ঢাকার সাত কলেজ: ইউজিসিকে চিঠি দিয়ে সাত করণীয় জানাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 1st, May 2025 GMT
ঢাকার ৭ কলেজে আসন্ন শিক্ষাবর্ষে ভর্তি ও চলমান শিক্ষা কার্যক্রম কীভাবে হতে পারে—সে বিষয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে ইউজিসিকে চিঠি দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে ভর্তি কার্যক্রমে সহযোগিতাসহ ৭টি করণীয় উল্লেখ করা হয়েছে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ ইউজিসির চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজের কাছে গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান জানিয়ে এই চিঠি দেন।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তত্ত্বাবধানে বা নজরদারিতে সমন্বিত একটি কাঠামোর অধীনে চলবে রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কাজ।
চিঠিতে মোট সাতটি করণীয় বিষয়ে ইউজিসিকে জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে স্নাতক পর্যায়ে (আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রাম) ভর্তি পরীক্ষা ও ভর্তিসংক্রান্ত যাবতীয় কাজ ইউজিসি প্রস্তাবিত সাময়িক কাঠামোর অধীনে অনুষ্ঠিত হবে বলে উল্লেখ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চিঠিতে বলেছে, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক্করণ বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল ও তা কার্যকর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে। আসন্ন শিক্ষাবর্ষে ভর্তিসংক্রান্ত যাবতীয় কাজ ইউজিসি প্রস্তাবিত সাময়িক কাঠামোর অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। এ ক্ষেত্রে ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনা করে ইউজিসির চাহিদা অনুযায়ী ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। আর ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় বা সমকক্ষ প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় করা হবে এবং সেই প্রতিষ্ঠান থেকেই তাঁরা সনদ পাবেন। এ ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে জটিলতা এড়াতে আগেই ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের জানানো হবে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, সাত কলেজের জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার আগে যে সাময়িক কাঠামোতে এই সাত কলেজের কাজ চলবে, তাতে এ কাঠামোর প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সাত কলেজের যেকোনো একজন অধ্যক্ষ। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর, ভর্তি দপ্তর, রেজিস্ট্রার দপ্তর ও হিসাব দপ্তরের প্রতিনিধিরাও থাকবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠিতে ‘নজরদারি সংস্থার’ নাম পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, ইউজিসি প্রস্তাবিত কাঠামোতে ইউজিসির একজন সদস্যের নেতৃত্বে গঠিত কমিটিকে ‘নজরদারি সংস্থার’ পরিবর্তে ‘তত্ত্বাবধানকারী বা তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা’ নামকরণ করা যেতে পারে।
সাত কলেজের চলমান শিক্ষাবর্ষগুলোর শিক্ষার্থীদের যাবতীয় শিক্ষা কার্যক্রম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধিবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হবে। এ ক্ষেত্রে সাত কলেজের নিজ নিজ অধ্যক্ষের নিয়ন্ত্রণে ‘হেল্প ডেস্ক’ শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ও অন্যান্য কার্যক্রম-সংক্রান্ত সহায়তাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা যেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনিক ভবনে না এসেও তাঁদের পরীক্ষার ফরম পূরণ, সনদ উত্তোলন ও অন্যান্য কাজ সহজেই নিজ কলেজে সম্পন্ন করতে পারেন, সে বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের অধ্যক্ষরা আলোচনার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এ ক্ষেত্রে সাময়িক সমন্বিত কাঠামোর পরিচালকের দপ্তর সার্বিক তত্ত্বাবধান করতে পারেন বলে মনে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এ ছাড়া সাত কলেজসংক্রান্ত যাবতীয় হিসাব পরিচালনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে স্বতন্ত্র হিসাব খোলা হবে, তাতেই চলমান শিক্ষাবর্ষের পরবর্তী আর্থিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
ঢাকার এই সাত সরকারি কলেজ হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত জানুয়ারিতে এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এই সাত কলেজের জন্য নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম হবে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি (ডিসিইউ)।
আরও পড়ুনসাত কলেজ নিয়ে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, চলবে ভিন্ন মডেলে ১৭ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন শ ক ষ বর ষ স ত কল জ র প রস ত ব ত পর ক ষ পর চ ল সরক র ইউজ স
এছাড়াও পড়ুন:
কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন জলসীমানা প্রায় দেড়শো কিলোমিটার। ভারতীয় প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ সীমানা দিয়ে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বাড়তি তৎপরতা নেওয়া হচ্ছে। খবর আনন্দবাজারের।
খবরে বলা হয়েছে, নদী ও বনভূমি এলাকায় সীমান্ত বরাবর বিএসএফ মোতায়েন আছে। ভাসমান বর্ডার আউটপোস্ট, বঙ্গোপসাগর অংশে কোস্ট গার্ডের নজরদারি চলছে। ড্রোন, সেন্সর ও ক্যামেরা, কিছু জায়গায় নাইট ভিশন ক্যামেরা ব্যবহার করা হচ্ছে। পাশাপাশি, পুলিশের তরফেও উপকূল এলাকায় দিনরাত নজরদারি চলছে।
উপকূল থানাগুলোর পক্ষ থেকে নদীপথে নিয়মিত টহল দেওয়া হচ্ছে। রাতেও উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে নজর রাখা হচ্ছে। নদীপথে কোনো জলযান দেখলেই তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্রও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নদী বা সমুদ্রে এখন মাছ ধরার উপরে নিষেধাজ্ঞা চলছে। মৎস্যজীবীদের জলযান চলাচল করার কথা নয়। তাই জলযান দেখলেই তল্লাশি চলছে। বাংলাদেশি জাহাজগুলোতেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে।
সুন্দরবন পুলিশ জেলার সুপার কোটেশ্বর রাও নালাভাট বলেন, আগেও উপকূলবর্তী এলাকায় পুলিশের নজরদারি চলত। এখন বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। দু’বেলা নদী ও স্থলপথে পুলিশের টহল বৃদ্ধি পেয়েছে। নাকা চেকিং হচ্ছে। চলছে তল্লাশিও।
উত্তর ২৪ পরগনাতেও উপকূল এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তা বেড়েছে জল ও স্থলসীমান্তে। জল, ভূমি ও আকাশে অত্যাধুনিক ইজ়রাইল রাডারের মাধ্যমে নজরদারি চালাচ্ছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
ইতোমধ্যে ভারতীয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের আকাশ ব্যবহার করে ভারতকে আক্রমণ করতে পারে সশস্ত্র সংগঠনগুলো। ফলে সুরক্ষা বাড়াতে বিএসএফের তৎপরতা শুরু হয়েছে। বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর থেকে হিঙ্গলগঞ্জের হেমনগর কোস্টাল থানা পর্যন্ত ৯৪ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। তার মধ্যে ৫০ কিলোমিটার জলসীমান্ত। স্থলসীমান্ত ৪৪ কিলোমিটার। সীমান্ত সুরক্ষায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর।