আইপিএলের শেষ পর্বে এসে বড় এক ধাক্কা খেল পাঞ্জাব কিংস। দলটির অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এবার আর মাঠে নামতে পারছেন না। আঙুলের চোট ছিটকে দিলো তাকে আসরের বাকি ম্যাচগুলো থেকে।

চলতি আসরে বল কিংবা ব্যাট— দুটোতেই খুব একটা অবদান রাখতে পারেননি অস্ট্রেলিয়ান এই তারকা। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচের আগের অনুশীলনে আঙুলে ব্যথা পান ম্যাক্সওয়েল। যার জেরেই শেষ পর্যন্ত বাদ পড়তে হয় গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচগুলো থেকে।

চেন্নাইয়ের বিপক্ষে ম্যাচে তার অনুপস্থিতিতে মাঠে নামেন তরুণ সূর্যাংশ শেড়গে। সেই ম্যাচের পর পাঞ্জাবের অপর অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিস বলেন, “প্রথমে মনে হয়নি চোটটা এতটা সিরিয়াস, কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে অবস্থা খারাপ হয়েছে। স্ক্যান রিপোর্ট আশানুরূপ না হওয়ায় ধারণা করা হচ্ছে ম্যাক্সির আইপিএল শেষ।’’

আরো পড়ুন:

নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ২০২৬: সূচি ও ভেন্যু ঘোষণা

চেন্নাইয়ের ঘরে বিষাদের বাজনা, ধোনির চোখে বিদায়ের আভা

পাঞ্জাবের প্রধান কোচ রিকি পন্টিংও ম্যাক্সওয়েলের অনুপস্থিতি মেনে নিয়েছেন। তবে তার জায়গা পূরণে উপযুক্ত কাউকে খুঁজে পেতে কিছুটা সংকটে রয়েছেন বলেও জানান পন্টিং।

তিনি বলেন, “আমাদের সামনে এখন ১২তম ম্যাচ। এরপর দুটি খেলা হাতে থাকবে। দলের মধ্য থেকেই বিকল্প খুঁজে নিতে হবে। ওমরজাই বা অ্যারন হার্ডির মতো ক্রিকেটার এখনো কোনো ম্যাচ খেলেনি। তাদের দিকেও নজর দেওয়া যেতে পারে।’’

তবে কেবল বিদেশি নয়, ম্যাক্সওয়েলের স্থলাভিষিক্ত হিসেবে দেশি ক্রিকেটারদের মধ্য থেকেও কাউকে সুযোগ দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন পন্টিং। তার ভাষায়, “আমাদের হাতে এখন খুব বেশি অপশন নেই। ভারতীয় তরুণদের মধ্য থেকেই কাউকে পরখ করে দেখা যেতে পারে।”

পাঞ্জাব কিংসের প্লে-অফের লড়াই এখনো বেঁচে আছে। তবে ম্যাক্সওয়েলের মতো অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারের অভাব নিশ্চিতভাবেই দলের ভারসাম্যে প্রভাব ফেলতে পারে। এখন দেখার বিষয়, কে হন তার বদলি এবং তিনি কতটা কার্যকর প্রমাণিত হন আসরের বাকি লড়াইয়ে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম য ক সওয় ল

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ