ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটক হত্যার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে ধারাবাহিকভাবে চলে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। এসব বিক্ষোভ থেকে দাবি উঠেছে হত্যকারীদের খুঁজে বের করে চরম শাস্তি বিধানের। এ দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ও রাতে কলকাতার সর্বত্র বিভিন্ন রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদ মিছিল, মৌন মিছিল, মোমবাতি মিছিল হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যায় শান্তিনিকেতনের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকেরা এক বিরাট মোমবাতি মিছিল বের করেন কাশ্মীরের নিরীহ পর্যটক হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে। তাঁরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তাঁদের দৃঢ় অবস্থানের কথা জানান। মিছিল শুরু হয় বিশ্বভারতীর উপাসনা গৃহ প্রাঙ্গণ থেকে, শেষ হয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে।

কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল সন্ধ্যায় এক বিরাট মৌন মিছিল হাতে মোমবাতি নিয়ে বের করে কাশ্মীরের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানান। তাঁরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি তোলেন। একাত্মতা ঘোষণা করেন এই হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের পক্ষে। এই মোমবাতি ও মৌন মিছিল হয়েছে পার্ক সার্কাস থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত।

কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়ারাও গতকাল বিকেলে প্রতিবাদ মিছিল করেছেন। হাওড়ায় প্রতিবাদ মিছিল করেছে যুব তৃণমূল কংগ্রেস। মুর্শিদাবাদের বহরমপুরে প্রতিবাদ মিছিল করেছে সিপিএম। নদীয়ার কৃষ্ণনগরে মোমবাতি মিছিল করেছে তৃণমূল। বর্ধমান আদালতের আইনজীবারা গতকাল কাশ্মীরের ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল করেছে বর্ধমানে। বারাসাতের কাঠগোলা মোড়ে সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ করেছেন স্থানীয় লোকজন। তাঁরা পাকিস্তানের পতাকাও পুড়িয়েছেন।

গতকাল বিকেলে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক দল আইএসএফ বা ইন্ডিয়ান সেক্যুলার ফ্রন্টও আলাদা প্রতিবাদ মিছিল করে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সমুন্নত রাখার দাবি নিয়ে। আইএসএফ প্রতিবাদ মিছিল করেছে শিয়ালদহ থেকে পার্ক স্ট্রিট পর্যন্ত।

বিকেলে তৃণমূল যুব কংগ্রেস প্রতিবাদ মিছিল করেছে কলকাতার কাঁকরগাছি থেকে । তাঁরাও দাবি তুলেছে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ’ব্যবস্থা’ নেওয়ার, পশ্চিমবঙ্গে শান্তির বাতাবরণ তৈরি করার। বিশ্ব হিন্দু পরিষদও বিকেলে কাশ্মীরের পর্যটক হত্যার প্রতিবাদে প্রতিবাদ মিছিল করেছে বাগবাজার থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত। তারাও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে প্রতিঘাত করার দাবি তুলেছে।

কলকাতার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল সন্ধ্যায় এক বিরাট মৌন মিছিল হাতে মোমবাতি নিয়ে বের করে কাশ্মীরের সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানান.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলক ত র ব র কর ম মব ত গতক ল

এছাড়াও পড়ুন:

হতাহতের ছবি-ভিডিও সরাতে ও ছড়িয়ে পড়া বন্ধে পদক্ষেপ চেয়ে রিট, আদেশ ৩ আগস্ট

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনায় নিহত–আহতদের ছবি ও ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে রিট হয়েছে। এ রিটের ওপর আদেশের জন্য ৩ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

আজ বৃহস্পতিবার শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আদেশের এই দিন ধার্য করেন।

ওই ঘটনায় নিহত–আহতদের ছবি–ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো ছড়িয়ে পড়া বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ ২৯ জুলাই রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।

উত্তরার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান ২১ জুলাই বিধ্বস্ত হয়। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ৩০ জুলাই পর্যন্ত হিসাবে, ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৩৪।

পরে আইনজীবী তাসমিয়াহ নুহিয়া আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ওই দুর্ঘটনায় আহত–নিহতদের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ ও ডিজিটাল মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেগুলোতে শিশুদের প্রায় পোশাকহীন, অগ্নিদগ্ধ ও আহত অবস্থায় দেখা যায়। এসব ছবি–ভিডিও শিশুদের পরিবারের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের ট্রমাটাইজ (মানসিকভাবে আঘাত) করে দিচ্ছে। আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী এ ধরনের দুর্ঘটনায় আহত–নিহতদের ছবি–ভিডিও প্রকাশে সংবেদনশীল হওয়ার বিষয়ে বলা হয়েছে। ভবিষ্যতে এসব ছবি ব্যবহারে আরও সতর্কতা প্রয়োজন। তাই হতাহতদের ছবি–ভিডিও সরাতে এবং সেগুলো আর যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ