মহান মে দিবস উপলক্ষে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিশাল চা-শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার রাজঘাট চা-বাগানের নাট মন্দির প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালি এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশ শেষে চা-শ্রমিকদের ভূমির অধিকার বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।

শ্রমিক সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.

ইসলাম উদ্দিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম, জেমস ফিনলে চা কোম্পানির চিফ অপারেটিং অফিসার তাহসিন আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি পংকজ কথা কন্দ, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল, রাজঘাট চা-বাগানের ডিজিএম মো. নুরু নবী প্রমুখ।

এর আগে বালিশিরা ভ্যালির বিভিন্ন জায়গা থেকে বাস, ট্রাক, ট্রাক্টরসহ বিভিন্ন পরিবহনে চেপে চা-শ্রমিকেরা উপজেলার রাজঘাট চা-বাগানে আসতে শুরু করেন। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাজারো চা-শ্রমিকের ভিড়ে জমে ওঠে রাজঘাট চা-বাগান। দুপুর ১২টায় সহস্রাধিক মানুষের অংশগ্রহণে শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি নাটমণ্ডপ থেকে বের হয়ে রাজঘাট চা-বাগানের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে আবারও অনুষ্ঠানস্থলে গিয়ে শেষ হয়।

বালিশিরা ভ্যালির সভাপতি বিজয় হাজরা বলেন, ‘সমাবেশ ও র‌্যালি শেষে আমরা আমাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি।’

চা-শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে চা-শ্রমিকদের বসতভিটার মালিকানা ব্যবস্থা প্রণয়ন, সরকারি তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রিবার্ষিক নির্বাচন দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর করা, চা-শ্রমিকদের জীবন ধারণের জন্য ন্যূনতম দৈনিক মজুরি ৪০০ টাকা ধার্য করা, জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ চা-বাগানগুলো চালুর উদ্যোগ গ্রহণ, পাঁচটি জেলাজুড়ে বিদ্যমান ২১টি উপজেলা এলাকায় চা-শ্রমিক সন্তানদের জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং তাদের কর্মসংস্থান ও মেধাবিকাশের জন্য কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান/বিদ্যালয় নির্ধারিত স্থানে স্থাপন, শ্রম আইনে বিদ্যমান চা-শ্রমিকদের জন্য বৈষম্যমূলক বিধানগুলো সংশোধন, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় একটি ‘চা জনগোষ্ঠী শিল্পকলা একাডেমি’ স্থাপন, চা-শ্রমিক সন্তানদের প্রতিটি সরকারি প্রতিষ্ঠান/দপ্তর/বিভাগে যোগ্যতানুসারে চাকরিতে যোগদানের বিশেষ নির্দেশনা প্রণয়ন এবং ২০ মেকে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য সরক র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।

আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।

এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।

জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’

জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সংস্কার যেভাবে হলে ভালো হয়
  • জাফলংসহ দেশের পর্যটন উন্নয়নে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • পরিবেশবান্ধব পর্যটনে সমন্বিত মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
  • লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি