স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার হামলায় যুবক নিহত
Published: 4th, April 2025 GMT
ভোলার চরফ্যাসনে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার হামলায় মাসুদ নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন মাসুদের পরিবারের আরও ছয়জন। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় দুলারহাট থানার আবু বক্করপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযোগ উঠা স্বেচ্ছাসেবক দল নেতার নাম আলামিন। তিনি ওই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক। নিহত মাসুদ (৩৮) আবু বক্করপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুল খালেকের ছেলে।
মাসুদের ভাই রায়হান জানান, তিনি এবং তাঁর ভাইয়েরা ঢাকার সাভার এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা করেন। ঈদে তারা ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। বুধবার রাতে তাঁর স্ত্রী আকলিমা ও বোন সিমার মধ্যে ঝগড়া হয়। এ সময় প্রতিবেশী স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আলামিনসহ কয়েকজন যুবক ওই বাড়িতে গিয়ে ঝগড়ার কারণ জানতে চান। এ সময় তাঁর ছোট ভাই রাসেল তাদের ঘরে ঢুকতে না দিয়ে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন। এ নিয়ে আলামিনের সঙ্গে তাদের তর্কবিতর্ক হয়। তর্কের জেরে আলামিন তাঁর সহযোগীদের ডেকে এনে রাতেই প্রথম দফায় তাদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেন। পরে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাৎক্ষণিক ওই ঘটনার মীমাংসা করে দেন। এতে সন্তুষ্ট হননি আলামিন।
শুক্রবার পারিবারিক কাজের জন্য তিনি এবং অপর ভাই মহসিন স্থানীয় দুলারহাট বাজারে যাচ্ছিলেন। এ সময় আলামিন সহযোগীদের নিয়ে মোটরসাইকেলে তাদের গতিরোধ করে দুই ভাইকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে আবার তাদের বাড়িতে গিয়ে বসতঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় তাঁর বড় ভাই মাসুদসহ পরিবারের অপর সদস্যরা বাধা দিলে আলামিন ও তাঁর সহযোগীদের মারধরে মাসুদসহ অপর ছয় সদস্য গুরুতর আহত হন। প্রতিবেশীরা তাদের উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে নিলে মাসুদকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মাসুদের চাচা সালাউদ্দিন জানান, আগের ঘটনা মীমাংসার জন্য সালিশের তারিখ হয়েছিল। ওই সালিশ বৈঠকের বিষয়টি উপেক্ষা করে আলামিন শুক্রবার সকালে তাঁর দুই ভাতিজার ওপর হামলা চালায়। আলামিন ও তার সহযোগীদের মারধরে তাঁর ভাতিজা মাসুদের মৃত্যু ঘটে। এ ঘটনার বিচার দাবি করেন তিনি। এদিকে মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা আলামিন ও তাঁর সহযোগীরা আত্মগোপনে চলে যান।
দুলারহাট থানার ওসি আরিফ ইফতেখার জানান, যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। জড়িতদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত সহয গ দ র র সহয গ আল ম ন এ সময় এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩
ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ।
রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।
আরো পড়ুন:
নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের
কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের
শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।”
শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।
মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।
তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি। ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।
ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।
ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ