এই বাজেট গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা ধারণে ব্যর্থ হয়েছে
Published: 3rd, June 2025 GMT
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করছে বিভিন্ন দল ও সংগঠন। তারা বলেন, বাজেটে গণঅভ্যুত্থানের গণআকাঙ্খার বৈষম্য থেকে মুক্তির কোনো প্রতিফলন নেই। এই বাজেট গতানুগতিক। ধনিক, কালো টাকার মালিক ও আমলা তোষণের ধারাবাহিকতা মাত্র। মঙ্গলবার পৃথক বিবৃতিতে বিভিন্ন দল ও সংগঠনের নেতারা এসব কথা বলেন। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাজেট ঢেলে সাজানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।
বাজেট সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করবে না: বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের বিবৃতিতে বলা হয়, গতানুগতিক পথে হেঁটে যে বাজেট ঘোষণা করা হলো, তা সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষা করবে না। এই বাজেটে বৈষম্যহীনতা ও টেকসই উন্নয়ন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা বলা হলেও বাস্তবে মুক্তবাজারের পুরনো ধারাবাহিকতার পুনরাবৃত্তি ঘটানো হয়েছে, যা বৈষম্য, বেকারত্ব, মূল্যস্ফীতি ও বিনিয়োগ সংকট কোনোটাই মোকাবিলা করতে পারবে না। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক রুহিন হোসেন প্রিন্স, কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ শাহ আলম, বজলুর রশিদ ফিরোজ, ইকবাল কবির জাহিদ, মাসুদ রানা, মোশরেফা মিশু ও আব্দুল আলী।
মূল অর্থনীতি সংস্কারের দিকনির্দেশনা পরিলক্ষিত হয়নি: বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির বিবৃতিতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থেকে যতটা বলেছে, বাজেটে সেসব কথার প্রতিফলন নেই। সংস্কার সরকারের প্রধান এজেন্ডা থাকলেও মূল অর্থনীতি সংস্কারের দিক-নির্দেশনা বাজেটে পরিলক্ষিত হয়নি।
বাস্তবে মানুষের আকাঙ্খার প্রতিফলন নেই: বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বিবৃতিতে বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার পলায়নের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম বাজেটে মানুষ স্বাভাবিকভাবে তাদের আকাঙ্খার প্রতিফলন দেখতে চেয়েছে। কিন্তু বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, নাগরিক সুবিধা, সুশাসন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ও টেকসই উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করলেও বাস্তবে মানুষের সেই আকাঙ্খার প্রতিফলন নেই।
বাজেটে জনকল্যাণের চেয়ে এনজিওগুলোর চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে: বাংলাদেশ মুসলিম লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মহসীন রশিদ ও মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের বলেন, চব্বিশের নির্বাচনী বরাদ্দ ছিল ৪৮০০ কোটি টাকা। অথচ এবারের বাজেটে নির্বাচন কমিশনের জন্য বরাদ্দ ধরা হয়েছে মাত্র ২৯৫৬ কোটি টাকা। প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা চাহিদার বিপরীতে অর্ধেকের কম বরাদ্দ স্পষ্ট ইঙ্গিত দিচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের জনদাবিকে গুরুত্ব সহকারে ভাবছে না। এই বাজেটে জনকল্যাণের চেয়ে এনজিওগুলোর চাহিদাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে দৃঢ় প্রত্যয়ে অর্ন্তবর্তী সরকার ব্যর্থ হয়েছে: বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির (বিএসপি) চেয়ারম্যান ড.
বাজেট জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা ধারণে ব্যর্থ হয়েছে: জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম বিবৃতিতে বলেন, বাজেট প্রস্তাবের আগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সম্পর্কিত রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত গ্রহণ করা প্রয়োজন ছিল। এতে জাতীয় সংসদের অনুপস্থিতিতে প্রস্তাবকৃত বাজেট আরও জনস্বার্থ সম্পর্কিত হতে পারতো। সেটা না করায় এই বাজেট জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খা ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
বাজেট প্রস্তাব শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাপরিপন্থী: সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক রায়হান উদ্দিন বিবৃতিতে বলেন, রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক রূপান্তরের আকাঙ্খা পূরণ করার অঙ্গীকার করে আসা অন্তর্বর্তী সরকারের বাজেট প্রস্তাব শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশাপরিপন্থী। এই কারণে এই বাজেট আমরা প্রত্যাখ্যান করছি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব জ ট ২০২৪ ২৫ প রস ত ব ত ব জ ট প রস ত ব এই ব জ ট সরক র র বর দ দ
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “জুলাই সনদ হতে হবে, জুলাই সনদের ভিত্তিতেই নির্বাচন হবে। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকতে হবে। নির্বাচিত যে সরকার আসুক এই সদন বাস্তবায়নে বাধ্যবাধকতা থাকবে।”
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সন্ধ্যায় গাজীপুরের রাজবাড়ি সড়কে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’র সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম বলেন, “৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র হতেই হবে। এর বিকল্প আমরা দেখতে চাই না। সরকার সনদের খসড়া প্রকাশ করেছে। জুলাই সনদ শুধু সংস্কার হলে হবে না, এটি কীভাবে বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে ঐক্যমত হতে হবে।”
আরো পড়ুন:
ভাসানীরা না থাকলে শেখ মুজিব কখনো তৈরি হতেন না: নাহিদ
গণঅভ্যুত্থান না হলে নির্বাচনের স্বপ্নই দেখতে পারতেন না: নাহিদ
তিনি বলেন, “আমরা আশা করছি, ৫ আগস্টের আগেই অন্তবর্তীকালীন সরকার এবং সব রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ ও জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে পারবেন। আমরা সবাই মিলে আকাঙ্ক্ষিত গণঅভ্যুত্থানের একবছর উদযাপন করতে পারব।”
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, কেন্দ্রীয় সংগঠক আব্দুল্লাহ আল মুহিম, মো. মহসিন উদ্দিন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন গাজীপুরের সাবেক আহ্বায়ক নাবিল আল ওয়ালিদ।
এনসিপির পথসভাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকে গাজীপুরের বিভিন্ন মোড়ে ও সমাবেশস্থলে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাতে সন্দেহভাজনদের তল্লাশি করা হয়। রাজবাড়ীর সড়কে বন্ধ থাকে সব ধরনের যান চলাচল।
এর আগে, এনপিপির কেন্দ্রীয় নেতরা টাঙ্গাইলের পথসভা শেষে গাজীপুরে কালিয়াকৈরে উপজেলা হয়ে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা যান। সেখানে বিকেলে পথসভা শেষে গাজীপুর শহরের রাজবাড়িতে আসেন তারা।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ