চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জহির উদ্দিন মিন্টু (৪৯) নামে সাবেক এক যুবলীগ নেতাকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবির ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে অপহরণের শিকার ওই নেতাকে উদ্ধার করেছে যৌথ বাহিনী। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের স্লুইস গেট এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।

এর আগে বুধবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের বইক্যারপাড়া এলাকা থেকে তাকে অপহরণ করা হয়।

অপহরণের শিকার জহির উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত আবদুল কাদেরের ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি বলে জানিয়েছেন বর্তমান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন লিটন।

যুবলীগ নেতা জহিরের সঙ্গে তার ছোট ভাই মো.

সোহেলকেও (৩৫) অপহরণ করা হয়। পরে তাকে বাড়ি থেকে মুক্তিপণের টাকা আনার জন্য ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা।

সোহেল বলেন, ‘আমার ভাই মিন্টু ডলু নদী থেকে বৈধ ইজারাকৃত জায়গা থেকে ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করে ভিটা ও গর্ত ভরাটের কাজ করেন। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আমার ভাইকে মোবাইল ফোনে কল করে এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তি বালু ভরাটের কথা বলে এওচিয়া ইউনিয়নের বইক্যারপাড়া এলাকায় ভাইকে যেতে বলে। সে অনুযায়ী, আমি ও আমার ভাই মোটরসাইকেলে অপহরণকারীদের বলা জায়গায় গেলে তারা আমাদের মারধর শুরু করে।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘একপর্যায়ে তারা আমাদের কাছ থেকে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দাবির টাকা দিতে আমার এক প্রতিবেশীর মোবাইল ফোনে কথা বলি। এ টাকা না দিলে তারা আমাদের হত্যার ভয় দেখায়। একপর্যায়ে তারা আমাকে ছেড়ে দিয়ে ভাইকে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়। অপহরণকারী দলের সদস্য সংখ্যা ৭-৮ জন হবে। তারা সবাই অস্ত্রধারী। তবে তাদেরকে আমরা চিনতে পারিনি। পরে মুক্তিপণের টাকা দেওয়ার লোভ দেখিয়ে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে ঘটনাটি জানাই। বিষয়টি জানতে পেরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে কাঞ্চনা ইউনিয়নের স্লুইস গেইট এলাকা থেকে আজ ভোরে আমার ভাইকে উদ্ধার করে।’

সাতকানিয়া সেনাবাহিনী ক্যাম্পে দায়িত্বরত ক্যাপ্টেন পারভেজ বলেন, অপহরণকারীরা ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছিল। মু্ক্তিপণ দেওয়ার আগেই সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে জহির উদ্দিন মিন্টুকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।

সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. তফিকুল আলম বলেন, অপহরণের বিষয়ে পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করে। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সাড়ে ৮ ঘণ্টার অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: য বল গ ন ত অপহরণ ম ক ত পণ উদ ধ র অপহরণক র অপহরণ র আম র ভ ই য বল গ

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর পোশাক নিয়ে কটূক্তি ও হেনস্তার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার তিন দিন পর হেনস্তাকারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। গ্রেপ্তার নাজিম উদ্দিন (৪৫) ওই বাসের কন্ডাক্টর ও চালকের সহকারী বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরের বছিলা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, একটি বাসে এক তরুণী তাঁর পোশাক নিয়ে কটূক্তির প্রতিবাদ করছেন। বাসে ওঠার পর সামনের আসনে বসা ওই ব্যক্তি তাঁর পোশাক নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণী প্রতিবাদ জানাতে সামনে এগিয়ে যান এবং প্রশ্ন করেন, ‘আমার পোশাক নিয়ে আপনার সমস্যা কী?’ পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ব্যক্তি উঠে দাঁড়িয়ে তরুণীকে চড় মারেন। মুহূর্তেই তরুণী জুতা খুলে পাল্টা আঘাত করেন। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে দুজনই বাসের সামনের দিকে পড়ে যান। তরুণী নিজেকে সামলে নিয়ে আবারও প্রতিরোধ করেন।

ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পর নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেকেই তরুণীর সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করেছেন, অন্যদিকে কেউ কেউ ঘটনাটিতে উভয় পক্ষের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

নাজিম উদ্দিনকে আটক করার সঙ্গে যুক্ত র‍্যাব-৪–এর মেজর আবরার ফয়সাল সাদী প্রথম আলোকে বলেন, তরুণীকে কটূক্তি ও হেনস্তা করার ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর হেনস্তকারী ব্যক্তিকে আটক করতে র‍্যাব-৪–এর একটি দল অভিযান শুরু করে। গতকাল সন্ধ্যায় নাজিম উদ্দিনকে শনাক্ত করে আটক করা হয়। পরে তাঁকে মোহাম্মদপুর থানায় সোপর্দ করা হয়।

যোগাযোগ করা হলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক প্রথম আলোকে বলেন, হেনস্তার শিকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে আজ শুক্রবার সকালে নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। ওই মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাজিম উদ্দিন ধানমন্ডি ১৫ থকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় চলাচলরত রমজান পরিবহনের কন্ডাক্টর। ভাড়া নিয়ে কথা–কাটাকাটির জের ধরে তাঁদের দুজনের মধ্যে মারামারি হয়। ছাত্রীটি মোহাম্মদপুরের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন।

আজ সন্ধ্যায় পাঠানো র‍্যাব-৪–এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রমজান পরিবহনের একটি বাস ধানমন্ডি ১৫ থেকে মোহাম্মদপুরের বছিলায় যাচ্ছিল। বাসটি বছিলার মেট্রো হাউজিংয়ের সামনে পৌঁছালে চালকের সহকারী মো. নিজাম উদ্দিন বাসটির যাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর দিকে তাকিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। এতে ওই তরুণী প্রতিবাদ করায় নাজিম উদ্দিন তাঁর সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন এবং তাঁকে চড় মারেন। একপর্যায়ে তরুণীও আত্মরক্ষার্থে নিজের পায়ের জুতা খুলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দিনকে আঘাত করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুই শিশুর ঝগড়ায় জড়ালেন বড়রা, বড় ভাইয়ের হাতে খুন ছোট ভাই
  • রাজশাহীতে ‘প্রেমিকার’ সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • প্রেমিকার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে মারধরের শিকার কিশোরের মৃত্যু
  • মোহাম্মদপুরে বাসে বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীকে হেনস্তার ভিডিও ভাইরাল, হেনস্তাকারী গ্রেপ্তার
  • সাতক্ষীরায় ৮ দিনেও খোঁজ মেলেনি অপহৃত কিশোরীর
  • ছয় বছর আগে চট্টগ্রাম থেকে ‘অপহরণ’, ফেনী থেকে মিলল কাস্টমস কর্মকর্তার লাশ