Samakal:
2025-07-31@16:08:57 GMT

যোগাযোগে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

Published: 21st, January 2025 GMT

যোগাযোগে সম্ভাবনার নতুন দুয়ার

মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর-পঞ্চবটি দ্বিতল সড়ক আধুনিকায়নের কাজ চলছে। চলতি বছর শেষ নাগাদ এর কাজ শেষ হলে খুলে যাবে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দুয়ার। লাঘব হবে দীর্ঘদিনের যানজটজনিত দুর্ভোগ।
আগামী ডিসেম্বরই নতুন সড়কটি চালুর আশা  করছেন প্রকল্প পরিচালক। এ লক্ষ্যে বর্তমানে দ্বিতল সড়কে ডেক্স স্ল্যাব বসানো হচ্ছে। পাইল, পিয়ার ও ডেক্স প্যানেলসহ প্রকল্প জুড়েই চলছে কর্মযজ্ঞ। ২ হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার এ প্রকল্পের কাজের ৪৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের সঙ্গে রাজধানীর সহজ যোগাযোগের জন্য পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক আধুনিকায়নে পঞ্চবটি মোড় থেকে ছয় লেনে ৩১০ মিটার করে ফতুল্লা ও নারায়ণগঞ্জ দুই দিকে প্রসারিত। পাশাপাশি পঞ্চবটি মোড় থেকে শীতলক্ষ্যা-৩ সেতুর গোলচত্বর হয়ে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত হবে চার লেন সড়ক। এর মধ্যে পঞ্চবটি থেকে চর সৈয়দপুরের শীতলক্ষ্যা-৩ সেতু পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার দীর্ঘ দুই লেন সড়ক হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। বাকি দুই লেন নিচতলায়। মুক্তারপুর সেতু থেকে পঞ্চবটি পর্যন্ত ১০ দশমিক ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এ পথে তিন ধরনের সড়ক নির্মাণ হচ্ছে। এর মধ্যে এলিভেটেড এক্সপ্রেস হচ্ছে ৯ দশমিক ০৬ কিলোমিটার দীর্ঘ। নিচতলা ফ্রি হলেও দোতলা সড়কে চলাচলে লাগবে টোল।
এ প্রকল্প বাস্তবায়নে পাইল, পিয়ার ও ডেক্স প্যানেলসহ প্রকল্প জুড়েই কর্মযজ্ঞ চোখে পড়বে। ধলেশ্বরী ও বুড়িগঙ্গা তীরে এখনই ফুটে উঠেছে দ্বিতল সড়কের রূপরেখা। প্রকল্পের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হওয়ার পর যানজট এড়িয়ে এই সড়কে যোগাযোগের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হবে। তবে এই সড়কের পঞ্চবটি থেকে পোস্তগোলা এবং শীতলক্ষ্যা-৩ সেতু থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সঙ্গে প্রশস্ত সড়ক করা গেলে সড়কটির গুরুত্ব আরও বাড়বে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
এই সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুলাহ আল মাসুম। তিনি জানান, দিনের বেশির ভাগ সময় এই সড়কে যানজট লেগেই থাকে। যানজটের কারণে প্রতিদিন অফিসে যেতে দেরি হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান কর্মঘণ্টা। তাই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ দূর হবে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এই রুটে যানবাহনের গতি বাড়বে প্রায় পাঁচ গুণ। প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুরের ভাঙ্গা ও সিরাজগঞ্জের পর ইন্টারসেকশন সংবলিত দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণ হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের এই পঞ্চবটিতে।
মুক্তারপুর-পঞ্চবটি সড়ক প্রশস্ত ও দোতলাকরণ প্রকল্পের ডেপুটি টিম লিডার প্রকৌশলী জহুরুল হক জানান, এখন যে গতিতে কাজ চলছে, সেটি বজায় থাকলে আশা করা যাচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরে কাজটি শেষ হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সীগঞ্জের লাখ লাখ মানুষ সরাসরি উপকৃত হবে। তাই দ্রুত গতিতে চলছে কর্মযজ্ঞ।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের কাজের ৪৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
২০১৮ সালে ধলেশ্বরী নদীর ওপর নির্মিত ষষ্ঠ বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এর সংযোগ রাস্তা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক। এটি খুব সংকীর্ণ ও আঁকাবাঁকা। এর গড় প্রশস্ততা ৫.

৫ মিটার। এ রাস্তার উভয় পাশে বিভিন্ন ব্যবসার প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি থাকায় প্রায়ই দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এই অবস্থা বিবেচনা করে পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও দ্বিতল রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। প্রকল্পটি জিওবি এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক প রকল প র ক জ শ ন সড়ক য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!

সিদ্ধিরগঞ্জের হীরার্ঝিল আবাসিক এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি (ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা) খাল দখল করে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে কয়েকজন বাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে। এর ফলে ডিএনডি খালটি ফের সংকুচিত হতে শুরু করেছে। পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। 

এদিকে এই এলাকাটি শিমরাইল পাম্প স্টেশনের নিকটবর্তী এলাকা হওয়ায় দোকানগুলোর কারণে ঠিকমতোন পানি সরবরাহ হতে পারছে না। তবে প্রশাসনের ভাষ্য, খুব শিগগিরই এখানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে।  

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে নাসিক ১নং ওয়ার্ডের হীরাঝিল আবাসিক এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বালু খালপাড় দখল করে হরেক রকমের ছোট-বড় প্রায় ২৫টি দোকান বসানো হয়েছে। হাবিবুল্লাহ হবুলের মালিকানাধীন হাবিবুল্লাহ টাওয়ার থেকে শুরু করে মোক্তার হোসেন সরকারের মালিকানাধীন বিএম ভবন, সিদ্দিকুর রহমানের মালিকানাধীন মমতাজ ভিলা, নূর মোহাম্মদ টাওয়ার, নুরুল হুদা’র বাড়ির সামনে এসব স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। 

এর বিনিময়ে প্রতি দোকান থেকে টাকা তুলছেন স্ব স্ব বাড়ির মালিকরা। চাঁদা তোলার বিষয়টি কয়েকজন বাড়িওয়ালা অকপটে স্বীকারও করেছেন। 

এদিকে, দোকানগুলোর কারণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নির্মিত ওয়াকওয়ে দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি হীরাঝিল এলাকাবাসীকেও ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, হীরাঝিল আবাসিক এলাকা একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। যানবাহন ও মানুষের চাপ বেশি থাকায় এই এলাকায় সবসময় যানজট লেগেই থাকে। চলাচলের সুবিধার্তে এলাকাবাসী ডিএনডি খালের পাড় দিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে যেতেন। কিন্তু কয়েকজন বাড়িওয়ালা এহেন কর্মকান্ডের কারণে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন। 

এসব দোকানের কারণে খালের সৌন্দর্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পানি নিষ্কাশন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং চাঁদাবাজি প্রশাসন বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে ফের বন্যা হওয়ার শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। তাই এ বিষয়ে প্রশাসনের দ্রুত প্রদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে ‘কাবাব বাড়ি’ ভবনের মালিক মো. রফিক বলেন, আমার বাড়ির সামনে ডিএনডি খাল দখল করে আমি কোনো দোকান বসাই নি। আমি নিজেও চাই এখানে কোনো দোকান না বসুক। কিন্তু আমি যতটুকু শুনেছি টিএইচ তোফা নামের এক ব্যক্তি এই দোকানগুলো বসিয়েছেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছে দোকানগুলো সরিয়ে দেওয়ার। আর এখানে দোকান বসিয়ে টাকা তোলার প্রশ্নই উঠে না।

একই অভিযোগ স্বীকার করে মমতাজ ভিলার মালিক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, অন্যসবাই দোকান বসিয়েছে। আমি তা দেখাদেখি ২টি দোকান বসিয়েছি। এটা আমার অপরাধ হয়েছে তা আমি নিজেও বুঝি। আমি মূলত সবার দেখাদেখি দোকান বসিয়েছি।

নুরুল হুদা নামের আরেক বাড়িওয়ালা বলেন, আমি দোকান বসিয়েছি। কিন্তু ওইখান থেকে কোনো অর্থ আদায় করি না। চাইলে এ বিষয়ে তদন্ত করা হতে পারে। আর এখানে দীর্ঘদিন ধরেই দোকান ছিল।

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাফর সাদিক চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনূর আলম বলেন, চাঁদাবাজির বিষয়টি আমাদের জানা নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।  

নারায়ণগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুভ আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত ছিলাম না। তবে অভিযোগ যেহেতু পেয়েছি তাহলে অবশ্যই ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হবে। ডিএনডি খালপাড় থেকে স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রথমে আমরা একাধিকবার তাদের নোটিশ পাঠাবো।

যদি তারা কথা না শোনেন তাহলে আইন অনুযায়ী উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হবে। খাল দখলের বিরুদ্ধে আমরা সবসময় জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছি।

নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে আমরা এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন খাল পরিষ্কার করা শুরু করেছি। ডিএনডি খালসহ যেকোনো খাল এভাবে দখল হয়ে থাকলে দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমি শিগগিরই এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি।  

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ৮ ডিসেম্বর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়নে ডিএনডি প্রকল্প হাতে নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুরুতে প্রকল্পের বাজেট ৫৫৮ কোটি টাকা ধরা হলেও তা বাস্তবায়নে সবমোট ১৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়। 

২০২৫ সালের জুন মাসে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর প্রকল্প বাস্তবায়ন করাকালে তখন খালটি দখল না হলেও প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর পরই হীরাঝিল এলাকার কয়েকজন বাড়িওয়ালা ডিএনডি খাল দখল করে দোকান বসানো শুরু করে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাইলস্টোন স্কুলে হতাহতদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
  •  শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের স্বাধীনতা চান নাই : টিপু 
  • নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাথে গিয়াসউদ্দিনের মতবিনিময় সভা
  • সোনারগাঁয়ে ইসলামী আন্দোলনের পরিচিতি সভা ও শপথ গ্রহণ  
  • বন্দর ২০নং ওয়ার্ড বিএনপির প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ 
  • তেল চোর দেলোয়ারকে ধরে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করবেন : টিপু
  • নারায়ণগঞ্জে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ৫ বিএনপি নেতা বহিষ্কার
  • সিদ্ধিরগঞ্জে ইজিবাইকের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু
  • কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির প্রাথমিক সদস্য নবায়ন ও সদস্য ফরম বিতরণ
  • সিদ্ধিরগঞ্জে সেনাবাহিনীর উদ্ধারকৃত ডিএনডি খাল দখল করে চাঁদাবাজি!