এক সপ্তাহ পর গতকাল বুধবার জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগ চালু হয়েছে। তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অস্ত্রোপচার ও রোগী ভর্তি বন্ধ ছিল। এদিকে, শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় চিকিৎসাধীন ৩৩ জুলাইযোদ্ধাকে ছুটি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গতকাল সকাল ১০টার দিকে জরুরি বিভাগে রোগীদের সেবা দেওয়া শুরু হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত তিনজন চিকিৎসক মিলে শতাধিক রোগীর জরুরি সেবা দেন, যাদের বেশির ভাগই নতুন রোগী। তবে ভর্তি প্রয়োজন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা লাগবে– এমন চিকিৎসাসেবা প্রত্যাশীদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সের উপস্থিতিও ছিল কম।

গাইবান্ধা থেকে আসা রফিকুল ইসলাম নামের এক রোগী জানান, গত ফেব্রুয়ারিতে একবার চোখের সমস্যা নিয়ে এখান থেকে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। সম্প্রতি চোখের যন্ত্রণা বেড়ে যাওয়ায় আজ (গতকাল) আবার চিকিৎসার জন্য এসেছেন। তিনি বলেন, সামনে ঈদ, তবুও আসতে বাধ্য হয়েছি। চোখের যন্ত্রণায় থাকতে পারছিলাম না।

আরেক রোগী ইসমাইল হোসেন জানান, তিনি ভোলা থেকে এসেছেন। গত শনিবার হাসপাতালে এসে দেখতে পান, সব সেবা বন্ধ। এর পর থেকে প্রতিদিন সকালে এসে চিকিৎসা চালু হয়েছে কিনা দেখে গেছেন। তিনি বলেন, চিকিৎসা ছাড়া চলে গেলে আবার আসতে হবে। তাই এতদিন চিকিৎসার জন্য অপেক্ষা করেছি।

জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা.

জানে আলম বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জরুরি বিভাগের সেবা চালু হয়। জরুরি সেবা প্রয়োজন এমন রোগী সেবা নিতে পারছেন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে চার সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এই বোর্ডের সুপারিশে ৩৩ জুলাইযোদ্ধাকে হাসপাতাল ছুটি দিয়েছে। বাকি ২২ জনের পরবর্তী চিকিৎসা কী হবে, তা নির্ণয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চিকিৎসক ও নার্সের নিরাপত্তা নিশ্চিতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখনও চিকিৎসকরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছে না। যে কারণে সব বিভাগে সেবা চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলে বাকি সেবা চালু হবে। 

গত ২৮ মে চিকিৎসক-কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত রোগীদের মারামারি-সংঘর্ষের পর হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যায়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে ট্রাকচালকদের ধর্মঘট, কয়েক ডজন গ্রেপ্তার

ইরান সরকার ৪০ জনেরও বেশি ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে, যার মধ্যে ট্রাকচালক এবং ইরানজুড়ে ক্রমবর্ধমান ট্রাকচালকদের ধর্মঘটের সমর্থক রয়েছেন।

হিউম্যান রাইটস অ্যাক্টিভিস্টস নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে আজ শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইরান ইন্টারন্যাশনাল।  

প্রতিবেদনে বলা হয়, কুর্দিস্তান, কেরমানশাহ, গিলান, ফারস, কাজভিন এবং কেরমানশাহসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশে আটকের ঘটনা ঘটেছে। ধর্মঘটকারী চালক এবং নাগরিক উভয়কেই অনলাইনে বিক্ষোভ প্রচার বা সরাসরি ধর্মঘটের অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

পরমাণু আলোচনায় ‘স্পষ্টতা’ চায় ইরান

ইরানের কাছে পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব পাঠিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র

জীবনযাত্রার উচ্চব্যয়, পরিবহন ফি হ্রাস, জ্বালানি নিষেধাজ্ঞা এবং রাষ্ট্রীয় সহায়তার অভাবের কারণে ক্রমবর্ধমান হতাশার ফলে ২২ মে দক্ষিণ বন্দর শহর বন্দর আব্বাসে ট্রাকচালকদের ধর্মঘট শুরু হয়েছিল। বিক্ষোভটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ইরানে ট্রাকচালক ও ট্রাকচালক ইউনিয়নের জোট বলছে, কমপক্ষে ১৫৫টি শহরের ট্রাকচালকরা ধর্মঘটে অংশগ্রহণ করছেন।

গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন ফারজাদ রেজাই, জানকো রোস্তামি, রেজগার মোরাদি, সেদিক মোহাম্মদী, আতা আজিরি, আলিরেজা ফাঘফুরি এবং শাহাব দারাবির মতো নামধারী ব্যক্তিরা—যাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। কাজভিনের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটানো এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্মঘটের ভিডিও পোস্ট করার অভিযোগে নয়জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, কিছুক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জোর করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রচার করেছে।

ইরানের মানবাধিকার কেন্দ্র (সিএইচআরআই) ট্রাকচালকদের ধর্মঘটকে ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বৃহত্তম শ্রমিক বিক্ষোভ’ বলে অভিহিত করেছে। সংস্থাটি বলছে, তিন সপ্তাহ ধরে চলা এই ধর্মঘট তেহরানের গভীর অর্থনৈতিক সংকটের উপর ক্রমবর্ধমান অসন্তোষের প্রমাণ।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ