মানবিকে কম মেধাবীরা ভর্তি হওয়ায় ফল খারাপ হয়েছে: কুমিল্লার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক
Published: 10th, July 2025 GMT
এসএসসি পরীক্ষায় কুমিল্লা বোর্ডে গড় পাসের হার ৬৩ দশমিক ৬০ শতাংশ হলেও মানবিক বিভাগে পাসের হার বিপর্যয় হয়েছে। এ বিভাগে পাসের হার মাত্র ৪৬ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এর মধ্যে ছেলেদের পাসের হার ৪৩ দশমিক ২৬ শতাংশ এবং মেয়েদের পাসের হার ৪৭ দশমিক ৮২ শতাংশ। এ বিভাগে গত বছর পাসের হার ছিল ৬৬ দশমিক ৯৪।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক রুনা নাছরীন বলেন, ‘বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের তুলনায় মানবিক বিভাগে কম মেধাবী শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ায় বোর্ড পরীক্ষাতেও এর প্রভাব পড়েছে। যে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যারা বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ভর্তি হতে পারে না, তারাই মানবিকে পড়ে। তাই মানবিকে ফল খারাপ হয়েছে।’
কুমিল্লার নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার সমকালকে বলেন, ‘দেশের অন্যতম প্রাচীন ও খ্যাতনামা তার স্কুলে মানবিকে মাত্র একজন ছাত্রী পরীক্ষার্থী ছিল। সে জিপিএ-৪.
তিনি বলেন, ‘সব অভিভাবকই সন্তানদের ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ার করতে চায়, তাই মানবিক বিভাগে আমরা শিক্ষার্থী পাচ্ছি না। জোর করে তো আর মানবিক বিভাগে ভর্তি করা যায় না।’
রাশেদা আক্তার আরও বলেন, ‘যারা মানবিকে পড়ে তারা দুর্বল- এমন ভাবা হয়। কিন্তু যারা ভালো পড়ে তারা সব বিষয়েই ভালো ফলাফল করে।, অভিভাবকদের এ বিষয়ে সচেতন হওয়া দরকার।’
একই চিত্র কুমিল্লা জিলা স্কুলে। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হাফিজ উদ্দিন বলেন, এ স্কুলে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগই নেই। এ বছর বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ৩৬৫ জন অংশ নিয়ে ২৪৪ জনই জিপিএ-৫ লাভ করেছে। পাসের হার শতভাগ।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থী সংকটে মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগ খোলা হচ্ছে না। ভবিষ্যতে এ দুটি বিভাগ খোলার বিষয়ে পরিকল্পনা আছে।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান অধ্যাপক শামছুল ইসলাম বলেন, ‘মানবিকে ফলাফল কমে যাওয়ার কারণে মূল ফলাফলেও এর বড় প্রভাব পড়েছে। মানবিকে ভালো ছাত্র পড়ে নাকি খারাপ ছাত্র পড়ে, সেটা আমলে নেওয়ার বিষয় নয়। বরং এই বিভাগে যারাই পড়ে তারা ভালো পড়ছে না কেন, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি দেখেছি, কুমিল্লা বোর্ডেও অনেক ভালো ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মানবিকে কোনো শিক্ষার্থী নেই। কোনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক-দুজন ছাত্র আছে। এ রকম কেন হবে? শিক্ষার্থীরা মানবিকে আগ্রহী না কেন সেটা আমরা জানার চেষ্টা করব।’
চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী কমেছে। চলতি বছর মোট এক লাখ ৬৭ হাজার ৫৭২ জন পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে পাস করেছে এক লাখ ছয় হাজার ৫৮১ জন। বিজ্ঞান বিভাগে পাসের ৮৮ দশমিক ০১, মানবিকে ৪৬ দশমিক ৭৭ এবং বাণিজ্য বিভাগে ৫৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। পাসের হার ও জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে এগিয়ে আছে মেয়েরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: এসএসস ম নব ক ব ভ গ পর ক ষ দশম ক ফল ফল
এছাড়াও পড়ুন:
ঝালকাঠিতে ৪ বিদ্যালয়ে পাস করেনি কেউ
২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ঝালকাঠির জেলার নলছিটি উপজেলার চারটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কেউই উত্তীর্ণ হতে পারেনি।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীনে অনুষ্ঠিত এই পাবলিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া চারটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সবাই অকৃতকার্য হয়েছে, যার ফলে এসব বিদ্যালয়ের পাসের হার দাঁড়িয়েছে শতভাগ শূন্যতে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) প্রকাশিত বরিশাল বোর্ডের এসএসসি ফলাফলে এ তথ্য উঠে আসে।
ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায়, উপজলার কুলকাঠি ইউনিয়নের দেলদুয়ার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৩ জন, রানাপাশা ইউনিয়নের ভেরনবাড়িয়া সিএসইউ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭ জন, মাটিভাঙ্গা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৭ জন ও দপদপিয়া ইউনিয়নের জুরকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়য়ের ১১ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়। কিন্তু চার বিদ্যালয়ের কেউই উত্তীর্ণ হতে না পারায় জেলার শিক্ষা মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
এ বিষয়ে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস আলী সিদ্দিকী বলেন, “নলছিটিতে চারটি প্রতিষ্ঠানে কেউ পাস করেনি। কেন তাদের কোনো শিক্ষার্থী পাস করতে পারেনি, সেই বিষয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হবে এবং ওই সব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/অলোক/এস