১ মে বিশ্ব শ্রম দিবস। শ্রম আর সৃজনশীলতা যেখানে একসূত্রে গাঁথা, সেদিনই জন্মেছিলেন বাংলা ও ভারতীয় উপমহাদেশের সংগীতজগতের এক অনন্য সাধক-মান্না দে। যিনি কেবল গায়ক নন, ছিলেন এক জীবন্ত সংগীতশিল্পী, যাঁর প্রতিটি সুর ছিল সাধনার মতো। এই দিনেই যেন আরও একবার ফিরে দেখা দরকার তাঁর জীবন, ভালোবাসা আর অপূর্ণ থেকে যাওয়া একটি চিরকথার গল্প।

গান নয়, জীবনের সাধক ছিলেন তিনি
১৯১৯ সালের ১ মে কলকাতার একটি বাঙালি পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন প্রবোধ চন্দ্র দে। সংগীতানুরাগী পরিবারে বেড়ে ওঠা, কাকা কৃষ্ণচন্দ্র দে ছিলেন তাঁর জীবনের প্রথম গুরু ও অনুপ্রেরণা। ডাকনাম ছিল ‘মান্না’, আর এই নামেই একদিন গানের আকাশে অমর হয়ে উঠলেন তিনি—মান্না দে। ছেলেবেলা থেকেই গান ছিল তাঁর নেশা, অথচ একই সঙ্গে তিনি ছিলেন ক্রীড়ানুরাগীও। ফুটবল, কুস্তি, এমনকি বক্সিংয়েও ছিলেন দারুণ দক্ষ। এমনকি পরিবারে অনেকেই চেয়েছিলেন, মান্না একদিন হবেন নামকরা আইনজীবী। কিন্তু তাঁর আত্মা তখন সুরের পথেই এগিয়ে যাচ্ছে। স্কুল-কলেজে সংগীত প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে নজর কেড়েছেন বারবার। কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজে পড়াকালীন তিনটি ভিন্ন বিভাগে আন্তকলেজ সংগীত প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়ে চমকে দিয়েছিলেন বিচারকদের। এখান থেকেই শুরু মান্না দের দীর্ঘ সংগীতজীবনের পথচলা, যা তাঁকে নিয়ে গেছে সারা ভারতের মানুষের হৃদয়ে। বাংলা-হিন্দি ছাড়াও গেয়েছেন মারাঠি, গুজরাটি, মালয়ালম, কন্নড়সহ বহু ভাষায়। ‘সবাই তো সুখী হতে চায়’, ‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা’, ‘জীবন খাতে কে পায়’ এমন গান শুধুই গান নয়, একেকটা জীবনের ভাষ্য হয়ে থেকেছে মানুষের মনে।

ভালোবাসার গল্পটাও যেন উপন্যাসের মতো
মান্না দের জীবনের সবচেয়ে মায়াময় অধ্যায় তাঁর প্রেম। ১৯৫০-এর দশকে একটি রবীন্দ্রজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে প্রথম দেখা হয় সুলোচনা কুমারনের সঙ্গে। অবাঙালি হয়েও সুলোচনার ছিল রবীন্দ্রসংগীতে গভীর অনুরাগ। সেদিন মঞ্চে একসঙ্গে গান গেয়েছিলেন মান্না দে ও সুলোচনা, ‘আমি তোমার সঙ্গে বেঁধেছি আমার প্রাণ, সুরেরও বাঁধনে।’ গান গাইতে গাইতেই গড়ে উঠেছিল সুরের সেই বন্ধন, যা পরে হয়ে ওঠে জীবনের বন্ধন। দুজনের মধ্যে তৈরি হয় ভালোবাসা, বিশ্বাস আর একে অপরের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। তবে এই সম্পর্ক মেনে নিতে চায়নি মান্না দের পরিবারের অনেকেই। তবু পাশে ছিলেন তাঁর মা মহামায়া, যিনি পুত্রের পাশে দাঁড়িয়ে সব বাধা অতিক্রম করতে সাহস দেন। ১৯৫৩ সালে মান্না দে ও সুলোচনার বিয়ে হয়। বিয়ের পরের জীবন ছিল সংগীত ও ভালোবাসায় ভরপুর। সুলোচনার অনুপ্রেরণাই মান্না দেকে অনেক নতুন গান করতে সাহস জুগিয়েছে, জীবনের বাঁকে বাঁকে থেকেছেন ছায়ার মতো।

১৯১৯ সালের ১ মে কলকাতার একটি বাঙালি পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন প্রবোধ চন্দ্র দে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জ বন জ বন র পর ব র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

শি জিনপিং ফোন করেছিলেন, ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের

শুল্ক আরোপ নিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাকে ফোন করেছিলেন বলে যে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তা প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। সোমবার বেইজিং জানিয়েছে, শি জিনপিং সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেননি। এমনকি দুই দেশের মধ্যে শুল্কযুদ্ধ মেটাতে কোনো আলোচনাও হচ্ছে না। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছে। খবর-সিএনএন

গত সপ্তাহে টাইম সাময়িকীকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, চীনের প্রেসিডেন্ট সি তাঁকে ফোন করেছেন। এ ঘটনায় চীন তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া না জানালেও আজ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দিয়েছে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমার জানামতে, সম্প্রতি দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে ফোনে কোনো কথা হয়নি। আমি আবারও স্পষ্ট করে বলতে চাই, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শুল্ক ইস্যু নিয়ে কোনো আলোচনা বা দর–কষাকষি চলছে না।’

গত শুক্রবার টাইম সাময়িকীতে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে সির প্রতি ইঙ্গিত করে ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি আমাকে ফোন করেছিলেন। আমি মনে করি না এটি তাঁর পক্ষ থেকে কোনো দুর্বলতার ইঙ্গিত।’

ট্রাম্প বারবার সি চিন পিংকে ‘বন্ধু’ বলে উল্লেখ করেছেন। তবে টাইম সাময়িকীকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চীনের নেতার সঙ্গে কথিত ফোনালাপের বিষয়বস্তু বা সময় সম্পর্কে কোনো নির্দিষ্ট তথ্য দেননি। এমনকি সিএনএন শুক্রবার জানতে চাইলেও তিনি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাননি।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে সিএনএনের সাংবাদিক অ্যালাইনা ট্রিনের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। তবে আমি তাঁর (সি চিন পিং) সঙ্গে অনেকবার কথা বলেছি।’

সর্বশেষ গত ১৭ জানুয়ারি ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক দিন আগে দুই নেতা ফোনে কথা বলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘একদিন দেখি পশুরমতো ঘরের কোণে বসে কাঁপছে ববি’
  • বিশ্বনেতাদের সতর্ক দৃষ্টির সামনেই ঘটছে গণহত্যা
  • প্রত্যন্ত গ্রামে ক্লিনিক খুলে ‘এমবিবিএস ডাক্তার’ পরিচয়ে চিকিৎসা, এক বছরের কারাদণ্ড
  • ‘শি জিনপিং ফোন করেছিলেন’ ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের
  • শি জিনপিং ফোন করেছিলেন, ট্রাম্পের এমন দাবি প্রত্যাখ্যান চীনের