গোপালগঞ্জে ঋণের সুদের চাপে শ্রমিকের মৃত্যু?
Published: 1st, May 2025 GMT
গোপালগঞ্জের সদর উপজেলায় কমল বিশ্বাস (৫০) নামে এক নির্মাণ শ্রমিক আকস্মিক অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন। তার পরিবার থেকে দাবি করা হয়েছে, মহাজনের কাছ থেকে নেওয়া ঋণ ও সুদের টাকা পরিশোধ নিয়ে মানসিক চাপ থেকে হার্ট অ্যাটাক করে তার মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকালে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার সাতপাড় ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হওয়ায় গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মীর মোহাম্মাদ সাজেদুর রহমান ও বৌলতলী তদন্ত কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ আফজাল হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আরো পড়ুন:
নোয়াখালীর মাদরাসায় শিক্ষার্থীর মৃত্যু, পরিবারের দাবি হত্যা
সাভারে পোশাক শ্রমিককে পুড়িয়ে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সকালে কমল বিশ্বাস বাড়ি থেকে মাঠে যাওয়ার জন্য বের হন। কিছুদূর যাওয়ার পর পুকুরপাড়ে আকস্মিক অসুস্থ হয়ে পড়েন। ধরাধরি করে তাকে বাড়ি আনা হয়। কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।
মৃত কমল বিশ্বাসের স্ত্রী রীনা বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমার স্বামী এবং আমি ৩০০ টাকার ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে প্রতিবেশী বিধান ভক্তের স্ত্রী বীণা ভক্তের কাছ থেকে ২০২০ সালে মাসিক শতকরা ৩ টাকা সুদে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা নিই। এরই মধ্যে আমরা সুদ বাবদ ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছি। এরপরও বীণা ভক্ত আমাদের কাছে সুদ-আসল মিলে সাড়ে ৪ লাখ টাকা দাবি করেন। আমরা সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিতে রাজি হই। গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাতে বীণা ভক্তকে সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়ে স্ট্যাম্প ফেরত চাই। এ সময় বীণা ভক্ত আমাদের কাছে আরো ১ লাখ টাকা দাবি করেন এবং বলেন, বাকি ১ লাখ টাকা না দিলে স্ট্যাম্প ফেরত দেবেন না। ওই স্ট্যাম্প দিয়ে আমার স্বামী ও আমার নামে মামলা করে টাকা আদায় করার হুমকি দেন এবং অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘বীণা ভক্তের খারাপ আচরণ ও দেনা পরিশোধ করতে না পারায় আমার স্বামী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। সারা রাত চিন্তায় হা-হুতাশ করেন। বীণা ভক্তের সুদের টাকার চাপ সইতে না পেরে হার্ট অ্যাটাক করে আমার স্বামী মারা গেছেন।’’ তিনি বীণা ভক্তের শাস্তি দাবি করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত বীণা ভক্ত বলেন, ‘‘আমি কোমল বিশ্বাসের কাছে সুদ-আসল মিলে সাড়ে ৪ লাখ টাকা পাই। টাকা দেওয়ার কথা হয়েছিল, টাকা দেননি। তাই আমি স্ট্যাম্পও দেইনি। কোমলকে আমি গালাগাল করিনি বা খারাপ আচরণ করিনি।’’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কৌশিক কীর্ত্তনীয়া জানান, কোমল বিশ্বাসের মরদেহ ময়নাতদন্ত করতে পাঠানো হয়েছে। তিনি প্রশাসনের কাছে তদন্ত করে কোমল বিশ্বাসের মৃত্যুর সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন, যাতে আর কোনো ব্যক্তি সুদ ব্যবসার জালে জড়িয়ে প্রাণ না হারান।
গোপালগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোহাম্মাদ সাজেদুর রহমান বলেন, ‘‘মৃত কোমল বিশ্বাসের পরিবারের বর্ণনা অনুযায়ী জানতে পারি, তিনি প্রতিবেশী বীণা ভক্তের কাছে সুদের দেনা ছিলেন। টাকা দেওয়ার পরও স্ট্যাম্প ফেরত না পেয়ে মানসিক টেনশনে হার্ট অ্যাটাক করে মারা গেছেন। আমরা মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মরদেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছি। প্রতিবেদন হাতে পেলে সেই অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/বাদল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য আম র স ব ম গ প লগঞ জ তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
যে ৬টি সীমারেখা একজন পুরুষকে নারীর কাছে আকর্ষণীয় করে তোলে
১. নিজেকে সহজলভ্য না করা
যে পুরুষ ফোনে মেসেজ পেলেই সব কাজ ফেলে উত্তর দেন না, ফোন বেজে উঠলেই অস্থির হয়ে পড়েন না—নারীরা স্বাভাবিকভাবেই তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হন। কারণ, এতে তাঁরা ভাবেন, এই মানুষটা আলাদা।
একজন পুরুষ, যিনি কাউকে ভালোবাসলেও নিজের জগৎ ভুলে যান না, তিনি নারীদের কাছে ভিন্ন রকম। এতে নারী বুঝতে পারেন, এই পুরুষটি কারও মনোযোগ পাওয়ার জন্য ছোটেন না, বরং নিজের সময় ও জীবনকে গুরুত্ব দেন। আর যা সহজে পাওয়া যায় না, সেটাই হয়ে ওঠে সবচেয়ে আকর্ষণীয়।
আমাদের সমাজে যেখানে অনেকে মনে করেন, ২৪ ঘণ্টা অনলাইনে থাকাই ভালোবাসার প্রমাণ, সেখানে এ ধরনের পুরুষ হন ব্যতিক্রম। তিনি তাঁর প্রতিটি মুহূর্ত অন্যের জন্য উন্মুক্ত রাখেন না; কারণ, তাঁর সময় দখল করে রেখেছে তাঁর লক্ষ্য, কাজ ও তাঁর জীবন। এই সামান্য দূরত্বই জন্ম দেয় গভীর আকর্ষণের।
২. আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ‘না’ বলাএকজন নারী যখন কাউকে সত্যিকার অর্থে পছন্দ করেন, তিনি শুধু সুন্দর চেহারা দেখেন না। তিনি খোঁজেন এমন একজনকে, যিনি নিজের সীমারেখা সম্পর্কে সচেতন এবং কারও মন রক্ষার জন্য নিজের অবস্থান থেকে সরে যান না। যিনি সোজাসাপটা বলেন, ‘আমি যেতে পারব না’ বা ‘আমি কাজটা করতে পারব না’।
আবার ভদ্রতা দেখিয়ে বলেন না, ‘আশা করি কিছু মনে করবেন না।’ যে পুরুষ দুঃখ প্রকাশ না করে এবং অপরাধবোধ ছাড়াই ‘না’ বলতে পারেন, তিনি নারীদের চোখে হয়ে ওঠেন সম্মানের। কারণ, এতে নারী বুঝতে পারেন, এই মানুষটির আত্মমর্যাদা আছে, নিজের সময়কে গুরুত্ব দেন।
এ রকম পুরুষ পাওয়া সহজ নয়। আর যা সহজ নয়, তা–ই সবচেয়ে বেশি টানে। কারণ, নারী খোঁজেন এমন কাউকে, যাঁকে তিনি শুধু ভালোবাসবেন না, শ্রদ্ধাও করবেন।
৩. নিজেকে অসম্মানিত হতে না দেওয়াকখনো কখনো অসম্মান করা হয় ঠাট্টার ছলে, কটাক্ষ করে। বেশির ভাগ পুরুষ এমন মুহূর্তে চুপ করে থাকেন, যাতে সহকর্মী বা পরিচিতজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি না হয়। কিন্তু একজন আত্মমর্যাদাবান পুরুষ তা করেন না। তিনি রেগে না গিয়ে, অন্যকে অপমান না করেও শান্ত গলায় বলেন, ‘আমি এ ধরনের আচরণ বা ব্যবহার মেনে নিই না।’
এই স্বচ্ছ ও দৃঢ় অবস্থান নারীদের মনে তৈরি করে ভরসা, নিরাপত্তা আর সম্মানের অনুভব। কারণ, তাঁরা বুঝে যান, যে পুরুষ নিজের সম্মান রক্ষা করতে জানেন, তিনি অন্যের সম্মান রক্ষায় পিছপা হবেন না।
এ ধরনের পুরুষ তাই নারীদের চোখে হয়ে ওঠেন আরও আকর্ষণীয়; শুধু তার কথার জন্য নয়, তাঁর স্থির ও সাহসী উপস্থিতির জন্য।
আরও পড়ুনকিডনি ভালো রাখতে যে ৩টি খাবার খাবেন২৮ জুলাই ২০২৫৪. চট করে প্রতিক্রিয়া না দেখানোঅনেক সময় নারীরা পুরুষকে ছোট ছোট পরীক্ষায় ফেলেন, তবে সেটা কিন্তু বেকায়দায় ফেলার জন্য নয়, বরং অবচেতনভাবে একজন সঙ্গীর ভেতরে স্থিরতা ও ভরসা খোঁজার জন্য।
তাঁরা হয়তো খোঁচা দেন, রসিকতা করেন, কিংবা হালকা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন, এটা দেখার জন্য যে পুরুষটি চাপের মুখে কতটা স্থির থাকতে পারেন।
বেশির ভাগ পুরুষ এসব মুহূর্তে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখান; রেগে যান, তর্কে জড়ান বা ব্যাখ্যা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু যেসব পুরুষ শান্ত থাকেন, একটুখানি হাসেন কিংবা কিছুই না বলে নিজের ভেতরের ভারসাম্য ধরে রাখেন, তাঁরা সেই মুহূর্তেই অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে ওঠেন।
এ ধরনের পুরুষকে তখন নারী আর সাধারণ কেউ মনে করেন না। বরং তিনি হয়ে ওঠেন এক দৃঢ় পুরুষ। আর তাঁদের উপেক্ষা করা যায় না। তাঁদের ভেতরের শক্তি, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং স্থিরতা নারীদের মনে আনে একধরনের নিরাপত্তা। নারীরা মনে করেন, তাঁরা শুধু পরিস্থিতি সামলাতে জানেন না, তার পাশে দাঁড়ানোও যায় নিশ্চিন্তে।
৫. নীরব আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদাআত্মবিশ্বাস, স্থিরতা ও ভেতরের শক্তি—সব মিলিয়ে আত্মমর্যাদা একজন পুরুষকে পছন্দ করার অন্যতম কারণ। যে পুরুষ অল্প কথায় নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেন, অযথা ব্যাখ্যা দেন না এবং সিদ্ধান্তে দৃঢ় থাকেন, নারীদের কাছে তিনিই হয়ে ওঠেন আলাদা।
যেমন তিনি সহজভাবে বলেন, ‘আমি যেতে পারব না, পরে দেখা হবে।’ এতে থাকে না দুঃখ প্রকাশ, থাকে না বাড়তি ব্যাখ্যা। এতে নারী বুঝতে পারেন, এই পুরুষ নিজেকে বোঝেন এবং অন্যের মতামত দিয়ে নিজের পথ বদলান না।
এ ধরনের পুরুষদের আচরণে থাকে একরকম শান্ত আত্মবিশ্বাস। তাঁরা কম কথা বলেন, কিন্তু যা বলেন, তা গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি তাঁর নীরবতাও অর্থবহ হয়ে ওঠে। নারীরা এসব পুরুষের মধ্যে খুঁজে পান ভরসা, যা শুধু কথায় নয়, আচরণেই ফুটে ওঠে। তাই নারীদের চোখে এই নিঃশব্দ আত্মমর্যাদা হয়ে ওঠে গভীর আকর্ষণের উৎস।
আরও পড়ুনহাতিরঝিলের রাস্তার গর্তে অটোরিকশা, দুজন আহত এবং একটি টুইস্ট১৬ ঘণ্টা আগে৬. লক্ষ্যে অটল থাকাএকজন পুরুষ সুদর্শন হলেই যে একজন নারী তাঁকে পছন্দ করবেন বা ভালোবাসবেন, এমনটা নয়। কারণ, একজন নারী এমন পুরুষকে ভালোবাসেন, যাঁর নিজের লক্ষ্য আছে। পাশাপাশি নিজের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেন।
একজন নারী এমন কাউকে চান না, যিনি তাঁকেই (ওই নারীকে) নিজের পুরো জগৎ বানিয়ে ফেলেন। বরং এমন পুরুষকে ভালোবাসেন, যাঁর পাশে দাঁড়িয়ে নিজেও এগিয়ে যাওয়া যায়। যাঁকে সমর্থন করা যায়, যাঁর স্বপ্নে অংশ নেওয়া যায়।
সেই পুরুষ শুধু একজন সঙ্গী নন, বরং পূর্ণাঙ্গ এক মানুষ। যে পুরুষের সঙ্গে জীবন ভাগ করে নেওয়া যায় আত্মবিশ্বাস আর সম্মানের সঙ্গে। এই ভরসাপূর্ণ, আত্মবিশ্বাসী, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে অটল পুরুষই একজন নারীর কাছে হয়ে ওঠেন সত্যিকার অর্থে পছন্দের।
সূত্র: মিডিয়াম
আরও পড়ুনজিমে কেন হার্ট অ্যাটাক হয়১৪ ঘণ্টা আগে