Samakal:
2025-05-01@01:12:24 GMT

যোগাযোগে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

Published: 21st, January 2025 GMT

যোগাযোগে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর-পঞ্চবটি দ্বিতল সড়ক আধুনিকায়নের কাজ চলছে। চলতি বছর শেষ নাগাদ এর কাজ শেষ হলে খুলে যাবে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। লাঘব হবে দীর্ঘদিনের যানজটজনিত দুর্ভোগ।
আগামী ডিসেম্বরই নতুন সড়কটি চালুর আশা  করছেন প্রকল্প পরিচালক। এ লক্ষ্যে বর্তমানে দ্বিতল সড়কে ডেক্স স্ল্যাব বসানো হচ্ছে। পাইল, পিয়ার ও ডেক্স প্যানেলসহ প্রকল্প জুড়েই চলছে কর্মযজ্ঞ। ২ হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার এ প্রকল্পের কাজের ৪৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে রাজধানীর সহজ যোগাযোগের জন্য পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক আধুনিকায়নে পঞ্চবটি মোড় থেকে ছয় লেনে ৩১০ মিটার করে ফতুল্লা ও নারায়ণগঞ্জ দুই দিকে প্রসারিত। পাশাপাশি পঞ্চবটি মোড় থেকে শীতলক্ষ্যা-৩ সেতুর গোলচত্বর হয়ে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত হবে চার লেন সড়ক। এর মধ্যে পঞ্চবটি থেকে চর সৈয়দপুরের শীতলক্ষ্যা-৩ সেতু পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ দুই লেন সড়ক হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি দুই লেন নিচতলায়। মুক্তারপুর সেতু থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত ১০ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পথে তিন ধরনের সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেস হচ্ছে ৯ দশমিক ০৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। নিচতলা ফ্রি হলেও দোতলা সড়কে চলাচলে লাগবে টোল।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে পাইল, পিয়ার ও ডেক্স প্যানেলসহ প্রকল্প জুড়েই কর্মযজ্ঞ চোখে পড়বে। ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা তীরে এখনই ফুটে উঠেছে দ্বিতল সড়কের রূপরেখা। প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ার পর যানজট এড়িয়ে এই সড়কে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে। তবে এই সড়কের পঞ্চবটি থেকে পোস্তগোলা এবং শীতলক্ষ্যা-৩ সেতু থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে প্রশস্ত সড়ক করা গেলে সড়কটির গুরুত্ব আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুলাহ আল মাসুম। তিনি জানান, দিনের বেশির ভাগ সময় এই সড়কে যানজট লেগেই থাকে। যানজটের কারণে প্রতিদিন অফিসে যেতে দেরি হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা। তাই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর হবে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই রুটে যানবাহনের গতি বাড়বে প্রায় পাঁচ গুণ। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সিরাজগঞ্জের পর ইন্টারসেকশন সংবলিত দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের এই পঞ্চবটিতে।
মুক্তারপুর-পঞ্চবটি সড়ক প্রশস্ত ও দোতলাকরণ প্রকল্পের ডেপুটি টিম লিডার প্রকৌশলী জহুরুল হক জানান, এখন যে গতিতে কাজ চলছে, সেটি বজায় থাকলে আশা করা যাচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরে কাজটি শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের লাখ লাখ মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে। তাই দ্রুত গতিতে চলছে কর্মযজ্ঞ।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজের ৪৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
২০১৮ সালে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত ষষ্ঠ বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এর সংযোগ রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক। এটি খুব সংকীর্ণ ও আঁকাবাঁকা। এর গড় প্রশস্ততা ৫.

৫ মিটার। এ রাস্তার উভয় পাশে বিভিন্ন ব্যবসার প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি থাকায় প্রায়ই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এই অবস্থা বিবেচনা করে পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও দ্বিতল রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রকল্পটি জিওবি এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক প রকল প র ক জ শ ন সড়ক য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ

ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না। 
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিস চালু হচ্ছে ১০ মাস পর
  • অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
  • আজমির ওসমান বাহিনীর অন্যতম ক্যাডার মাসুম প্রকাশ্যে. আতঙ্ক
  • মে দিবসের সমাবেশকে সফল করতে মহানগর বিএনপির মতবিনিময় সভা 
  • নারায়ণগঞ্জে বালক (অনূর্ধ্ব-১৫) ফুটবল প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের উদ্বোধন
  • নারায়ণগঞ্জে ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে তরুণের মৃত্যু
  • নারায়ণগঞ্জের কদম রসুল সেতুর সংযোগ সড়কের প্রবেশমুখ পুনর্নির্ধারণের দাবিতে স্মারকলিপি
  • জেলা প্রশাসককে ২৪’র শহীদদের স্মারক দিল জামায়াত
  • কমিউনিষ্ট পার্টির হাফিজের বিরুদ্ধে ইসমাইলের সংবাদ সম্মেলন
  • কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ