দুই পরিবারের ঝগড়ার মধ্যে বাবা-মায়ের সামনেই স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা
Published: 12th, May 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় পারিবারিক বিরোধের জেরে রিয়াদ হোসেন (১৩) নামের এক বিদ্যালয়ছাত্রকে দিনদুপুরে বাবা-মায়ের সামনে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলার দর্শনা থানাধীন পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামে এ খুনের ঘটনা ঘটে।
নিহত রিয়াদ হোসেন ছয়ঘরিয়া গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমানের ছেলে এবং দর্শনা মেমনগর বিপ্রদাস (বিডি) মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তি একই গ্রামের হযরত আলী। স্কুলছাত্রের হত্যার পর অভিযুক্ত হযরত আত্মগোপনে চলে গেছেন।
খবর পেয়ে পুলিশের দামুড়হুদা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাকিয়া সুলতানা ও দর্শনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহীদ মো.
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জিয়াউর রহমানের সঙ্গে প্রতিবেশী হযরত আলীর বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ ছিল। আজ দুপুরে গোবরের ঘুঁটে শুকানোকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে হযরত আলী বাড়ির ভেতর থেকে ধারালো শিকদা (লম্বা ধারালো দা) নিয়ে আসেন এবং বাবা-মায়ের চোখের সামনেই স্কুলছাত্র রিয়াদের গলায় কোপ মারেন। এতে সঙ্গে সঙ্গেই রিয়াদ মারা যায়।
দামুড়হুদা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জাকিয়া সুলতানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, অভিযুক্ত হযরত আলীকে ধরতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অপারেশনে চিকিৎসকের অসতর্কতায় শ্বাসনালি কেটে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ
ময়মনসিংহ শহরের এপেক্স হসপিটালে টনসিলের অপারেশন করাতে গিয়ে চিকিৎসকের অসতর্কতায় শ্বাসনালি কেটে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মারা যাওয়া ১২ বছরের শিশু তাইয়্যিবা তাবাসসুম তন্দ্রা ত্রিশাল পৌর শহরের রাহেলা-হযরত মডেল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
তন্দ্রা উপজেলার বীররামপুর গফাকুড়ি মোড় এলাকার ব্যবসায়ী মো. গোলাপ মিয়ার কন্যা। পারিবারিক সূত্র যায়, ছোট্ট শিশুটি টনসিলের সমস্যায় ভুগছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য পরিবারের সদস্যরা তাকে ময়মনসিংহের চরপাড়া এলাকার এপেক্স হসপিটালের চিকিৎসক কামিনী কুমার ত্রিপুরার কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসকের পরামর্শে শিশুটিকে অপারেশনের জন্য ওই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নিহত শিশুর স্বজনের অভিযোগ, টনসিলের অপারেশনের সময় চিকিৎসকের অসতর্কতার কারণে তার শ্বাসনালি কেটে যায়। এতে অপারেশনের টেবিলেই মৃত্যু হয় তার।
কামিনী কুমার ত্রিপুরা কিশোরগঞ্জের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের চিকিৎসক। অবসরে এপেক্স হাসপাতালে রোগী দেখেন তিনি। এ ব্যাপারে ডা. কামিনী কুমার ত্রিপুরার সঙ্গে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।
রোববার বিকেলে গোলাপ মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, তন্দ্রার অকাল মৃত্যুতে দিশেহারা বাবা-মা। চোখের সামনে একটি সুস্থ, স্বাভাবিক শিশুর অপারেশনের টেবিলে এভাবে মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারছেন না।
নিহতের চাচা আবুল কালাম বলেন, আমরা আমাদের মেয়েকে সুস্থ করার আশায় এ হাসপাতালে এনেছিলাম। আর এ ডাক্তারই আমাদের মেয়েকে মেরে ফেলল। এটা কোনো স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, এটা স্পষ্টতই ডাক্তারের অবহেলা। আমরা এর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বিচার চাই। অবিলম্বে এ ঘটনার তদন্ত এবং অভিযুক্ত ডাক্তারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
রাহেলা-হযরত মডেল স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আব্দুল আউয়াল বলেন, এ হৃদয়বিদারক ঘটনাটি কেবল একটি পরিবারের অপূরণীয় ক্ষতি নয়, এটি সমাজের প্রতিটি বিবেকবান মানুষের মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করবে। আমাদের সবার প্রত্যাশা, স্থানীয় প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য বিভাগ অতি দ্রুত এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটন করবে এবং দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করবে।