেপ করে। এতে নিরাপত্তাকর্মীর কিছু না হলেও ভবনের হল ছাদে আগুন ধরে যায়।’’

এ ঘটনায় ব্যাংকটির তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘দুটি পেট্রোল বোমা বিস্ফারিত হলেও তিনটি অক্ষত থেকে যায়।’’

গোপালগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক শিপলু আহমেদ বলেন, ‘‘রাত তিনটা থেকে চারটার দিকে বিভিন্ন সড়কে গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করে রাখা হয়েছে এমন খবর আসে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গাছগুলো সরিয়ে ফেলেন এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।’’

আজ বৃহস্পতিবার কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের ডাকা লকডাউনকে কেন্দ্র করে জেলাজুড়ে সকাল থেকেই থমথমে অবস্থা বিরাজ করেছে। সকালে শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় পুলিশের সাঁজোয়া যান টহল দিতে দেখা যায়। দিনভর রাস্তার মোড়ে মোড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পাহারা দিয়েছে। শহরের বিভিন্ন প্রবেশমুখে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারীও বাড়ানো হয়েছে।

সহিংসতা ও অবরোধের কারণে গোপালগঞ্জের জনজীবনে কিছুটা প্রভাব পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বিভিন্ন বাস কাউন্টার ঘুরে দেখা গেছে, অন্যান্য দিনের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা অনেক কম। প্রতিদিন তিন থেকে চারশ বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেলেও আজ এর সংখ্যা ছিল কম। দূরপাল্লার বাস চলাচলও সীমিত লক্ষ্য করা গেছে। 

গোপালগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো.

শাহ আলম বলেন, ‘‘দুর্বৃত্তরা গোপালগঞ্জ গণপূর্ত অফিস ও গ্রামীণ ব্যাংকে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করেছে। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আইনানুগ প্রক্রিয়া চলমান। শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে এবং যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা পুরোপুরি প্রস্তুত আছি।’’
   

ঢাকা/বাদল//

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ক ষ প কর গ প লগঞ জ দ র কর অফ স র শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান: স্বরাষ্ট্র উপদে

সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এমন কোনো সন্দেহভাজনকে কাউকে দেখলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে তিনি এ আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সর্বাগ্রে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকা সেনানিবাসের একটি ভবন সাময়িকভাবে ‌‘কারাগার ঘোষণা’

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের লকডাউন নিয়ে সতর্ক আছে সরকার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শক্ত অবস্থানে আছে, কোনো ধরনের আশঙ্কার কারণ নেই। কোনো ধরনের সন্ত্রাস সহ্য করা হবে না। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানাবেন।”

তিনি বলেন, “লকডাউন ঘিরে পেট্রোলিং বাড়ানো হয়েছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। রাস্তার ধারে পেট্রোল বেচা যাবে না। এগুলো দিয়ে অঘটন ঘটানো হয়।”

তিনি আরো বলেন, “কিছু জায়গায় বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে বাহিনীর সঙ্গে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে। সন্দেহভাজনদের দেখলে ধরিয়ে দেবেন। এটা আইন হাতে তুলে নেওয়ার মতো বিষয় না।”

এ সময় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান আরো বেগবান করা হবে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কক্সবাজারে নিরাপত্তা জোরদার 
  • ৩২ নম্বরের পরিস্থিতি দেখুন ছবিতে
  • ঢাকায় কড়া নিরাপত্তা, চলছে তল্লাশি
  • ধানমন্ডি ৩২ থেকে ‘সন্দেহভাজন’ কিশোরকে আটক
  • স্থিতিশীলতা বিঘ্নের পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়
  • নৈরাজ্য সৃষ্টির অপচেষ্টা রুখতে সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার
  • ‘লকডাউন’ ঠেকাতে কঠোর সরকার, সন্দেহ হলেই আটক
  • সন্দেহ হলেই আটক
  • সন্দেহভাজন কাউকে দেখলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানান: স্বরাষ্ট্র উপদে