গাজীপুরে ছাত্রলীগ নেতাকে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ
Published: 12th, June 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে রিয়াদ আদনান অন্তর (৩৫) নামে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের এক সাবেক কেন্দ্রীয় নেতাকে অপহরণ করে অমানবিক নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে একদল যুবকের বিরুদ্ধে।
প্রায় দুই সপ্তাহ আগে সংঘটিত এ ঘটনায় বুধবার (১১ জুন) শ্রীপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর স্ত্রী ইসরাত জাহান আঁখি।
অপহৃত রিয়াদ আদনান অন্তর শ্রীপুর পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহসম্পাদক।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, অপহরণের ঘটনাটি ঘটে গত ২৮ মে রাত ৯টার দিকে। শ্রীপুর পৌর শহরের মাওনা চৌরাস্তা এলাকার মালেক মাস্টার মার্কেটের সামনে থেকে রিয়াদকে তুলে নেয় একদল যুবক। এ সময় তিনি মেয়ের ওষুধ কিনে অটোরিকশায় বাসায় ফিরছিলেন। অভিযুক্তরা নিজেদের এনসিপির নেতা পরিচয় দিয়ে রিকশার গতিরোধ করে রিয়াদকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যায় স্থানীয় ইয়াকুব আলী মাস্টার টাওয়ারের পেছনের একটি কক্ষে। সেখানে হাত-পা বেঁধে তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়।
ফেসবুক পোস্ট
তার স্ত্রী ইসরাত জাহান বলেন, ‘‘তারা আমার স্বামীকে ব্যাপক নির্যাতনের পর মোবাইলে ফোন দেয় এবং অপর প্রান্ত থেকে আমি ‘আমাকে বাঁচাও’ শুনতে পাই। এরপর তারা ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরদিন (২৯ মে) ভোরে এমসি বাজার এলাকায় অভিযুক্তরা প্রথম দফায় ২ লাখ টাকা, একটি আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স, মোবাইলের বক্স ও কাগজপত্র আদায় করে। পরে আরও ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করে দেওয়ার পর ২৯ মে রাত ১০টার দিকে একই এলাকার নির্জন স্থানে রিয়াদকে ফেলে রেখে যায়।’’
এই পুরো ঘটনা মোবাইল ফোনে রেকর্ড করা কথোপকথন এবং সিসিটিভি ফুটেজের মাধ্যমে প্রমাণিত বলে দাবি করেছেন ইসরাত জাহান আঁখি।
অভিযুক্তরা হলেন, মো.
এদিকে অভিযুক্ত আলিফ মোড়ল নিজেই একটি ফেসবুক পোস্টে মুক্তিপণ আদায়ের কথা স্বীকার করে লেখেন, তিনি মোটরসাইকেলে করে দুই দফায় ৫ লাখ ৪৫ হাজার টাকা এনেছেন এবং নিজে ১০ হাজার টাকা ভাগ পেয়েছেন। বড় ভাইদের ফাঁদে পা দিয়ে তিনি এসবে জড়িয়েছেন। জীবনেও আর এমন করবেন না বলে জানান।
তবে এনসিপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তরা কেউ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন। শ্রীপুর উপজেলা এনসিপির আহ্বায়ক প্রার্থী আবু রায়হান মেজবাহ বলেন, ‘‘তারা কেউ আমাদের দলের নেতা নয়। পুলিশকে বলা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘তারা মিছিল-ছবিতে থাকলেও মূলত কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তাদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে কোনো দায় নেওয়া হবে না।’’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, ‘‘ভুক্তভোগীর স্ত্রী বিষয়টি আমাকে ফোনে জানিয়েছেন। আমি বিষয়টি নজরে নিয়েছি। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে।’’
ঢাকা/রফিক/টিপু
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাতক্ষীরায় ৮ দিনেও খোঁজ মেলেনি অপহৃত কিশোরীর
সাতক্ষীরার আশাশুনি থেকে আট দিন আগে অপহরণ হওয়া এক কিশোরীর খোঁজ এখনো মেলেনি। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হলেও মেয়েটিকে খুঁজে বের করতে পারেনি পুলিশ। মেয়েকে জীবিত ফেরত পেতে ব্যাকুল হয়ে আছে পরিবার।
বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) বিকেলে অপহৃতের বাবা বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানান।
আরো পড়ুন:
আইজিপির সঙ্গে কমনওয়েলথ প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ
নির্বাচনে পুলিশকে নিরপেক্ষ থাকতে হবে: ডিএমপি কমিশনার
মেয়েটির বাবার করা অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, তার ১৫ বছর বয়সী মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে কু-প্রস্তাব দেন আশাশুনির খড়িয়াটী গ্রামের পীর আলী সরদারের ছেলে গোলাম কিবরিয়া। প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত ২২ অক্টোবর মাদারাসায় যাওয়ার পথে গোলাম কিবরিয়া তার সহযোগীদের সহায়তায় মেয়েটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর থেকে মেয়ের কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। অভিযুক্তরা তাকে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছে। এ ঘটনায় আশাশুনি থানায় জিডি করেন মেয়েটির বাবা, যার নং ১৩১২, তাং- ২৭/১০/২৫।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত গোলাম কিবরিয়ার মোবাইলে কল করা হলেও তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
আশাশুনি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সামসুল আরেফিন বলেন, “মেয়েটির পরিবার সাধারণ ডায়েরি করেছে। মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আশা করছি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে তাকে উদ্ধার করতে পারব।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ