সাত ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়ে ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) পর্দা ওঠে। উদ্বোধনী ম্যাচে পাঁচ বছর পর ফেরা ফ্র্যাঞ্চাইজি দুর্বার রাজশাহীর অধিনায়কের জার্সি ছাড়া টসের বিতর্ক দিয়ে শুরু, এরপর দিন যত গড়ায়, ম্যাচ যত বাড়তে থাকে বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে লাগামহীন ভাবে। সরকারি হস্তখেপ পর্যন্ত করতে হয়েছে।

তবু মাঠের ক্রিকেটে ছিল রান উৎসব, দর্শকদের চাহিদা ছিল আকাশছোঁয়া, টিকিট বিক্রির আয় গড়েছে রেকর্ড; সবমিলিয়ে বিপিএল নিয়ে সমালোচনা যেমন ছিল তুঙ্গে বাইশ গজের লড়াই নিয়ে আলোচনাও ছিল অনেক। অবশেষে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ফাইনালের মহারণ দিয়ে শেষ হতে যাচ্ছে বিতর্কের বিপিএল।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৬টায় ফাইনাল মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল-চিটাগং কিংস। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন বরিশালের সঙ্গে চিটাগং লড়াই করবে প্রথম ট্রফির জন্য। এর আগে বন্দরনগরীর ফ্র্যাঞ্চাইজিটি ২০১৩ সালে ফাইনালে উঠেছিল, ১১ বছর পর আবার শিরোপা জয়ের হাতছানি।

আরো পড়ুন:

‘স্ট্রেচার’ থেকে নেমে আলিসের ‘চার’, শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে ফাইনালে চিটাগং

হেটমায়ার ঝড়ে শেষ চার ওভারে ৬৯, খুলনার চ্যালেঞ্জ

জমজমাট লড়াইয়ে ফাইনালে নাম লেখানো চিটাগংকে কৃতিত্ব দিচ্ছেন বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল, “মাঠের ক্রিকেটে তারা প্রমাণ করেছে তারা ডিজার্ভিং। এমন না যে শুধু সেমিতে এসে খেলেছে। টুর্নামেন্ট জুড়ে দারুণ খেলেছে। ম্যানেজমেন্টের অনেক কৃতিত্ব পাওনা।”

টুর্নামেন্টে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিক বরিশাল। দেশি-বিদেশি মিলিয়ে স্কোয়াডের শক্তিও বেশ। যোগ দিয়েছেন কিউই অলরাউন্ডার জিমি নিশাম। তাতে শক্তি বেড়ে হয়েছে আরও কয়েকগুণ। সেই তুলনায় চিটাগং কিংস পিছিয়ে আছে। তবে এমনটা মানতে চান তামিম।

“ট্রফি এমন জিনিস যারা ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তারাও চাইবে ৬ বার হতে। আমরাও অবশ্যই চাইব আবার নিতে। প্রতিপক্ষও অনেক ভালো ক্রিকেট খেলছে। খুলনা দারুণ দল। শেষে ২ বিদেশি নিয়ে অনেক শক্তি বাড়িয়েছিল। শেষ ম্যাচেও দেখা গেছে কিছুই প্রেডিক্ট করা যায় না। আপনার ভালো প্লেয়ার থাকতে পারে তবে নির্দিষ্ট দিনের পারফরম্যান্স ম্যাটার করে। কালই ফাইনাল আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে হবে। ১৩-১৪ ম্যাচে যা করেছি সব সেভাবেই করতে হবে ভিন্ন কিছু না। আমাদের চেষ্টা করে যেতে হবে সেরাটা দেওয়ার। ফাইনালকে শুধু একটি ম্যাচ হিসেবেই দেখতে হবে।”

ফাইনালে নামে লেখানো চিটাগংয়ে গায়েও লেগেছে বিতর্কের দাগ। দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের পাওনা বুঝিয়ে না দেওয়ায় বারবার শিরোনামে এসেছে। তবে দলটির কোচ টেইটের দাবি এসব কিছু প্রভাব পড়েনি।

“স্কোয়াডের মধ্যে আমরা বিশ্বাস ছড়িয়ে দিতে পেরেছি। ম্যাজিক হতেই পারে। ভালো জিনিস হলো, টুর্নামেন্টজুড়ে আমরা খুব বেশি কিছু পরিবর্তন আনিনি। আমরা এভাবেই টুর্নামেন্টে খেলেছি। কিছুটা ভাগ্যের সহায়তা আছে। তবে আমার মনে হয়, আমরা এখানে থাকার যোগ্য।”

সবমিলিয়ে চ্যালেঞ্জিং ফাইনালের প্রত্যাশা করছেন এই অস্ট্রেলিয়ান কোচ, “আমি মনে করি, সেরা দুই দলের মধ্যেই খেলা হবে। এটা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং হবে। এর আগেও আমরা ক্লোজ কিছু ম্যাচ খেলেছি। এটা যেকোনো দিকেই যেতে পারে। তবে ফাইনাল ম্যাচে আমরা চ্যালেঞ্জ প্রত্যাশা করছি। বরিশাল খুবই ভালো দল। তাদের দলে ভালো কিছু খেলোয়াড় আছে। আমি মনোযোগটা আমাদের মধ্যেই রাখতে চাই।”

ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল ত ম ম ইকব ল ব প এল

এছাড়াও পড়ুন:

মে মাসে এক থেকে দুটি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস

চলতি মাসে ধেয়ে আসতে পারে এক থেকে দুটি ঘূর্ণিঝড়। সেই সঙ্গে এ মাসে শিলা ও বজ্রবৃষ্টিসহ তীব্র কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক এস এম কামরুল হাসানের সই করা একমাসের দীর্ঘ মেয়াদি পূর্বাভাসে এই তথ্য জানা গেছে।

পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, মে মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। এছাড়া এ মাসে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে তিনটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে যার মধ্যে এক থেকে দুইটি নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। দেশে ২ থেকে ৩ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ মাঝারি বা তীব্র কালবৈশাখী ঝড় এবং ৩ থেকে ৫ দিন বজ্র ও শিলাবৃষ্টিসহ হালকা কালবৈশাখী ঝড় হতে পারে।

আরো পড়ুন:

নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘ফিনজালে’ পরিণত, বন্দরে ২ নম্বর সংকেত

উপকূল রক্ষা করছে বনাঞ্চল, কিন্তু বন বাঁচাতে নেই উদ্যোগ

তীব্র তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের কোথাও কোথাও ১ থেকে ৩টি মৃদু (৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস) ও মাঝারি (৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ১ থেকে ২টি তীব্র (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি) তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এ সময় দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিক এবং রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিক অপেক্ষা বেশি থাকতে পারে।

এই আবহাওয়াবিদ বলেন, “মে মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহে স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে। তবে বিচ্ছিন্ন ভারি বৃষ্টিপাতের প্রেক্ষিতে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে বাড়তে পারে।”

এদিকে, মে মাসে দেশের প্রধান নদ-নদীগুলোয় স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে বিচ্ছিন্ন ভারি বৃষ্টিপাতের প্রেক্ষিতে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের নদীগুলোর পানি সমতল সময় বৃদ্ধি পেতে পারে।

ঢাকাসহ ৮ জেলায় বজ্রপাতের সতর্কতা জারি
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের আটটি জেলায় বজ্রপাতের সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। এতে বলা হয়েছে প্রায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত এসব এলাকায় বজ্রপাতের ঝুঁকি রয়েছে। একইসঙ্গে দেশের কিছু কিছু জায়গায় দমকা হওয়া ও শিলাসহ বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুরে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশিদের সই করা এই সতর্কবার্তায় জানানো হয়, ঢাকা, শেরপুর, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কুমিল্লা, সুনামগঞ্জ এবং সিলেট জেলার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বা তার বেশি বেগে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। একইসঙ্গে পৌনে ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বজ্রপাতের সম্ভাবনাও রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জনসাধারণকে কিছু জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শও বিজ্ঞপ্তিতে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ঘরে অবস্থান করা, অপ্রয়োজনে যাত্রা এড়িয়ে চলা এবং নিরাপদ আশ্রয়ে থাকা। একইসঙ্গে গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটি থেকে দূরে থাকার পাশাপাশি কংক্রিটের মেঝেতে শোয়া বা দেয়ালে হেলান দেওয়া থেকেও বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এছাড়া, বজ্রপাতের সময় বৈদ্যুতিক ও ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলোর প্লাগ খুলে রাখার এবং জলাশয় থেকে দ্রুত সরে আসার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ পরিবাহী যে কোনো বস্তু থেকে দূরে থাকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে সতর্কবার্তায়। শিলাবৃষ্টির সময় সবাইকে ঘরে থাকারও আহ্বান জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ