Samakal:
2025-05-01@10:01:52 GMT

পেঁপে চাষে লাভবান কৃষক

Published: 24th, January 2025 GMT

পেঁপে চাষে লাভবান কৃষক

পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু মিয়া। স্ত্রী ঝর্ণা খাতুন ও দুই সন্তানকে নিয়ে ওই গ্রামে বসবাস করেন তিনি। পেশায় একজন ভালো ও পরিশ্রমী কৃষক। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি জমি লিজ দেওয়ার ব্যবসা করেন। বড় ছেলের বয়স ১৫ এবং ছোট ছেলের ছয়। সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী বড় ছেলে। ছোট ছেলে স্কুলে ভর্তি হয়নি। নান্নু মিয়া জানান, ৪০ হাজার টাকা খরচ করে পেঁপের চাষ করে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন।
জানা গেছে, পল্লীকর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় সমন্বিত কৃষি ইউনিটের আওতায় প্রোগ্রামস ফর পিপলস ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি) বেড়া শাখার আওতায় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। নান্নু মিয়া প্রতি বছরই লোকাল জাতের মরিচ, গো-খাদ্য ঘাস, পুঁইশাকসহ শাকসবজি চাষ করতেন। সমন্বিত কৃষি ইউনিটের এক কর্মকর্তা তাঁকে পিপিডি সম্পর্কে জানান এবং প্রথম অবস্থায় করমজা পূর্বপাড়া মহিলা সমিতিতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর তাঁকে উচ্চমূল্যের ফল, সবজি এবং পেঁপে চাষের জন্য বলা হলে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন। 
নান্নু মিয়ার বাড়িতে দুটি গরু আছে। এরপর সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মাধ্যমে তাঁকে উন্নত ও আধুনিক জাতের পেঁপে (টপলেডি) জাতের ৩০০টি চারা, জৈব ও রাসায়নিক সার, জৈব বালাইনাশকসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁকে দু’দিনব্যাপী প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। পেঁপে চাষের পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে পুঁইশাকের আবাদ করেন তিনি। নান্নু মিয়া দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকার পাকা পেঁপে এবং সাথি ফসল হিসেবে পুঁইশাক বাজারে বিক্রি করেন। চাষ করতে তাঁর মোট খরচ হয়েছিল ৪০ হাজার টাকা। খরচ বাদে লাভ হয় ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। 
নান্নু মিয়া বলেন, ‘এই নতুন ধরনের ফসল এর আগে কখনও আবাদ করিনি। এই ফসলে দ্রুত ফল ধরে। সবজি এবং ফল দু’ভাবেই খাওয়া যায়। পাকা পেঁপের বাজার মূল্য অনেক বেশি।’ 
পিপিডির কৃষি কর্মকর্তা অনুপ কুমার ঘোষ বলেন, ‘করমজা পূর্বপাড়া বায়া গ্রামে দিন দিন পেঁপে চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। তবে কৃষকরা শুধু সবজি হিসেবে পেঁপে চাষ করছেন। বর্তমানে টপলেডি জাতের পেঁপে পাকা ফল ও সবজি দুই-ই বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া কৃষকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।’ v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ষ কর

এছাড়াও পড়ুন:

খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী

কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।

কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।

একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’

কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।

এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ