যুক্তরাষ্ট্রের নথিবিহীন অভিবাসী স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করে নিজ দেশে ফেরত যেতে চান, তাদের প্রত্যেককের জন্য পুরষ্কার ঘোষণা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হোমল্যান্ড সিকিউরিটি থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে এ তথ্য। সূত্র : আলজাজিরা

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, নথিবিহীন অভিবাসী স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করলে ১ হাজার ডলার করে সহায়তা প্রদান করা হবে। এই ১ হাজার ডলারের বাইরে নিজ দেশে ফেরার জন্য আলাদা অর্থ দেওয়া হবে তাদের এবং সিবিপি অ্যাপের মাধ্যমে যেসব অভিবাসনপ্রত্যাশী জানাবেন যে তারা নিজ দেশে ফিরতে চান, তাদেরকে বন্দিশালায় রাখা হবে না কিংবা বলপ্রয়োগ করা হবে না।

সোমবারের বিবৃতিতে মার্কিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম নথিবিহীন অভিবাসীদের উদ্দেশে বলেছেন, “আপনারা যারা অবৈধভাবে এই দেশে বসবাস করছেন, তাদের জন্য স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যাওয়া হচ্ছে সর্বোৎকৃষ্ঠ, সবচেয়ে নিরাপদ এবং সবচেয়ে সাশ্রীয় পন্থা। যারা এই পন্থ অবলম্বন করতে আগ্রহী— তাদেরকে সিবিপি হোম অ্যাপের মাধ্যমে ১ হাজার ডলার সহায়তা ও ও তাদের যাতায়াতের ব্যয় বহন করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।”

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যারা স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করতে চান— তাদেরকে অর্থ সহায়তা ও যাতায়াত ব্যয় সরবরাহ করা হলেও সেটি হবে অনেক সাশ্রয়ী। কারণ বর্তমানে অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে অভিযান, বন্দিশালা ও তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে প্রত্যেক অভিবাসীর পেছনে মাথাপিছু গড়ে ১ হাজার ৭০০ ডলার ব্যয় হচ্ছে।

গত ২০ জানুয়ারি শপথগ্রহণের পর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী নথিবিহীন অভিবাসীদের গ্রেপ্তার ও তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। তিনি এই আদেশে স্বাক্ষর করার পর থেকেই অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেপ্তারে দেশজুড়ে অভিযান শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রে।

সরকারি তথ্য অনুসারে, গত ২০ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৫২ হাজার নথিবিহীন অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এই সংখ্যা অবশ্য তার পূর্বসূরী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের চেয়ে কম। কারণ পরিসংখ্যাণ বলছে, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৯৫ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে ফেরত পাঠিয়েছিল বাইডেন প্রশাসন।

ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন যে যেসব অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে, তাদের ফের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের সুযোগ রয়েছে। গত এপ্রিলে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে তিনি বলেছিলেন, “তাদের মধ্যে যারা ভালো এবং বৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আসতে আগ্রহী, তাদেরকে আমরা অবশ্যই সহায়তা করব।”

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র অভ ব স স বর ষ ট র

এছাড়াও পড়ুন:

পূজার ছুটিতেও পর্যটকশূন্য খাগড়াছড়ি

সাপ্তাহিক ছুটিসহ দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চার দিনের ছুটি উপভোগ করছেন সরকারি চাকরিজীবীসহ অনেকে। আনন্দমুখর পরিবেশে ছুটি উপভোগ করতে অনেকেই ভ্রমণ করছেন পর্যটন স্পটগুলোতে। তবে, পর্যটকশূন্য রয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম ভ্রমণ গন্তব্য খাগড়াছড়ি।

সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে জুম্ম ছাত্র-জনতা নামের একটি সংগঠন। খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় বিক্ষোভ চলাকালে ব্যাপক সহিংসতা হয়। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাঙালিদের সংঘর্ষও হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় সহিংসতাকবলিত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। এর প্রভাব পড়েছে পর্যটনেও। পূজার ছুটিতে পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য জেলাতে পর্যটকদের ঢল নামলেও খাগড়াছড়িতে তা নেই। 

অন্যান্য বছর পূজার ছুটিতে খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলো জমজমাট থাকলেও এ বছর হয়েছে তার উল্টো। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গুটি কয়েক মানুষ ছাড়া তেমন পর্যটক নেই খাগড়াছড়ির স্পটগুলোতে। পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীরা এখন অলস সময় পার করছেন। সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে ঘটে যাওয়া সহিংসতার কারণে এ জেলায় পর্যটকদের আগমন কমেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীরা। 

খাগড়াছড়ির মূল আর্কষণ আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। সেখান থেকে দেখা যায় পুরো খাগড়াছড়ি শহর ও শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা চেঙ্গী নদীর মনোরম দৃশ্য এবং এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ের সৌন্দর্য। সেই পর্যটন স্পটে এখন হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া পর্যটক নেই। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কেও পর্যটকের আনাগোনা খুবই কম।  

ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা মো. ইসমাইল হোসেন ও চট্টগ্রাম থেকে আসা নিলুফার জাহান বলেছেন, পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখে তারা খুশি। কিন্তু, পর্যটক কম থাকায় তাদের ভালো লাগছে না। 

পর্যটন ব্যবসায়ী টিটু চাকমা জানিয়েছেন, পর্যটক না আসায় তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। 

হোটেল গাইরিংয়ের ম্যানেজার প্রান্ত বিকাশ ত্রিপুরা ও অরণ্য বিলাসের ম্যানেজার আব্দর রশিদ সাগর জানিয়েছেন, পূজার ছুটিতে তাদের হোটেলের ৮৫ ভাগ সিট বুকিং ছিল। কিন্তু, সহিংস পরিস্থিতির কারণে বুকিং বাতিল করছেন পর্যটকরা।

খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের অভ্যর্থনা ব্যবস্থাপক মো. সুজনুর রহমান সাগর জানিয়েছেন, তাদের যা বুকিং ছিল, সব বাতিল করেছেন পর্যটকরা। আশা ছিল, পূজার ছুটিতে ভালো ব্যবসা হবে। সহিংসতার কারণে তাদের প্রচুর ক্ষতি হলো।

পর্যটন খাতকে হরতাল, অবরোধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। 

খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আশ্বস্ত করেছেন যে, পর্যটকরা এলে তাদের নিরাপত্তার দেওয়া হবে। 

খাগড়াছড়িতে এখনো ১৪৪ ধারা বলবৎ আছে। জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি আরো স্বাভাবিক হলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।

ঢাকা/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ