খাগড়াছড়িতে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে অর্থ সহায়তা
Published: 3rd, October 2025 GMT
খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে জেলা সদরের স্টেডিয়াম মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে ২৭ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী ও পরিবারের মাঝে ৫০ কেজি করে চাল ও সাড়ে সাত হাজার টাকা করে অনুদানের চেক বিতরণ করা হয়।
আরো পড়ুন:
‘খাগড়াছড়িবাসী ইউপিডিফের অপরিপক্ক আন্দোলনের মাশুল গুনছে’
গোপালগঞ্জের ঘটনায় সরকার বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি করবে: সেতু উপদেষ্টা
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে ত্রাণ ও অনুদানের চেক বিতরণ করেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। তিনি বলেন, “সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে প্রশাসন সবসময় আছে। আপনাদের ক্ষতি পুরোপুরি পুষিয়ে দেওয়া না গেলেও এই অনুদানের মাধ্যমে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়ানোর সাহস জোগাবে।’’
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ হাসান প্রমুখ
২৩ সেপ্টেম্বর জেলা সদরের সিঙ্গিনালায় রাত ৯টায় প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় ক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে শয়ন শীল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।
পাহাড়ি এই কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পর এর প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতা জেলায় অবরোধের ডাক দেয়। অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে গত ২৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভ ও সহিংসতায় রণক্ষেত্র পরিণত হয় খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজার। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ছিল স্থানীয় একটি পক্ষ। এ সময় গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়। তারা তিনজনই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর। সেনাবাহিনীর মেজরসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়।
অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ২৭ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও ভাঙচুর করা হয়। এরপর সদর উপজেলা, পৌরসভা এলাকা এবং গুইমারা উপজেলায় পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
এই সহিংসতার মধ্যে পাহাড়ি ও স্থানীয়দের বাড়িঘর, দোকান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়া হয়।
ঢাকা/রূপায়ন/বকুল
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফের পাহাড়ে পাচারের উদ্দেশ্যে জিম্মি রাখা আরও ২১ নারী ও শিশু উদ্ধার
সাগরপথে মালয়েশিয়া পাচারের উদ্দেশ্যে কক্সবাজারের টেকনাফের বাহারছড়ার গহিন পাহাড়ে জিম্মি রাখা নারী, শিশুসহ ২১ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনীর যৌথ দল।
কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের গণমাধ্যম কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক জানান, গতকাল বুধবার মধ্যরাতে বাহারছড়া ইউনিয়নের করাচিপাড়া ঘাটসংলগ্ন এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। পাচারের জন্য নারী, শিশুসহ কয়েকজনকে জিম্মি করে রাখা হয়েছিল—এমন খবর পেয়ে কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী অভিযান চালায়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে পাচারকারীরা পালিয়ে যায়। পরে আস্তানাটি তল্লাশি করে ২১ জনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের অধিকাংশ রোহিঙ্গা নাগরিক।
উদ্ধার হওয়াদের টেকনাফ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। সেখান থেকে তাঁদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক।
এর আগে ১ অক্টোবর বাহারছড়ার জুম্মাপাড়া পাহাড়সংলগ্ন এলাকা থেকে আটজন নারী ও শিশুকে উদ্ধার করে কোস্টগার্ড। ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে একই এলাকার পাহাড় থেকে তিন দালালসহ তিনজনকে উদ্ধার করা হয়। ২৩ সেপ্টেম্বর কচ্ছপিয়া এলাকার পাহাড় থেকে পাঁচ অপহৃতকে উদ্ধার এবং দুই মানব পাচারকারীকে আটক করা হয়। এর আগের দিন র্যাব ও বিজিবি অভিযান চালিয়ে অস্ত্রসহ তিন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার ও ৮৪ জনকে উদ্ধার করে। ১৮ সেপ্টেম্বর কোস্টগার্ড ৬৬ জনকে উদ্ধার করে। ১৬ সেপ্টেম্বর বিজিবি ১২ পাচারকারীকে আটক ও ১১ জনকে উদ্ধার করে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে টেকনাফ থেকে এখন পর্যন্ত ৬৮ পাচারকারীকে গ্রেপ্তার এবং ২০১ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। শীত মৌসুমে সাগরপথে মানব পাচারের প্রবণতা বাড়ে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নূর বলেন, বুধবার উদ্ধার হওয়া সাত রোহিঙ্গা নারী ও একজন শিশুকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আরও ২১ নারী ও শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের আগামীকাল শুক্রবার আদালতে পাঠানো হবে।