নদীতে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাসের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শেষে চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট ক্রেতা ও বিক্রেতার হাঁকডাকে সরগরম হওয়ার কথা থাকলেও তেমনটি দেখা যায়নি। সেখানে সীমিত পরিসরে ইলিশ বেচাকেনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) দিনব্যাপী বড়স্টেশন মাছঘাটে এ অবস্থা দেখা যায়। জেলার পদ্মা ও মেঘনা নদীতে অর্ধ লাখ জেলে মাছ ধরতে নামলেও মাত্র কয়েক কেজি করে ইলিশ হাতে তাদের হতাশ হয়ে ফিরতে হয়েছে।

ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস মেঘনা-তেঁতুলিয়া নদীর ১৯০ কিলোমিটারে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ছিল। যা বুধবার (৩০ এপ্রিল) মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। আবার মাছের বংশবিস্তার, বেড়ে ওঠা ও টেকসই আহরণের জন্য বঙ্গোপসাগরে গত ১৪ এপ্রিল থেকে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। ৫৮ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা ১১ জুন পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। 

আরো পড়ুন:

জেলি পুশকৃত ২১০ কেজি চিংড়ি উদ্ধার, লাখ টাকা জরিমানা

হবিগঞ্জে শুঁটকি উৎপাদনে ভাটা

দুপুরের দিকে আড়তদার সম্রাট বেপারী জানান, সকাল ৮টা হতে ঘাটে বেচাকেনা শুরু হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ৩-৪ মণের বেশি ইলিশ আসেনি। আর যা এসেছে, সবটাই স্থানীয় ইলিশ। এভাবে রাত ১০টা পর্যন্ত বেচাকেনা চলবে।

খুচরা বিক্রেতা ফারুক বেপারী জানান, ঘাটে ১ কেজি ওজনের ইলিশ ২২০০ টাকা, সাড়ে ৫শ’ গ্রামের টা ১৪৫০ টাকা, ১৩০০ গ্রামের টা ২৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।

ঘাটের খুচরা মাছ বিক্রেতা শরিফ শিকদার ও সবুজ খান জানান, চাহিদা অনুযায়ী ঘাটে ইলিশ না থাকায় দাম বেশি। ঘাট সরগরম হওয়া শুরু হলে দাম কিছুটা কমবে।  

পুরানবাজারের জেলে আলম বলেন, ‘‘অনেক আশা নিয়ে নদীতে নেমেছিলাম। কিন্তু তিনটা ইলিশ পেয়েছি। এগুলোর দাম দিয়ে ট্রলারের জ্বালানির খরচও উঠবে না।’’  

এ বিষয়ে চাঁদপুর মৎস্য সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত জানান, এখন ইলিশের মৌসুম নয়। তার ওপর সাগরে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা চলছে। বৃষ্টি-বাদলও কম। জুন, জুলাইতে ঘাটে বেশি পরিমাণ ইলিশ আসতে পারে। ঘাটের প্রায় ১ হাজার লোক সেই আশা আছে। 

ঢাকা/জয়/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

৫৮ দিনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও সরগরম বাগেরহাটের মৎস্য আড়ত

ভোরের আলো ফোটার আগেই বাগেরহাটের কেবি বাজারে হইচই। সাগরে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় মাছ ধরে ফিরেছেন জেলেরা। আজ শুক্রবার ভোরে দুটি ট্রলার একসঙ্গে মাছ নিয়ে ঘাটে ভিড়তেই সরব হয়ে ওঠে এলাকার প্রধান সামুদ্রিক মৎস্য অবতরণকেন্দ্রটি।

নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথম দিনেই বাজারে ভিড় করেন শত শত মৎস্য ব্যবসায়ী, শ্রমিক ও আড়তদার। শুরু হয় ক্রেতা-বিক্রেতার হাঁকডাক। মাছের সরবরাহ কম হলেও চাহিদা ছিল অনেক বেশি।

কেবি মৎস্য অবতরণকেন্দ্রটি শহরের দড়াটানা নদীর তীরের বাসাবাটি এলাকায়। জেলেরা সাগর থেকে ধরা মাছ নিয়ে সরাসরি ঘাটে আসেন। এখান থেকেই বিভিন্ন জেলার ব্যবসায়ীরা মাছ কিনে নিয়ে যান।

ভোরে বাজারে দেখা যায়, ঘাটে ভিড়েছে দুটি ট্রলার। সেখান থেকে শ্রমিকেরা ঝুড়িতে করে মাছ তুলছেন। ইলিশ, রুপচাঁদা, ভেটকি, লইট্টা, ছুরি, জাবা, ঢেলা, চ্যালাসহ নানা ধরনের সামুদ্রিক মাছ উঠেছে বাজারে। তবে বাজারে যে পরিমাণ মাছ এসেছে, তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম। ফলে দাম ছিল চড়া।

সাগর থেকে মাছ ধরে ফেরা জেলে রুহুল আমিন বলেন, ‘সাগরে যাওয়ার পরে কয়েকবার জাল ফেলতে পেরেছি। অল্প কিছু ইলিশ পেয়েছি, বাকি সব আজেবাজে মাছ। পরে ট্রলারে সমস্যা হওয়ার কারণে চলে এসেছি।’

মোরেলগঞ্জ থেকে মাছ কিনতে আসা তৈয়ব মুন্সি বলেন, ‘অনেক দিন পর এলাম। দাম বেশি, তবু কিছু মাছ কিনছি। এখন এলাকায় বিক্রি করতে পারলে ভালো হয়।’

আরও পড়ুনসাগরে মাছ ধরায় ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ আজ, সুফল পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন১১ জুন ২০২৫

বাজারে ইলিশের দাম ছিল আকাশছোঁয়া। ২০০ থেকে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, ৫০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ইলিশ ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং ৯০০ গ্রাম থেকে এক কেজি ওজনের ইলিশ ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। রুপচাঁদা বিক্রি হয়েছে কেজিপ্রতি ৫০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এ ছাড়া কঙ্কণ, তুলারডাটি, ঢেলা, চ্যালা, ভেটকি, লইট্টা, ছুরি, জাবাসহ নানা মাছ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১ হাজার টাকা কেজিতে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধীরে ধীরে ট্রলারের সংখ্যা ও মাছের পরিমাণ বাড়লে দামও স্বাভাবিক হবে।

কেবি বাজারে মাছ বিক্রি হয় সাধারণত ‘পণ’ হিসেবে। এক পোণে ৮০টি মাছ থাকে। আকার অনুযায়ী প্রতি পোণের দাম নির্ধারিত হয়। ক্রেতারা ঢাকের শব্দে বিট দিয়ে মাছ কেনেন।

কেবি বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, অবরোধের পর আজই প্রথম বঙ্গোপসাগর থেকে ট্রলার এসেছে। তেমন মাছ পায়নি। তবে বিভিন্ন স্থান থেকে অনেক পাইকার আসছেন। যার কারণে দাম কিছুটা বেশি। তবে মাছ বেশি হলে দাম কিছুটা কমে আসবে।

উল্লেখ্য, মাছের প্রজনন ও টেকসই আহরণ নিশ্চিত করতে বঙ্গোপসাগরে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে সরকার। এ সময় সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন ও সংরক্ষণ নিষিদ্ধ ছিল। এর আগে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ছিল ৬৫ দিন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরগরম বাগেরহাটের মাছবাজার
  • আমের মৌসুমে সরগরম ফলমুন্ডী
  • সাগরে ইলিশ মিলছে কম, চড়া দাম আড়তে
  • ৫৮ দিনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও সরগরম বাগেরহাটের মৎস্য আড়ত