বিএনপি ও কৃষক দল নেতার ছেলেকে পেটালেন ওলামা দল নেতার ছেলে
Published: 26th, January 2025 GMT
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলা ওলামা দল নেতার ছেলে মো. হাবিবুল্লাহ ও লোকজন জাকি মুজাহিদ রিফাত ও মেহেদী হাসান নামে দুই কলেজ শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ রোববার সকাল ও আগেরদিন সন্ধ্যায় শ্যামনগর মহসীন কলেজ ও নকিপুর বাজারে তাদের মারধর করা হয়।
রিফাত ঈশ্বরীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বেলালের এবং মেহেদী হাসান উপজেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু বক্কারের ছেলে। তারা শ্যামনগর সরকারি মহসীন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
ভুক্তভোগী দুই তরুণের পরিবারের দাবি, স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে তাদেরকে মারধর করা হয়েছে। স্থানীয় ঊর্ধ্বতন নেতাদের বারবার বলা সত্ত্বেও তারা কর্মী সমর্থকদের নিবৃত্ত না করে বরং উস্কে দিচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ।
রিফাতের চাচা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, তার ভাতিজা রিফাতকে লোহার চেইন দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন উপজেলা ওলামা দলের আহ্বায়ক রবিউল ইসলামের ছেলে হাবিবুল্লাহ। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে জানিয়ে কোনো প্রতিকার মেলেনি।
শফিকুলের ভাষ্য, কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। একপর্যায়ে গত ২২ জানুয়ারি দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সে ঘটনায় দু’পক্ষের বেশকিছু কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। বর্তমানে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ রয়েছে। তবে উপজেলা সদরের বাইরে থেকে প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন শ্যামনগরে গেলে তাদেরকে খুঁজে খুঁজে নিয়ে মারধর করা হচ্ছে।
উপজেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু বক্কার জানান, রোববার সকালে তার ছেলে পরীক্ষায় অংশ নিতে কলেজে যায়। বেলা ১১টার দিকে ১০-১২ জন সঙ্গীকে নিয়ে হাবিবুল্লাহ তার ছেলেকে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে ঢুকে বেধড়ক মারধর করে। এসময় শিক্ষক ও সিনিয়র শিক্ষার্থীরা এসে তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয়। আবু বক্কার সিদ্দিক অভিযোগ করেন, এ ঘটনার পর হাবিবুল্লাহ ফেসবুকে নানা ধরনের উস্কানিমূলক পোষ্ট দিয়ে পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে হাবিবুল্লাহ ও তার বাবা রবিউল ইসলামের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বারবার কল দেওয়া হলেও তারা সাড়া দেননি।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খান আব্দুস সবুর বলেন, এমনটি হয়ে থাকলে তা খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি করবে। বিষয়টি ওলামা দল নেতা রবিউল ইসলামকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ারও আশ্বাস দেন তিনি।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ ল ইসল ম দল ন ত ব এনপ উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরা-৪ আসনের পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল
সাতক্ষীরা-৪ আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শ্যামনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে শ্যামনগর পৌরসভায় এসব কর্মসূচি পালিত হয়।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাতক্ষীরার ২টি আসনসহ দেশের মোট ৩৯টি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। গতকাল খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শ্যামনগরে আলোচনা–সমালোচনা শুরু হয়। রাত সাড়ে আটটার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে দুই শতাধিক মানুষ বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তাঁরা ‘নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘শ্যামনগর আসন ছিল, শ্যামনগর থাকবে’, ‘পুনর্গঠন সিদ্ধান্ত বাতিল কর, করতে হবে’ স্লোগান দিতে থাকেন।
পরে জেসি কমপ্লেক্স চত্বরে পথসভা করে বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের আসন পুনর্বিন্যাসসংক্রান্ত সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান। এ সময় বক্তব্য দেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোলায়ামন কবীর, জেলা বিএনপির সদস্য জি এম লিয়াকত আলী, সাবেক চেয়ারম্যান সাদেকুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
সাতক্ষীরার চারটি সংসদীয় আসনের মধ্যে দুটির আসন পুনর্বিন্যাস করে প্রাথমিক গেজেট প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন। পুনর্বিন্যাস করার আগে সাতক্ষীরা-৪ আসনটি শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও পাশের কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিল। এবার পুনর্বিন্যাস করে শ্যামনগর উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, ১টি পৌরসভা ও আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, শ্যামনগর উপজেলার সঙ্গে আশাশুনি উপজেলার সরাসরি যোগযোগ নেই। শ্যামনগর থেকে আশাশুনি যেতে হলে কালীগঞ্জ উপজেলার ওপর দিয়ে অথবা নৌকায় নদী পার হয়ে যেতে হয়।
অন্যদিকে সাতক্ষীরা-৩ আসনে ছিল আশাশুনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন, দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার একাংশ ৪টি ইউনিয়ন। পুনর্বিন্যাস করে কালীগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দেবহাটা উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসন গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।