আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী নৃত্যের অনুষ্ঠান। গতকাল ৩০ এপ্রিল বিকেল পাঁচটায় জাতীয় নাট্যশালায় সমাপনী দিনের আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ‘সেমি ক্ল্যাসিক্যাল’ নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘নৃত্যায়ন’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন মনিরা পারভীন। নৃত্যদল ‘কল্পতরু’ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘অঞ্জলি লহ মোর’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন সম্রাট দত্ত ও নির্দেশনা দিয়েছেন লুবনা মরিয়ম। অমিত চৌধুরীর পরিচালনায় সমবেত নৃত্য ‘বিপুল তরঙ্গ, নিখিল’ পরিবেশন করে কায়া আশ্রম। বাংলাদেশ লোক সাংস্কৃতিক সংসদ ‘লোক আঙ্গিকে নৃত্য’ পরিবেশন করে, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন মো.

ইমদাদুল হক।

ওয়ার্দা রিহাবের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য ‘ইন্সট্রুমেন্টাল’ পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘ধৃতি নর্তনালয়’। কত্থক নৃত্য সম্প্রদায় পরিবেশন করে ‘কত্থক (তারানা)’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সাজু আহমেদ এবং পুষ্পাঞ্জলি নৃত্যকলা কেন্দ্র পরিবেশন করে ‘দাঁড়ালে দুয়ারে মোর’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন কস্তুরী মুখার্জী। লিখন রায়ের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য ‘বাংলাদেশের ঢোল’ পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘নৃত্যকথা’।

ধ্রুপদি নৃত্যালয় পরিবেশন করে ‘কত্থক আঙ্গিকে নৃত্য’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন স্নাতা শাহরিন। সমবেত নৃত্য ‘ও পৃথিবী এবার এসে’ পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘নৃত্যাক্ষ’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সালমা বেগম মুন্নি। সোহেল রহমানের পরিচালনায় শিখর কালচারাল অর্গানাইজেশন পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘চাঁদ উঠেছে ঐ’।  

গোলাম মোস্তফা ববির পরিচালনায় নৃত্যসংগঠন ‘নৃত্যবৃত্তি’ পরিবেশন করে ‘ভরতনাট্যম (বর্ণম)’ এবং নৃত্যদল ‘নাচঘর’ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘গান গাই আমার মনরে বুঝাই’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন আইরিন পারভীন। জিনিয়া জ্যোৎস্নার পরিচালনায় জিনিয়া নৃত্যকলা একাডেমি পরিবেশন করে ‘লোক আঙ্গিকে নৃত্য’। আকৃতি একাডেমি পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘আয় বৃষ্টি ঝেপে’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন শহীদুল ইসলাম বাবু।

তামান্না রহমানের পরিচালনায় নৃত্যম নৃত্যশীলন কেন্দ্র পরিবেশন করে ‘সেমি ক্ল্যাসিক্যাল নৃত্য’ এবং ‘বন্ধু বিনে প্রাণ বাঁচে না’ গানের সঙ্গে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘আরাধনা’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন প্রিয়াংকা সাহা। ‘কত্থক (তারানা, তাল-ত্রিতাল)’ পরিবেশন করে পরম্পরা নৃত্যালয়, নৃত্য পরিচালনা করেছেন মো. মাসুম হোসাইন।

মৈত্রী সরকারের পরিচালনায় সমবেত নৃত্য ‘নাচে শ্যাম রাই’ পরিবেশন করে নৃত্যসংগঠন ‘স্বপ্ন বিকাশ কলাকেন্দ্র’ এবং নৃত্যসংগঠন ‘পরশমণি কলা কেন্দ্র’ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘মাঠের সবুজ থেকে’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন আমিরুল ইসলাম।

সমবেত নৃত্য ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে’ পরিবেশন করে নৃত্যসংগঠন ‘নৃত্যছন্দ’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন বেনজির সালাম। ঝংকার ললিতকলা একাডেমি পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘ওর মোর নাইওর না যাইমু’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন ফাতেমা কাশেম। আনিসুর ইসলাম হিরোর পরিচালনায় ‘দারুণ অগ্নিবাণে’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে সৃষ্টি কালচারাল সেন্টার।

নৃত্যদল ‘স্পন্দন’ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘দাও হেলানী দিয়ে’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন অনিক বোস। ‘এই দেশ আমার’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যকল্প পারফর্মিং আর্টস। হেনা হোসেনের পরিচালনায় ‘ফাগুনের মোহনায়’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যদল ‘অভিনয়া’।

অনির্বাণ একাডেমি পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘মিলন হবে কত দিনে’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন জামান পারভেজ। নূরে আলম চন্দনের পরিচালনায় বকুল নৃত্যালয়ের নৃত্যশিল্পীবৃন্দ পরিবেশন করে সমবেত নৃত্য ‘বাজেরে বাজে ঢোল আর ঢাক’।  
জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুই দিনব্যাপী নৃত্যের অনুষ্ঠানমালা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন ত যদল কর ছ ন এক ড ম অন ষ ঠ

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ চলবে: হামাস

স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়ার প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হামাস। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া এক ঘোষণাপত্রের অস্ত্র ত্যাগের আহ্বানের জবাবে সংগঠনটি এই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

বৃহস্পতিবার হামাসের সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দখলদারির অবসান এবং জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন ও সম্পূর্ণ সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত প্রতিরোধ থামবে না তারা।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের সদর দপ্তর থেকে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছিল, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধে হামাসকে (এই উপত্যকায়) তার শাসনের অবশ্যই অবসান ঘটাতে হবে এবং আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ ও সমর্থনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে। সার্বভৌম ও স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যের সঙ্গে এটি সংগতিপূর্ণ।’

সৌদি আরব, কাতার, ফ্রান্স ও মিসরসহ ১৭টি দেশ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লিগ ঘোষণাপত্রটি সমর্থন করেছে। এটি ‘দ্য নিউইয়র্ক’ ঘোষণাপত্র হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

বৃহস্পতিবার আলাদা এক বিবৃতিতে প্রতি শুক্রবার, শনিবার ও রোববার বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও তাদের মিত্র দেশগুলোর দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভ করার আহ্বান জানিয়েছে হামাস। ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

অনাহারে মৃত্যু ১৫৪

গাজায় কর্মরত চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, উপত্যকাটিতে অনাহারে আরও দুই শিশু এবং এক তরুণ মারা গেছে। এ নিয়ে সেখানে অনাহারে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৫৪ জনে। তাদের মধ্যে শিশু ৮৯টি।

গাজায় প্রায় ২১ লাখ মানুষের বসবাস। উপত্যকাটিতে গত মার্চ থেকে নতুন করে অবরোধ শুরু করে ইসরায়েল। ফলে সেখানে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাক প্রবেশ করতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সম্প্রতি কিছুদিন ধরে গাজায় সীমিত পরিমাণে ত্রাণ প্রবেশ করতে দিচ্ছে ইসরায়েল। এই ত্রাণ প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত নগণ্য।

ত্রাণ নিতে প্রাণহানি ১৩৭৩

জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, গাজায় গত মে মাস থেকে এখন পর্যন্ত ত্রাণ আনতে গিয়ে মোট ১ হাজার ৩৭৩ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে ৮৫৯ জন মারা গেছেন বিতর্কিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে। গত মে মাসের শেষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি ইসরায়েলি সেনাদের সহায়তায় গাজার কয়েকটি স্থানে ত্রাণ দিচ্ছে।

বাকি ৫১৪ জন মারা গেছেন ত্রাণবাহী ট্রাকের আশপাশে। তাঁরা ত্রাণের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। অধিকাংশই ইসরায়েলের সেনাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার সকালে গাজায় অন্তত আরও ৪২ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ত্রাণ আনতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন ১৫ জন। এই নিয়ে প্রায় ২২ মাসের সংঘাতে গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের হামলা নিহত হয়েছেন অন্তত ৬০ হাজার ৩৩২ জন।

গাজায় স্টিভ উইটকফ

শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ গাজা সফর করেছেন। তিনি উপত্যকাটির রাফা এলাকায় জিএইচএফের একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রও ঘুরে দেখেন। এ সময় ইসরায়েলে নিয়োজিত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মাইক হুকাবি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাঁরা পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাজায় ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে উইটকফ নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। আগের দিন তিনি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। উইটকফ বলেছেন, ‘মাঠের পরিস্থিতি বুঝতে ও তথ্য সংগ্রহ করতে আমরা গাজায় গিয়েছিলাম। গাজার মানবিক পরিস্থিতির একটি স্পষ্ট ধারণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে পৌঁছে দেওয়াই আমার উদ্দেশ্য, যাতে করে গাজাবাসীর জন্য খাদ্য ও চিকিৎসা সহায়তা পৌঁছাতে পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়তা করা যায়।’

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত ও আবাসন খাতের সাবেক আইনজীবী উইটকফের আন্তর্জাতিক নীতি ও মানবিক সহায়তা-সংক্রান্ত কোনো অভিজ্ঞতা নেই। তা সত্ত্বেও তিনি মধ্যপ্রাচ্যের সংকট সমাধানের চেষ্টার পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধেও কূটনীতি চালাচ্ছেন। এরই মধ্যে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ