Prothomalo:
2025-05-01@05:32:45 GMT

লোভী বাগান–মালিকের পরিণতি

Published: 13th, January 2025 GMT

একটি বাগানের একজন মালিক ছিলেন। লোকটি ছিলেন খুবই আল্লাহভীরু। তিনি বাগানের ফসলের নির্দিষ্ট একটি অংশ গরিব-মিসকিনদের দান করতেন। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর তিন ছেলে সেই বাগানের মালিক হলো। তিন ছেলের মধ্যে দুজন ভাবল, তাদের পরিবারের লোকসংখ্যার তুলনায় বাগানের ফসল খুবই কম। ফসলের নির্দিষ্ট অংশ আর গরিব-মিসকিনকে দান করা সম্ভব নয়। ছেলের মধ্যে একজন অবশ্য গরিব-মিসকিনকে দান করতে চাইল। কিন্তু বাকি দুই ছেলে তার কথায় কান দিল না। পরদিন সকালে ভিক্ষুক আসার আগেই তারা ফসল কেটে নেওয়ার প্রতিজ্ঞা করল। প্রতিজ্ঞা করার সময় তারা ইনশা–আল্লাহ (আল্লাহ চাইলে) বলল না। ইনশা–আল্লাহ না বলায় এবং গরিব-মিসকিনকে কিছু না দেওয়ার অপরাধে আল্লাহ তাদের বাগানের ওপর গজব নাজিল করলেন।

তিন ভাই ঘুমিয়ে থাকার অবস্থায় প্রচণ্ড ঝড় বয়ে গেল। এতে বাগানের ফসলের বিরাট ক্ষতি হলো। সকালে তারা ফসল কাটতে যাওয়ার সময় চুপি চুপি বলল, ‘সাবধান, আজ যেন কোনো ভিক্ষুকের দল ভিড় জমাতে না পারে।’ তারা আসার আগেই ফসল তোলার কাজ শেষ করতে হবে। ভিক্ষুক ও গরিবদের তাড়িয়ে দেওয়ার মনোভাব নিয়ে তারা বাগানে পৌঁছাল।

বাগানে গিয়ে তারা দেখল লণ্ডভণ্ড পরিস্থিতি। সেটা দেখে তারা বলল, ‘মনে হয় আমরা পথ ভুল করে অন্য কোনো বাগানে চলে এসেছি। এটা তো আমাদের বাগান নয়।’ তাদের যে ভাইটি দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতিশীল ছিল, সে বলল, ‘তোমাদের বলেছিলাম, আল্লাহর সঙ্গে নাফরমানি কোরো না। ভিক্ষুকদের বঞ্চিত করার ইচ্ছা অহংকারের পরিণতি ছাড়া কিছুই নয়। এখনো সময় আছে, গুনাহ থেকে তওবা কর।’

তারা তওবা করে আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে বলল, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আপনার মহিমা প্রকাশ করছি। আপনিই মহাশক্তিধর। আপনি আমাদের ক্ষমা করুন। আমরা সীমালঙ্ঘন করে ফেলেছি। ক্ষমা না করলে আমাদের আর কোনো উপায় নেই।’

আরও পড়ুনসুলায়মান (আ.

) আল্লাহর কাছে যে দোয়া করেছিলেন১৩ নভেম্বর ২০২৩

পবিত্র কোরআনে আছে, ‘আমি ওদের পরীক্ষা করব, যেভাবে আমি পরীক্ষা করেছিলাম সেই বাগানের মালিকদের, যখন ওরা শপথ করে বলেছিল যে ওরা সকালে বাগানের ফল পেড়ে আনবেই কোনো ব্যতিক্রম না করে (ইনশা–আল্লাহ না বলে)। তাই যখন ওরা ঘুমিয়েছিল তখন তোমাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে এক বিপর্যয় সেই বাগানে হানা দিল, ফলে তা পুড়ে গিয়ে রাতের আঁধারের মতো কালো হয়ে গেল। সকালে ওরা একে অপরকে ডেকে বলল, যদি ফল তুলতে চাও, তবে সকাল-সকাল বাগানে চলো। তারপর ওরা ফিসফিসিয়ে কথা বলতে বলতে চলল, আজ যেন কোনো মিসকিন বাগানে তোমাদের কাছে ভিড়তে না পারে। ওরা তাদেরকে ঠেকাতে পারবে এই বিশ্বাসে সকালে বাগানের দিকে গেল। তারপর ওরা যখন বাগানের চেহারা দেখল (তখন) বলল, আমরা তো দিশা হারিয়েছি! না, আমরা তো ঠকে গেছি! ওদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো লোকটা বলল, আমি কি তোমাদেরকে আল্লাহর পবিত্র মহিমা ঘোষণা করতে বলিনি? তখন ওরা বলল, আমরা আমাদের প্রতিপালকের পবিত্র মহিমা ঘোষণা করছি, নিঃসন্দেহে আমরা সীমালঙ্ঘন করেছিলাম। তারপর ওরা পরস্পরের প্রতি দোষারোপ করতে লাগল। ওরা বলল, হায়, দুর্ভোগ আমাদের! আমরা তো সীমালঙ্ঘন করেছিলাম। আশা করি, আমাদের প্রতিপালক এর পরিবর্তে আমাদের আরও ভালো বাগান দেবেন। আমরা আমাদের প্রতিপালকের দিকে মুখ ফেরালাম। শাস্তি এভাবেই আসে, আর পরকালের শাস্তি আরও কঠিন, যদি ওরা জানত!’ (সুরা কলম, আয়াত: ১৭-৩৩)

আরও পড়ুনমন্দ আচরণ নিয়ে আল্লাহর বক্তব্য সুরা সাফে১৪ নভেম্বর ২০২৩

সুরা কলম পবিত্র কোরআনের ৬৮তম সুরা। সুরাটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়। কলমের শপথ করে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এই সুরায় বলা হয়েছে, তোমার প্রতিপালকের অনুগ্রহে তুমি পাগল নও। ইনশা–আল্লাহ না বলে যারা বড়াই করেছিল, তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল।

আরও পড়ুনরুমির ‘মসনভি’তে কোরআনের মর্মবাণী১৫ নভেম্বর ২০২৩

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল

১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।

১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।

১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।

মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।

বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে  গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।

আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে

২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।

কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।

ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি

সম্পর্কিত নিবন্ধ