তামিম ইকবাল সংবাদ সম্মেলন করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় মজার ছলে ফরচুন বরিশালের মিডিয়া ম্যানেজার বলছিলেন, “তিন বার নিয়ে আসছি।” অর্থ্যাৎ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) নিজেদের ১১ ম্যাচের মধ্যে অধিনায়ক তামিম তিননার মুখোমুখি হন সংবাদ মাধ্যমের।

এবার এমন সময়ে এলেন যখন পেমেন্ট ইস্যুর বিতর্কে বিপিএলের অবস্থা লেজেগোবরে। তাইতো তামিমের দিকে এসব নিয়ে সংবাদকর্মীদের প্রশ্ন ছিল বেশি। রাখঢাক না রেখে অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার জানিয়েছেন মতামত, সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) দিয়েছেন পরামর্শ।

ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর পাওনা বুঝিয়ে না দেয়ার বিতর্ক এবারই প্রথম নয়। তবে ছাড়িয়ে গেছে আগের সব আসরকে। টাকা দিতে যখন কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজির নাকাচি চুবানি অবস্থা তখন বিদেশি ক্রিকেটার কমানোর প্রসঙ্গ আসে। কারণ এতে বড় রকমের খরচ বেঁচে যায়। তামিমকে এই নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি জানান দল কমানোর বিষয়টি।    

আরো পড়ুন:

দেশ সেটেল নেই: পারিশ্রমিক ইস্যুতে মিরাজ

দুর্নামের দায়ভার নিল বিসিবি, নজরদারিতে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা 

“না… না… (দুই বিদেশি নয়)। আমার মতে চার বিদেশি ঠিক আছে। তবে ফ্র্যাঞ্চাইজি সংখ্যা নিয়ে আপনি ভাবতে পারেন। আপনি দেখেন, আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ক্রিকেটার কিন্তু পাকিস্তানে। তবু পিএসএল যখন শুরু হয়েছে, পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে হয়েছিল। যে কারণে সেখানে ক্রিকেটের মান খুব খুব ভালো। আস্তে আস্তে এক-দুইটা ফ্র্যাঞ্চাইজি বেড়েছে।”

দল কমলে স্থানীয় ক্রিকেটারদের সুযোগ কমে আসবে। এই দিকটাও মাথায় আছে তামিমর, “আমরা বিপিএল শুরু করেছিলাম ৮টা দিয়ে.

.. ৭টা দল দিয়ে। ক্রিকেটাররা হয়তো অভিযোগ করতে পারে, দল একটা বেশি থাকলে স্থানীয় ক্রিকেটারদের খেলার সুযোগ থাকবে বেশি।” 

“অন্যভাবে চিন্তা করলে দলে সুযোগ পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতাও তো বাড়বে। এনসিএল বা ঘরোয়া ক্রিকেটে পারফর্ম করে বিপিএলে দল নিশ্চিত করার ক্ষুধাটা বাড়বে। আমার মতে, বিপিএলে ৬ দলের বেশি হওয়া উচিত নয়, ৫ দল হলে বেশি ভালো, সর্বোচ্চ ৬টি হতে পারে।”

এমনিতে এবারের বিপিএলে ভরা ছিল নিম্ন মানের বিদেশি ক্রিকেটারে। শাহীন শাহ আফ্রিদি, অ্যালেক্স হেলসসহ কয়েকজন তারকা খেললেও তারা এসেছিলেন অল্প কয়েকটি ম্যাচের জন্য। সবমিলিয়ে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি ছিল অচেনা বিদেশিতে ভরা। শুধু দল কমানো না তামিম চেয়েছেন সূচির পরিবর্তনও। 

তার যুক্তি যেহেতু বিপিএলের সময় ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টি, এস এ টি-টোয়েন্টি কিংবা বিগ ব্যাশের মতো নামি লিগ হয় তাই সূচি পরিবর্তন করে এগিয়ে নেওয়া আসা উচিত। তাতে আরও ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটার পাওয়া যাবে।

“আমার মনে হয় বিপিএলের প্রথম শিডিউল ছিল অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে। এটা ভালো সময় ছিল। এ সময় এসএ-টোয়েন্টি ও আইএলটি-টোয়েন্টি এই দুই মেজর লিগের সাথে সাংঘর্ষিক হবে না। একবার সূচি পরিবর্তন হয় বাংলাদেশ দলের খেলা থাকায়। এছাড়া ঐ সময়েই হতো। কারণ তখন তেমন খেলা থাকে না। তখন শুধু হয়ত আবুধাবি টি-টেন। একটা টুর্নামেন্টের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়া দুটার চেয়ে ভালো”-বলেছেন তামিম। 

ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ত ম ম ইকব ল ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ