সিদ্ধিরগঞ্জে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা না দেওয়ায় ৩নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহীন মিয়াকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী সরল ও তার বাহিনী।

এ ঘটনায় শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে ভুক্তভোগী শাহীন মিয়ার পিতা আঃ রশিদ ৮ জনের নাম উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা অভিযোগ দায়ের করেছেন। 

অভিযুক্তরা হলেন- যুবলীগ সন্ত্রাসী মো.

সরল (৪০) ও ছাত্র সমাজের ২ নং ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি শামীম ওসমানের ভাতিজা আজমেরী ওসমানের অন্যতম ক্যাডার নিশাদ (২৮), ঢাকা মহানগর যুবলীগ ক্যাডার হেলাল ফরাজি (৪৫),  মো. সুমন ফজলী সুমন (৩৫), মেহেদী (২৮), রুদ্র (২৫), মো. রানা (২৫),  মো. মিলন (৩৫)। এদের মধ্যে সরল ও নিশাদ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফতুল্লা থানায় দায়ের করা ছাত্র হত্যা মামলার আসামি। 

এরআগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সাইনবোর্ড এলাকা শাহিনের নিজের পরিবহন কাউন্টার থেকে তাঁকে অপহরণ করে প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে যায় তারা। 

ভুক্তভোগী শাহীন জানান যে, সে সাইনবোর্ড এলাকায় বাসের টিকিট বিক্রির কাজ করেন। সম্প্রতি সেখানে একটি চায়ের দোকান দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। সরল বাহিনী তার কাছে বার বার ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলো। দাবিকৃত চাঁদা না দিলে তাকে সেখানে ব্যবসা করতে দিবে না বলে হুমকি দেয়। 

শাহীন মিয়া চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে কয়েকবারই দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। এরই জের ধরে হিসেবে গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে সরলের ভাই নিশাদসহ ৪/৫ জনের একদল সন্ত্রাসী বাহিনী  সাইনবোর্ড টিকিট কাউন্টার থেকে প্রকাশ্যে অনেক মানুষের সামনে থেকে  শাহীন মিয়াকে টেনে হেঁচড়ে একটি প্রাইভেট কারে উঠিয়ে নিয়ে পার্শ্ববর্তী মিতালী মার্কেটের এক নম্বর ভবনে তাদের টর্চার সেলে নিয়ে যায়। 

সেখানে শাহীনকে লোহার পাইপ, হকিষ্টিক দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায়, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কোপায়। তাঁকে হত্যা করার জন্য উদ্ধত হয়। এমতাবস্থায় সে সরলের পায়ে ধরে জীবন ভিক্ষা চায়। এক পর্যায়ে যেভাবেই হোক দুই তিন দিনের মধ্যে ৫০ হাজার টাকা যোগার করে এনে সরলকে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় শাহীন। 

তারপর সরল ও তার বাহিনী চাঁদা প্রদানের শর্তে তাকে ছেড়ে দেয় এবং শাহীন যাতে আইনের আশ্রয় না নেয় তার জন্য হুমকি প্রদান করে। তবে ছেড়ে দেওয়ার পূর্বে তারা শাহীনকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ভিডিও করে রাখে এবং বলে তুই বাড়াবাড়ি করলে এই ভিডিও প্রশাসনের কাছে দিয়ে বলবো তুই ছিনতাইকারী। 

এই যুবলীগ ক্যাডার সরল ও হেলাল ফরাজি  বাহিনীর সন্ত্রাসী তান্ডবে আওয়ামীলীগের সময় থেকে সাইনবোর্ড স্টান্ড, মিতালী মার্কেটের ব্যবসায়ীরা সম্পুর্ন জিম্মি। সাইনবোর্ড স্ট্যান্ড এবং মিতালী মার্কেটের কোনো ব্যবসায়ী তাদেরকে চাঁদা না দিয়ে এখনো ব্যবসা বানিজ্য করতে পারে না। 

মিতালী মার্কেটের বিভিন্ন ভবনে রয়েছে তাঁর একাধিক টর্চার শেল। কেউ তাঁর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিবাদ করলে বা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে তাদের বাহিনী দিয়ে ধরে নিয়ে এসে এই টর্চার শেলে নিয়ে এসে নির্যাতন চালায়। 

যুবলীগ সন্ত্রাসী সরল ও হেলাল ফরাজি এবং তাদের বাহিনী এখনো তাদের সন্ত্রাসী কার্যকলাপ দাপটে চালিয়ে যাচ্ছে। রোজার মধ্যে সরলের নেতৃত্বে মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক পাপ্পু এবং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা টুটুলের বাড়ি করে সশস্ত্র হামলা করে। এই ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ সন্ত্রাসী সরলের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা হলেও পুলিশ সরলকে রহস্যজনক কারণে গ্রেপ্তার করেনি। 

এদিকে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরব ভূমিকায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনুর আলম বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন করি। এসময় অভিযুক্ত কাউকে পাইনি। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এঘটনায় মামলা পক্রিয়াধীন রয়েছে।  

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ অপহরণ স দ ধ রগঞ জ থ ন স ইনব র ড য বল গ ব যবস সরল র সরল ও

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে দুই যুবককে অপহরণের ঘটনায় ৩ অপহরণকারী গ্রেপ্তার

বন্দরে দুই যুবককে অপহরণের পর ২ লাখ টাকা মুক্তি পণ দাবির ঘটনায় ৩ অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত বুধবার (১১ জুন) রাতে বন্দর উপজেলার  মদনপুর ইউনিয়নের লাউসার গ্রামে  অপহরণের এ ঘটনাটি ঘটে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো বন্দরের মদনপুর দেওয়ানবাগ এলাকার হাজী শহিদুল ইসলামের ছেলে মাহবুবুর রহমান শিশির (৩৫), বন্দরের নেহাল সরদারেরবাগ গ্রামের  মৃত জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে মোঃ রুবেল মিয়া(২৯) ও সোনারগাঁ উপজেলার  নাজিরপুর বড়বাড়ি গ্রামের মৃত নান্নু মিয়ার ছেলে মোঃ সুমন (২৮)।

এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় বন্দরের ধামগড় ইউনিয়নের পশ্চিম কেওঢালা এলাকার ফয়েজ আহমেদের ছেলে রনি( ৪০),  বাবুল (৪৮) ও অপুসহ ১০-১২ জন অপহরণকারী। এ ব্যাপারে অপহরণের শিকার ফাহিমের (১৭) এর মামা হৃদয় হোসেন  বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (১২ জুন)  বন্দর থানায়  মামলা করেছেন।

মামলার বাদী হৃদয় হোসেন জানান, ভাগ্নে ফাহিম ও তার বন্ধু মোহন মিয়া বুধবার রাত নয়টার দিকে তাদের আরেক বন্ধু অপুর সাথে দেখা করতে বন্দরের লাউসার এলাকার জনৈক জাহাঙ্গীর মিয়ার বাড়িতে যায়। এ সময় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী অপহরণকারীরা দুজনকে একটি কক্ষে আটকে রাখে।

তারা ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি  ও মারধর করে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। অপহরণের বিষয়টি মোবাইল ফোনে জানতে পেরে  তিনি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ তে কল করে পুলিশকে জানান। পরে বন্দর থানা  পুলিশ  ফাহিম ও মোহনকে উদ্ধার করে এবং তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে।

এ ব্যাপারে বন্দর  থানার ওসি  তরিকুল ইসলাম জানান, অপহরণ ঘটনায় মামলা হয়েছে।  তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অপর অপহরণকারীদের  গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কল্পনা চাকমার অপহরণের বিচার চেয়ে ফেরার পথে হামলার অভিযোগ, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির নিন্দা
  • আড়াইহাজারে শীর্ষ মাদক কারবারি সন্ত্রাসী সোহেল সহযোগীসহ গ্রেপ্তার
  • সুবিচার মিলবে কত বছরে
  • বন্দরে দুই যুবককে অপহরণের ঘটনায় ৩ অপহরণকারী গ্রেপ্তার
  • চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বালু ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, যৌথ বাহিনীর অভিযানে উদ্ধার