স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা মামুন হত্যার বিচার চাইলেন আব্বাস
Published: 25th, February 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, শেখ হাসিনা তো পনেরো বছর ক্ষমতায় ছিল ভোট ছাড়া। আপনারাও থাকুন, আমরা না করবো না। কিন্তু মানুষ আপনাদের ছাড় দিবে না। আমরা গণতন্ত্র চাই, আমরা কথা বলতে চাই। দরকার হলে বলে দেন বাংলাদেশে আর নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। আপনারা সংস্কারের কথা বলে কান ঝালাপালা করে ফেললেন। কী সংস্কার করেছেন জানি না।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের মেট্রোহল মোড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশে অংশ নিয়ে একথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন,বিএনপিতে অসৎ লোকের কোন জায়গা নেই। ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক নেতা মামুনকে হত্যা করা হয়েছে গুলি করে কয়েকদিন আগে। আমি এ ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবী জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন,আপনারা সংস্কারের কথা বলে কান ঝালাপালা করে ফেললেন। কী সংস্কার করেছেন জানি না।
তিনি আরো বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা হচ্ছে। অনেকে বলে ওমুক ভাইকে সেখানে দেখতে চাই, ওখানে দেখতে চাই৷ বিএনপির কোন নেতাকর্মী যেন এসকল কথা না বলে। আমরা জেল খেটেছি, মামলা খেয়েছি এ নির্বাচনের জন্য নয়, জাতীয় নির্বাচনের জন্য। আমরা লড়াই করেছি গণতন্ত্রের জন্য। আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য লড়াই করিনি।
তিনি বলেন, এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছে এর পেছনে বিশাল ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তার একটাই কারণ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এটা হয়ে গেলে তাদের অনেক সুবিধা হয়। কারণ গ্রামে গঞ্জে অনেকের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে পায়ের তলায় মাটি আনতে চান।
আমরা জেনেছি বিডিআর হত্যা হয়েছিল বাইরের একদল প্রশিক্ষিত ও প্রাতিষ্ঠানিক লোকদের দিয়ে। তারা এদেশে থাকে না। তারা বিদেশ থেকে এসে আমার দেশের ৫৭ জন সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। তাদের বিচার হয়নি। যাদের বিচার হয়েছে তারা আসলে নির্দোষ। জেলে তাদের দেখে আমরা আমাদের অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। আমি তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই।
যারা জেলে আছে তাদের ব্যাপারে কোন কথা শুনতে চাই না। তারা বিগত পনেরো বছর ধরে জেলে পঁচে মরছে। তাদের কেন ছাড়া হচ্ছে না আমরা জানি না। আমরা চাই তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।
আমাদের দেশের অবস্থা খুব খারাপ। ডাকাতি, ছিনতাই বেড়ে গেছে৷ কারা করছে আপনারা জানেন। যারা বলে দিনের বেলা আমরা হাঁটতে না পারলে রাতে ওদের ঘুমোতে দিবো না। কারা বলে এ কথা দিল্লী বসে। যারা এদেশের সর্বনাশ করে ভারতে বসে আছে তারাই চক্রান্ত করছে কীভাবে এ দেশকে অশান্ত করা যায়।
এদেশের মানুষের ঐক্যকে আপনারা ভাঙতে পারবেন না। এদেশের মানুষ শান্তি চায়। মানুষ বাঁচতে চায়। আপনারা আমাদের রাতে শান্তিতে ঘুমোতে দিবেন না, লুটপাট করবেন, আগুন দিবেন বলেছেন আপনারা। চেষ্টা করে দেখুন, মানুষ আপনাদের এত সহজে ছেড়ে দিবে না।
এদেশের মানুষ এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা সবাই তাদের সমর্থন দিয়েছি। আমরা বলেছি এ সরকার ব্যার্থ হলে দেশ ব্যার্থ হয়ে যাবে। সুতরাং এ সরকারকে ব্যার্থ হতে দেয়া যাবে না। আমরা বলেছিলাম নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করবো, কিন্তু আজীবন তো অপেক্ষা করবো না।
একজন বলে বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া যাবেনা। আরেকজন বলে নির্বাচন যারা চায় তারা দেশের মঙ্গল চায় না। আরে সতেরো বছর কোথায় ছিলেন আপনি। সতেরো বছর আন্দোলন করেছি এই নির্বাচনের জন্য। জনগণ যাকে ভোট দিবে সেই সরকার গঠন করবে। তারা ধরেই নিয়েছে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। কারণ বিএনপি অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি দল। এ জনপ্রিয়তাকে ধ্বংস করতে একশ্রেনীর লোক মাঠে নেমেছে।
বিএনপির জনপ্রিয়তা দেখে কতিপয় ব্যাক্তি বিএনপি আওয়ামী লীগের মত হয়ে গেছে বলে। বিএনপিকে ভারতের দালাল বলে। বিএনপি কখনও ভারতের তাঁবেদারি করেনি। ভারতের তাঁবেদারি করলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আজ জীবিত থাকতেন।
তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগের আমলে নারায়ণগঞ্জে এসেছিলাম একটা মিটিংয়ে। সেদিন ভয়ে ভয়ে এসেছিলাম। তখন তো কারও জীবনের নিরাপত্তা ছিল না। আজ আমাকে সার্কিট হাউজে রেস্ট নিতে দিয়েছে। গত সতেরো বছর হোটেলে থাকতাম, ভয়ে ভয়ে থাকতাম। সেবার শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করেছিলাম। আজ মুক্ত অবস্থায় লাখো লোকের সামনে মিটিং করে গেলাম।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ব এনপ র ক ষমত য় আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব