রাজধানীর ডেমরায় হত্যা মামলার এক আসামিকে গ্রেপ্তারের সময় মব সৃষ্টি করে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ডেমরার হাজীনগর এলাকার সেবা হাসপাতালের মালিকসহ বেশ কয়েকজনের নামে মামলা করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, রোববার রাতে সেবা হাসপাতাল থেকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ডা.
ডেমরা থানার ওসি মাহমুদুর রহমান জানান, রোববার রাতে ডিএমপির সিটির সাইবার ক্রাইম ইউনিটের একটি দল সেবা হাসপাতালের সামনে থেকে হত্যার মামলার আসামি ইমরানকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় ইমরান হাসপাতালে তাঁর এক রোগীর অস্ত্রোপচার রয়েছে বলে নাটক সাজান। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পুলিশ তাঁকে ওটিতে যেতে দেয়। এই সুযোগে তিনি হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারী দিয়ে পুলিশ ওপর হামলা করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকে ধরতে গেলে হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মব সৃষ্টি করে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এ ঘটনায় হাসপাতালের মালিক আমিনুলসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি ২৫ জন। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
পুলিশ জানায়, গত ৫ আগস্টের পর থেকে ডা. ইমরান মাতুয়াইল মাতৃসদন ইনস্টিটিউট থেকে পালিয়ে যান। গত ৯ মাসে আর ইনস্টিটিউটে যাননি। তাঁর বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের দুটি হত্যা মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় হামাসের প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যার দাবি নেতানিয়াহুর
গাজা হামাসের প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বুধবার ইসরায়েলের পার্লামেন্টে (নেসেট) এ কথা বলেন তিনি। তবে সিনওয়ারের মৃত্যু নিয়ে হামাস তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানায়নি।
২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনাকারী ও হামাসের সাবেক প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারের ছোট ভাই মোহাম্মদ সিনওয়ার। ২০২৪ সালের অক্টোবরে গাজার রাফা এলাকায় ইয়াহিয়া সিনওয়ারও ইসরায়েলি সেনাদের হাতে প্রাণ হারান। তাঁর মৃত্যুর পর মোহাম্মদ সিনওয়ার গাজায় হামাসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেন।
মোহাম্মদ সিনওয়ারের অবস্থান নিশানা করে চলতি মাসে দক্ষিণ গাজার একটি হাসপাতালে হামলা চালায় ইসরায়েল। গত ২১ মে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছিলেন, খুব সম্ভবত মোহাম্মদ সিনওয়ার নিহত হয়েছেন। বুধবার নেসেটে নেতানিয়াহু বলেন, মোহাম্মদ সিনওয়ারকে ‘হত্যা’ করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ২০ মাসে ইসরায়েলি সেনাদের হাতে নিহত হামাস নেতাদের নামও তুলে ধরেন তিনি।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘গত দুই দিনে আমরা হামাসের পুরোপুরি পরাজয়ের দিকে একটি নাটকীয় মোড় দেখতে পেয়েছি।’ ইসরায়েল এখন গাজায় ‘খাদ্য বিতরণের নিয়ন্ত্রণও নিচ্ছে’ বলে উল্লেখ করেন তিনি। এখানে তিনি গাজায় নতুন ত্রাণ সহায়তা বিতরণ ব্যবস্থার কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত একটি সংগঠন তা পরিচালনা করছে।
নেতানিয়াহুর এই ঘোষণা এমন এক সময় এসেছে যখন ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা তীব্রতর করেছে। চলতি বছরের শুরুতে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে ১৮ মার্চ থেকে উপত্যকাটিতে হামলা জোরদার করে ইসরায়েল। ইসরায়েল বলেছে, হামাসের শাসন ও সামরিক ক্ষমতা ধ্বংস করা এবং গাজায় বন্দী থাকা আটকদের মুক্ত করাই তাদের লক্ষ্য।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্ব ইসরায়েলে হামলা চালানো হয়। এতে প্রায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন। সেদিন ২৫০ এরও বেশি মানুষকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যান হামাস যোদ্ধারা।
হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে গাজায় পূর্ণমাত্রায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলের হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, উপত্যকাটিতে ৫৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ইসরায়েলে হামলার মুখে ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি স্থানচ্যুত হয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহতদের অধিকাংশই নিরীহ নাগরিক। কতজন যোদ্ধা মারা গেছে, সে বিষয়ে তারা কোনো তথ্য দেননি। ইসরায়েলের দাবি, তারা লক্ষাধিক ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। কিন্তু তারা এই দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।