বাড়ির পাশের দোকানে জুস কিনতে গিয়েছিল আবু তালহা মুহিন মোল্লা। পঞ্চম শ্রেণির এ ছাত্র আর ফেরেনি। এ ঘটনার দু’দিন পর সোমবার ভোরে নিজ বাড়ির ভাড়াটিয়ার কক্ষে পাওয়া গেছে মুহিনের (১১) লাশ। ট্রাঙ্কের ভেতর বস্তাবন্দি অবস্থায় ছিল শিশুটির মরদেহ। ঘটনাটি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া ইউনিয়নের চন্দ্রদিঘলিয়া উত্তর চরপাড়ার।

নিহত মুহিন একই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাঞ্জারুল ইসলাম মঞ্জু মোল্লার ছেলে। সে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত রাবেয়া-আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। 

পুলিশের ধারণা, শ্বাসরোধে হত্যার পর মুহিনের মরদেহ বস্তায় বেঁধে গুমের উদ্দেশ্যে ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। কেন হত্যা করা হয়েছে তা প্রাথমিকভাবে জানাতে পারেনি তারা। 

স্বজনের ভাষ্য, বাবার কাছ থেকে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যেই শিশুটিকে ঘরে আটকে রাখা হয়। পরে অন্য কোথাও তাকে সরাতে ব্যর্থ হয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় মুহিনকে।

মুহিনের চাচা ওলিয়ার রহমান মোল্লার ভাষ্য, তাঁর ভাই মঞ্জু মোল্লা ইউপি সদস্য। ইটভাটার ব্যবসাও রয়েছে তাঁর। এ কারণে তাঁর অনেক টাকা আছে– এমন ধারণা থেকে ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে মুহিনকে অপহরণ করা হয় বলে তারা সন্দেহ করছেন। ভাড়াটিয়া আমিনের ঘরে রাখার পর মুহিনকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিতে অপহরণকারীরা ব্যর্থ হয়। তারপর তারা শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ বস্তাবন্দি করে ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রাখে। 

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, শনিবার সকালে বাড়ির পাশের দোকানে জুস কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় মুহিন। পরিবারের সদস্যরা তার সন্ধান না পেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোববার মুহিনদের বাড়ির ভাড়াটিয়া আমিন, একই গ্রামের শাওন, ইসান ও সিহাবকে আটক করে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার ভোররাতে আমিনের ঘরে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় সেখানে বস্তায় বেঁধে ট্রাঙ্কে রাখা মুহিনের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় আমিনের মা শাহানারা বেগমকে আটক করা হয়। 

ময়নাতদন্ত শেষে মুহিনের মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

জোহরের নামাজের পর মুহিনের মরদেহের জানাজা হয় রাবেয়া-আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। 

এর আগে এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এলাকাবাসী মানববন্ধন করে। ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের চন্দ্রদিঘলিয়ায় দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত চলে এ কর্মসূচি। এতে বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে মাহিন হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ আটক র মরদ হ র পর ম সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

কোহলির নিরাপদ আশ্রয় কোথায়

ইনস্টাগ্রাম

সম্পর্কিত নিবন্ধ