পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নান্নু মিয়া। স্ত্রী ঝর্ণা খাতুন ও দুই সন্তানকে নিয়ে ওই গ্রামে বসবাস করেন তিনি। পেশায় একজন ভালো ও পরিশ্রমী কৃষক। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি জমি লিজ দেওয়ার ব্যবসা করেন। বড় ছেলের বয়স ১৫ এবং ছোট ছেলের ছয়। সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী বড় ছেলে। ছোট ছেলে স্কুলে ভর্তি হয়নি। নান্নু মিয়া জানান, ৪০ হাজার টাকা খরচ করে পেঁপের চাষ করে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা লাভ করেছেন।
জানা গেছে, পল্লীকর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় সমন্বিত কৃষি ইউনিটের আওতায় প্রোগ্রামস ফর পিপলস ডেভেলপমেন্ট (পিপিডি) বেড়া শাখার আওতায় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হয়। নান্নু মিয়া প্রতি বছরই লোকাল জাতের মরিচ, গো-খাদ্য ঘাস, পুঁইশাকসহ শাকসবজি চাষ করতেন। সমন্বিত কৃষি ইউনিটের এক কর্মকর্তা তাঁকে পিপিডি সম্পর্কে জানান এবং প্রথম অবস্থায় করমজা পূর্বপাড়া মহিলা সমিতিতে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর তাঁকে উচ্চমূল্যের ফল, সবজি এবং পেঁপে চাষের জন্য বলা হলে তিনি আগ্রহ প্রকাশ করেন।
নান্নু মিয়ার বাড়িতে দুটি গরু আছে। এরপর সমন্বিত কৃষি ইউনিটের মাধ্যমে তাঁকে উন্নত ও আধুনিক জাতের পেঁপে (টপলেডি) জাতের ৩০০টি চারা, জৈব ও রাসায়নিক সার, জৈব বালাইনাশকসহ অন্যান্য উপকরণ দেওয়া হয়। এ ছাড়া তাঁকে দু’দিনব্যাপী প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। পেঁপে চাষের পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবে পুঁইশাকের আবাদ করেন তিনি। নান্নু মিয়া দুই লাখ পাঁচ হাজার টাকার পাকা পেঁপে এবং সাথি ফসল হিসেবে পুঁইশাক বাজারে বিক্রি করেন। চাষ করতে তাঁর মোট খরচ হয়েছিল ৪০ হাজার টাকা। খরচ বাদে লাভ হয় ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা।
নান্নু মিয়া বলেন, ‘এই নতুন ধরনের ফসল এর আগে কখনও আবাদ করিনি। এই ফসলে দ্রুত ফল ধরে। সবজি এবং ফল দু’ভাবেই খাওয়া যায়। পাকা পেঁপের বাজার মূল্য অনেক বেশি।’
পিপিডির কৃষি কর্মকর্তা অনুপ কুমার ঘোষ বলেন, ‘করমজা পূর্বপাড়া বায়া গ্রামে দিন দিন পেঁপে চাষে কৃষকরা আগ্রহী হচ্ছেন। তবে কৃষকরা শুধু সবজি হিসেবে পেঁপে চাষ করছেন। বর্তমানে টপলেডি জাতের পেঁপে পাকা ফল ও সবজি দুই-ই বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ ছাড়া কৃষকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।’ v
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ষ কর
এছাড়াও পড়ুন:
ঐক্য অটুট রাখা জরুরি, ফ্যাসিবাদ ফিরে এলে কেউই রেহাই পাবে না: এবি পার্টি
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাইয়ের পক্ষের শক্তিদের আত্মঘাতী সংঘাতে জড়ানোর সুযোগ নেই। মত ও পথ ভিন্ন হতে পারে, সমালোচনাও হবে, তবে ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ঐক্য অটুট রাখা জরুরি। কারণ, ফ্যাসিবাদ ফিরে এলে জুলাই আন্দোলনের পক্ষে থাকা কেউই রেহাই পাবে না।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীতে দলীয় কার্যালয়ে দলের পক্ষ থেকে জুলাই–২৪ গণ–অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সেখানেই মজিবুর রহমান এ কথাগুলো বলেন।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘যদি জুলাই গণ-অভ্যুত্থান সফল না হতো তাহলে আমাদের কারাগারে কাটাতে হতো, নেমে আসত অবর্ণনীয় নির্যাতন। যেসব পুলিশ কর্মকর্তা লাশের স্তূপ তৈরি করেছিল, তারা পেত রাষ্ট্রীয় খেতাব।’
গণ-অভ্যুত্থান ছাত্র-জনতাসহ রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের ফলেই সফল হয়েছে জানিয়ে মজিবুর রহমান বলেন, সবার অবদানকেই স্বীকৃতি দিতে হবে। এটা নিয়ে বিতর্কের সুযোগ নেই। অনেক কিছুই পাইনি। তবে স্বাধীনভাবে যে কথা বলছি, লিখছি, বক্তব্য দিচ্ছি, সেটা গণ-অভ্যুত্থানেরই ফসল।
সংবর্ধনা পাওয়া জুলাই যোদ্ধা আসিফ বলেন, ‘আমার পায়ে বন্দুক ঠেকিয়ে পুলিশ গুলি করেছে। মনে হচ্ছিল মৃত্যু উপত্যকায় পড়ে আছি। এবি যুব পার্টির আহ্বায়ক টুটুল ভাই আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন।’
আরেক জুলাই যোদ্ধা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘১৮ জুলাই আমি ছিলাম ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে। পুলিশ ছিল দুই পাশে। আমরা ছিলাম ৬ জন। কিন্তু তারা (পুলিশ) ছিল ৮৬ জন। ওই দিন জীবিত ফিরব কখনো কল্পনা করিনি।’
অনুষ্ঠানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আতিকুর রহমান, রহমত উল্লাহ, অধ্যাপক হুমায়ুন কবির, শাখাওয়াত হোসেন, আকিব হাসান, আশরাফুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, হেদায়েত উল্লাহ, রোমান মিয়া, সিফায়েত হোসাইন, মোহাম্মদ হোসাইন আহমেদ, মোহাম্মদ আমিন, নাবিল, মুস্তাফিজ বিল্লাহ হাবিবী, হাবিবুর রহমান, ফয়েজ আকাশ, নুরুল হুদা, ইকবাল হোসেন, রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এবি পার্টির জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব মিনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল। দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন এবি পার্টির নেতা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, যুব পার্টির সদস্যসচিব হাদিউজ্জামান খোকন প্রমুখ।