যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় এক গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামের মাঠ থেকে গরুর জন্য ঘাস সংগ্রহ করে বাড়ি ফেরার পথে প্রতিবেশী এক ব্যক্তি ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়।

নিহত গৃহবধূর নাম তৃপ্তি মণ্ডল (৪০)। তিনি উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামের অবনিশ মণ্ডলের স্ত্রী। এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে নিহত ব্যক্তির স্বামী অবনিশ মণ্ডল বাদী হয়ে শংকর মল্লিক (৪৮) নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। অভিযুক্ত শংকর মল্লিক উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামের মুকুন্দ মল্লিকের ছেলে। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।

স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ জানিয়েছে, সম্পর্কের জেরে শংকর মল্লিক ধারালো অস্ত্র দিয়ে তৃপ্তি মণ্ডলকে হত্যা করেছেন। খবর পেয়ে মনিরামপুর থানার পুলিশ গতকাল গভীর রাতে নিহত ব্যক্তির বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করে।

স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল দুপুরে তৃপ্তি মণ্ডল প্রতিবেশী এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে উপজেলার কৃষ্ণবাটি গ্রামের মাঠে গরুর জন্য ঘাস সংগ্রহ করতে যান। ঘাস সংগ্রহের পর বাড়ি ফিরছিলেন তাঁরা। বেলা দেড়টার দিকে মাঠের শেষ প্রান্তে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে সেখানে আগে থেকে অবস্থান নেওয়া শংকর মল্লিক তাঁদের পথ রোধ করেন। কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে শংকর তৃপ্তিকে ধাক্কা মেরে ধানখেতে ফেলে দেন। এরপর হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তৃপ্তির ঘাড় ও মাথায় এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। এ সময় তৃপ্তির সঙ্গে থাকা নারী বাধা দিতে গেলে শংকর তাঁকে হত্যার ভয় দেখান।

স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত তৃপ্তি মণ্ডলকে উদ্ধার করে প্রথমে মনিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে স্বজনেরা তাঁকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন। পথে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে গোপালগঞ্জের ভাটিয়াপাড়া এলাকায় পৌঁছালে তিনি মারা যান।

কৃষ্ণবাটি এলাকার কয়েকজন জানিয়েছেন, তৃপ্তির স্বামী অবনিশ মণ্ডল পেশায় ভ্যানচালক। এই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। শংকর মল্লিক বিবাহিত এবং তাঁর একটি কন্যাসন্তান রয়েছে। তৃপ্তি ও শংকরের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে সম্পর্ক চলছিল। সম্প্রতি শংকর তাঁকে ঘরে তুলতে চাইলে তৃপ্তি তাঁর কাছে ভিটেবাড়ি লিখে দেওয়ার দাবি করেন। শংকর রাজি না হওয়ায় তাঁদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জেরে শংকর ধারালো অস্ত্র দিয়ে তৃপ্তিকে হত্যা করে থাকতে পারেন।

মনিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাবলুর রহমান খান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সম্পর্কের জেরে শংকর মল্লিক গতকাল দুপুরে গৃহবধূ তৃপ্তি মণ্ডলকে কুপিয়ে আহত করেছেন। সন্ধ্যায় ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা গেছেন। গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য গ হবধ গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘আমি আমার মেয়েদের সঙ্গে আরো বেশি দিন বাঁচতে চাই’

ছোট পর্দার এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রাবস্তী দত্ত তিন্নি। ব্যক্তিগত জীবনে ভীষণ উড়াই-উতরাই দেখেছেন। সবকিছু পেছনে ফেলে পাড়ি জমিয়েছেন কানাডায়। কন্যা ওয়ারিশাকে নিয়ে সেখানে এখন বসবাস করছেন তিন্নি। দূর দেশ থাকলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সরব এই অভিনেত্রী। নিজের ভাবনা ভক্তদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে এ মাধ্যমকে বেছে নেন এই তারকা। 

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকালে তিন্নি তার ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। তাতে দেখা যায়, কন্যার গালে চুমু খাচ্ছেন তিন্নি। এ ছবির ক্যাপশনে এই অভিনেত্রী লেখেন, “আমি কখনো ডাক্তার দেখাইনি এই ভেবে যে, সম্ভবত আমার কোনো বড় অসুখ হইছে। কিন্তু এবার আমি নিজেই ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়েছি। কারণ আমি জানতে চাই—আমি সুস্থ আছি না কি নাই।” 

আরো পড়ুন:

আপনার অনুপস্থিতি এখনো অবিশ্বাস্য মনে হয়: শাকিব খান

ফরিদা পারভীনের কণ্ঠে ছিল বাংলার মাটি ও সংস্কৃতির স্পন্দন: শাকিব

পরের ঘটনা বর্ণনা করে তিন্নি লেখেন, “আমি আজ ডাক্তারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি। তিনি চমৎকার একজন মানুষ। আমাকে অনেকগুলো পরীক্ষা দিয়েছেন এবং সেগুলো করিয়েছি। আমার টেস্টের রিপোর্ট যাতে ভালো আসে, এজন্য আমি সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি। দয়া করে…। আমি আমার মেয়েদের সঙ্গে আরো বেশি দিন বাঁচতে চাই। আমি এতটুকুই চাইলাম তোমাদের থেকে।” 

জীবন নিয়ে উপলদ্ধির কথা জানিয়ে তিন্নি লেখেন, ‘মানবজনম বড়ই মধুর, যদি হও মানুষ’—এটা কারো কথা বা কোট না, এটা আমার কথা…। আর আমার দাদুর কথা হলো, ‘মানুষ আপন, টাকা পর, যত পারিস মানুষ ধর।’ শুভ হোক মানব জন্মের।” 

২০০৬ সালে অভিনেতা আদনান ফারুক হিল্লোলকে বিয়ে করেন তিন্নি। এ সংসারে জন্ম নেয় কন্যা ওয়ারিশা। ২০১২ সালে বিচ্ছেদ হয় এই দম্পতির। এরপর হিল্লোল বিয়ে করেন নওশীনকে। ২০১৪ সালে আদনান হুদা সাদকে বিয়ে করেন তিন্নি। এ সংসারে আরিশা নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। ২০১৭ সালে তিন্নির এ সংসারও ভেঙে যায়।   

২০০২ সালে আনন্দধারা ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় পঞ্চম রানার আপ নির্বাচিত হন তিন্নি। তারপর মডেলিংয়ের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন।  

২০০৪ সালে মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী নির্মিত ধারাবাহিক ‘৬৯’ নাটকের মাধ্যমে অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর অসংখ্য জনপ্রিয় টেলিভিশন নাটক দর্শকদের উপহার দেন এই অভিনেত্রী। ‘ডুবসাঁতার’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ‘সে আমার মন কেড়েছে’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিন্নি। 

কেবল তাই নয়, একসময় শাকিব খানের সঙ্গে মূলধারার বাণিজ্যিক সিনেমায়ও অভিনয় করেন তিন্নি। ২০১২ সালে মুক্তি পায় ‘সে আমার মন কেড়েছে’ শিরোনামের সিনেমাটি। মুক্তির পর তিন্নিকে ঢালিউড গ্রহণও করেছিল। তাকে নিয়ে বেশ আলোচনাও তৈরি হয়েছিল। বেশ কয়েকজন পরিচালক তিন্নিকে নিয়ে কাজের পরিকল্পনাও করেন। কিন্তু ওই সময়ই হিল্লোলের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। ফলে অনিয়ন্ত্রিত জীবনের ফাঁদে পড়েন; আর জনপ্রিয়তার মধ্যগগন থেকে ছিটকে পড়েন এই অভিনেত্রী।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ