ঢাবিতে নজরুল সাহিত্যে ফারসির প্রভাব নিয়ে সেমিনার
Published: 28th, May 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ‘নজরুল সাহিত্যে ফারসির প্রভাব’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৮ মে) বিকেলে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, আন্জুমানে ফারসি বাংলাদেশ ও ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের কালচারাল সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।
এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মানসুর চাভুশি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান ও ঢাকাস্থ ইরান দূতাবাসের কালচারাল কাউন্সেলর সাইয়্যেদ রেজা মীরমোহাম্মদী।
আরো পড়ুন:
ঢাবিতে ভবঘুরে উচ্ছেদে সহযোগিতা করবে ডিএসসিসি ও মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ
শিবির ছাত্র রাজনীতির পরিবেশকে টক্সিক করে তুলেছে: উমামা ফাতেমা
কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো.
এছাড়া আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আন্জুমানে ফারসি বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ঢাবির ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চেয়ারম্যান ও আন্জুমানে ফারসি বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক মো. মুমিত আল রশিদ।
এ সময় বক্তারা বলেন, ইরান ও বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিক। ইতিহাস-সংস্কৃতি, ভাষা-সাহিত্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ফারসি। বাংলা সাহিত্যের সঙ্গে ফারসি সাহিত্যের সম্পর্ক নিবিড়। ফারসি সাহিত্যের ঐশ্বর্য ধারণ করে সমৃদ্ধ হয় বাংলা সাহিত্য। ফারসি সাহিত্যের ভাবনা ও শৈল্পিকতা কাব্যাকারে প্রকাশ করেন আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরল ইসলাম। নজরুলের সাহিত্যে ফারসি কবিদের ভাবনার প্রতিফলন ঘটে অনুবাদ সাহিত্যে।
বক্তারা আরো বলেন, ফারসি কবিতা কাব্যাকারে অনুবাদে নজরুল বিস্ময়কর প্রতিভা। ওমর খৈয়ামের রুবাই মূল ফারসি থেকে অনূদিত হয়ে বাংলা সাহিত্যভুবনে নতুন মাত্রা যোগ করে। ইরানি কবিদের মানবিক মূল্যবোধ বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করে। নজরুল ও হাফিজের কবিতায় মানবতার জয়গান উচ্চকিত হয়। ইরানের বিখ্যাত কবি হাফিজ, ওমর খৈয়াম, শেখ সাদী ও মাওলানা জালাল উদ্দিন রুমিকে ধারণ করেই নজরুল বিদ্রোহী কবি, প্রেমের কবি, মানবতার কবি। আর সাম্য ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সমাজ গঠনে সাহিত্যের ভূমিকা অপরিসীম। নজরুল ও হাফিজের কবিতায় ঐশীপ্রেমের আলো ঝরে পড়ে।
ঢাকা/হাসান/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নজর ল উপস থ
এছাড়াও পড়ুন:
জিয়া হত্যাকাণ্ড ও তারপর কী ঘটেছিল
জিয়াউর রহমান ঘটনার আগের দিন তাঁর প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপির স্থানীয় নেতাদের বিরোধ মেটাতে চট্টগ্রাম গিয়েছিলেন মাত্র ৪৮ ঘণ্টার নোটিশে। চট্টগ্রামে দুটি উপদলে বিভক্ত বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ২৯ মে রাতে স্থানীয় সার্কিট হাউসে ঘুমিয়ে ছিলেন জিয়াউর রহমান। ভোররাতে সেখানেই তাঁকে হত্যা করা হয়।
৩০ মে ভোরে গোলাগুলির আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক (ডিসি) জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরীর। ডিসির বাংলো থেকে সার্কিট হাউসের দূরত্ব মাইলখানেক হবে। সকালেই তিনি বাংলো সার্কিট হাউসে গিয়ে জিয়াউর রহমানের মৃতদেহের বীভৎস দৃশ্য দেখেছিলেন। সেই থেকে জেলা প্রশাসক হিসেবে ঘটনাপ্রবাহ কাছে থেকে দেখেছেন তিনি।
‘দুই জেনারেলের হত্যাকাণ্ড, ১৯৮১-র ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থান’ এই শিরোনামে একটি বই লিখেছেন জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। তিনি লিখেছেন, গোলাগুলি থেমে যাওয়ার পর ভোরেই একজন সহকারী প্রটোকল অফিসার মোশতাক তাঁকে ফোন করে কিছু তথ্য দেন।
ওই সহকারী প্রটোকল অফিসারের বরাত দিয়ে বইয়ে জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী লিখেছেন, ‘ভোর চারটার দিকে সেনাবাহিনীর কয়েকটি গাড়ি গুলি করতে করতে সার্কিট হাউসে প্রবেশ করে। সে (সহকারী প্রটোকল অফিসার) জানে না পুলিশ বা প্রেসিডেন্টের গার্ড তাদের বাধা দিতে পেরেছিল কি না। তবে তারা গুলি করতে করতে সার্কিট হাউসে ঢুকে যায়। মোশতাক লাউঞ্জে বসে ছিল। সেনারা প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সে পাশের ডাইনিং রুমের টেবিলের নিচে লুকিয়ে পড়ে। এরপর সে শুনতে পায় ভারী বুটের আওয়াজ। কয়েকজন সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে প্রেসিডেন্টের রুমের দিকে যায়। এরপর সে আরও গুলির আওয়াজ শুনতে পায়। কয়েক মিনিট পর ওপরের লোকগুলো নিচে চলে আসে আর তার কিছুক্ষণ পর শোনে গাড়ির আওয়াজ। সে বুঝল, যারা এসেছিল, তারা চলে গেছে। সে এত ভয় পেয়েছিল যে গাড়িগুলো চলে যাওয়ার পর সে পালিয়ে এসে গ্যারেজ থেকে আমাকে ফোন করেছে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম, প্রেসিডেন্ট কী অবস্থায় আছেন, সে জানে কি না, উত্তরে সে জানাল, এ ব্যাপারে এখনো কিছুই জানে না সে।’
এরপর অল্প সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামের তৎকালীন বিভাগীয় কমিশনার সাইফুদ্দিন ফোন করে জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরীকে জানান যে, ‘প্রেসিডেন্ট জিয়া আততায়ীদের হাতে খুন হয়েছেন।’
ঘটনা সম্পর্কে এ সব তথ্য পাওয়ার পর পরই বিভাগীয় কমিশনারকে সঙ্গে নিয়ে সার্কিট হাউসে যান জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। সেখানে পৌঁছে দেখেন সার্কিট হাউস প্রায় পরিত্যক্ত একটা ভবন। চারপাশে কোনো প্রহরা ছিল না, ছিল না কোনো পুলিশ, ছিল না সেনাবাহিনীর কোনো সদস্য। সার্কিট হাউসের লনে দেখতে পান দাঁড়িয়ে আছেন তৎকালীন পুলিশ কমিশনার, ডিআইজি পুলিশ ও পুলিশের গোপন শাখার সহকারী কমিশনার।
জেলা প্রশাসক হিসেবে জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী সে সময় পুলিশের গোপন শাখার সহকারী কমিশনার আবদুস সাত্তারকে নিয়ে সার্কিট হাউসের ওপরতলায় যান পরিস্থিতি দেখতে। সেই পরিস্থিতিরও বর্ণনা দিয়েছেন তিনি তাঁর বইয়ে।
জিয়াউদ্দিন এম চৌধুরী। তিনি জিয়াউর রহমান হত্যাকাণ্ডের সময় চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ছিলেন