গত ৬ মার্চ অনলাইনে সভা করে ফিফা কাউন্সিল। সেখানে উরুগুয়ের এক প্রতিনিধি অনেকটা অপ্রত্যাশিতভাবে ২০৩০ বিশ্বকাপ ৬৪ দল নিয়ে আয়োজনের প্রস্তাব দেন, যা শুনে সভার অনেকেই রীতিমতো তাজ্জব বনে যান। তাঁদেরই একজন উয়েফা সভাপতি আলেক্সান্দার সেফেরিন। সে দিনের সভার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফিফার এই সহসভাপতি।

সম্প্রতি সার্বিয়ার বেলগ্রেডে অনুষ্ঠিত হয়েছে উয়েফার বার্ষিক সাধারণ সভা। সেই সভার পর সংবাদ সম্মেলনে ৬৪ দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তাবের বিরোধিতা করে সেফেরিন বলেন, ‘আমি মনে করি এটা বাজে পরিকল্পনা। এই প্রস্তাব আপনাদের চেয়ে আমার কাছে বেশি বিস্ময়কর।’

শুধু উরুগুয়ের ওই প্রতিনিধিই নন, স্বয়ং ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোও ২০৩০ বিশ্বকাপ ৬৪ দল নিয়ে আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছেন। এ নিয়ে তাঁর যুক্তি, প্রতিযোগিতার পরিধি বিস্তৃত হলে ফিফা আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হবে। পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী খেলার উন্নয়নেও দলের সংখ্যা বাড়ানো দরকার।

ইনফান্তিনোর এমন যুক্তিকে সমর্থন না জানিয়ে উল্টো কড়া সমালোচনা করলেন সেফেরিন। ৪৮ দল নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় হবে ২০২৬ বিশ্বকাপ। পরের আসর বসবে মরক্কো, পর্তুগাল ও স্পেন। সেই আসরেই ৬৪ দলের বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে ভাবছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা।

সেফেরিন কিছুতেই এভাবে দল বাড়ানোর পক্ষে নন। তিনি বলেন, ৬৪ দলের বিশ্বকাপ ধারণাটা বাছাইপর্বের জন্যও সুখকর হবে না, ‘এটা বিশ্বকাপের জন্য ভালো ধারণা নয়। এমনকি আমাদের বাছাইপর্বের জন্যও ভালো ধারণা নয়। ’

২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজনের জটিলতা নিয়ে এমনিতেই আলোচনা হচ্ছে। তিনটি ভিন্ন মহাদেশে আয়োজিত হবে এই বিশ্বকাপ। মূল আয়োজক স্পেন, পর্তুগাল ও মরোক্কা হলেও সে বছর বিশ্বকাপের শতবছর পূর্তি উপলক্ষে উরুগুয়ে, আর্জেন্টিনা ও প্যারাগুয়েতে খেলা হবে একটি করে ম্যাচ। ১৯৩০ সালে বিশ্বকাপের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয় উরুগুয়েতে।

সেফেরিন ৬৪ দল নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজনের ধারণার উৎস নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেন, ‘এটা অদ্ভুত যে ফিফা কাউন্সিলে এই প্রস্তাব ওঠার আগে আমরা এ নিয়ে কিছুই জানতাম না। আমি জানি না, এটার উৎস কী।’

উয়েফা প্রধানের এমন সমালোচনার পর ফিফা শেষ পর্যন্ত নড়েচড়ে বসে কি না, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠাবে চীন

চীন জানিয়েছে, তারা ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর লক্ষ্য পূরণের পথে ঠিকঠাক রয়েছে। একই সঙ্গে দেশটি মহাকাশ অনুসন্ধানে নেতৃত্ব দেওয়ার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনের কাজ সম্পন্ন করার জন্য দ্রুত কাজ করছে। এরই মধ্যে চলমান অভিযানের জন্য পরবর্তী নভোচারী দলকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।

চীন মানববাহী মহাকাশ কর্মসূচির মুখপাত্র ঝাং জিংবো বলেন, বর্তমানে চাঁদে মানুষ পাঠানোর গবেষণা ও উন্নয়ন কাজের প্রতিটি কর্মসূচি ঠিকঠাক এগিয়ে চলেছে। লং মার্চ ১০ রকেট আর চাঁদে অবতরণের বিশেষ স্যুট ও অনুসন্ধানকারী যান এরই মধ্যে প্রায় প্রস্তুত। ২০৩০ সালের মধ্যে চীন চাঁদে মানুষ পাঠানোর নির্দিষ্ট লক্ষ্যে সুদৃঢ় অবস্থানে কাজ করছে।

চীন মহাকাশ অনুসন্ধান পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনের কাজ শেষ করতে দ্রুত কাজ করছে। এরই অংশ হিসেবে নতুন নভোচারী পাঠানো হচ্ছে। একেকটি দল ছয় মাসের জন্য স্টেশনের ভেতরে থেকে গবেষণা পরিচালনা করে। স্টেশনে অন্যদের সঙ্গে যোগ দেওয়া নতুন ক্রু সদস্যরা হলেন ঝাং লু, উ ফেই ও ঝাং হংঝাং।

গত ৩১ অক্টোবর রাত ১১টা ৪৪ মিনিটে জিউকুয়ান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে তিন নভোচারী যাত্রা করেন। নভোচারী ঝাং লু এর আগে শেনঝু ১৫ অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। নভোচারী উ ফেই ও ঝাং হংঝাংয়ের জন্য এটি মহাকাশে প্রথম যাত্রা হবে। এ যাত্রায় নভোচারীরা তাঁদের সঙ্গে দুটি পুরুষ ও দুটি স্ত্রীসহ চারটি ইঁদুরও নিয়ে যাবেন। তাঁরা প্রাণীর ওপর ওজনহীনতা ও সীমাবদ্ধ পরিবেশে থাকার প্রভাব নিয়ে গবেষণা করবেন।

চীনের মহাকাশ কর্মসূচির সঙ্গে পিপলস লিবারেশন আর্মির সরাসরি যোগসূত্রের কারণে যুক্তরাষ্ট্র চীনকে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে বাদ দেওয়ার পর চীন তিয়ানগং স্টেশন তৈরির জন্য কাজ করছে। এই স্টেশন ভবিষ্যতে চাঁদে চীনা নভোচারী ও মানুষের ক্যাম্প তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। চীন অনেকটা একাই নিজের মতো করে মহাকাশ অনুসন্ধানে কাজ করছে। অন্যদিকে নাসার সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশকে একসঙ্গে নিয়ে চন্দ্র বিজয়ের কাজ করছে। ২০৩০–এর দশকে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে মহাকাশ নিয়ে অনেক প্রতিযোগিতামূলক ঘটনা দেখা যাবে বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেন।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে নভোচারী পাঠাবে চীন