Samakal:
2025-11-02@00:29:35 GMT

নিহত সেনাপ্রধান কে এই বাঘেরি

Published: 14th, June 2025 GMT

নিহত সেনাপ্রধান কে এই বাঘেরি

ইসরায়েলের বিমান হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি নিহত হয়েছেন। তিনি ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ ও দেশের সর্বোচ্চ পদস্থ সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। শুক্রবার ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন তাঁর নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে।

বাঘেরি মোহাম্মদ হোসেইন আফশোরদি নামেও পরিচিত। তাঁর জন্ম সাল নিয়ে পরস্পরবিরোধী তথ্য রয়েছে। মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ বলছে, তিনি ১৯৬০ সালে জন্মগ্রহণ করেন, অন্যরা সালটি ১৯৫৮ বলে উল্লেখ করেছেন। শিক্ষাজীবনে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি অর্জন করেন এবং পরে তারবিয়াত-ই মোদারেস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাজনৈতিক ভূগোলে ডক্টরেট ডিগ্রি নেন।

ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) ও ইরানের পুরো সামরিক বাহিনীর কার্যক্রম দেখভাল করতেন। পাশাপাশি তিনি এসব বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্বেও ছিলেন। তাঁর সামরিক জীবন সম্পর্কে বিশদভাবে খুব বেশি কিছু জানা না গেলেও তিনি আইআরজিসিতে একজন অভিজ্ঞ ও গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আন্তর্জাতিক নানা নিষেধাজ্ঞা ও একাডেমিক অর্জনের বাইরে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে তথ্য খুব কমই প্রকাশ পেয়েছে।

১৯৭৯ সালে ইরানি বিপ্লবের পর ১৯৮০ সালে আইআরজিসিতে যোগ দেন বাঘেরি। ওই বছরই শুরু হয় ইরান-ইরাক যুদ্ধ, যেখানে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। এই যুদ্ধে তাঁর বড় ভাই হাসান বাঘেরি নিহত হন। 

ভাইয়ের মৃত্যুর পর ১৯৮৩ সালে আইআরজিসির গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হন মোহাম্মদ বাঘেরি। যুদ্ধ শেষে তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেন, যেমন– উপপ্রধান (ডেপুটি) গোয়েন্দা ও অপারেশনপ্রধান এবং সশস্ত্র বাহিনীর সাধারণ কার্যক্রমের প্রধান।

২০১৬ সালে তিনি মেজর জেনারেল সাইয়্যেদ হাসান ফিরোজাবাদির স্থলাভিষিক্ত হয়ে আইআরজিসির চিফ অব স্টাফ হন। তিনি বিপ্লবী এই বাহিনীর একটি ‘এলিট ফোর্স’-এর সঙ্গেও সম্পৃক্ত ছিলেন, যাদের দায়িত্ব ছিল বিশেষ ও স্পর্শকাতর মিশন পরিচালনা করা, বিশেষ করে বিমানঘাঁটিভিত্তিক অভিযানের ক্ষেত্রে।

২০১৯ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সময় বাঘেরিকে যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনে। পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাঁকে রাশিয়ায় ড্রোন সরবরাহের অভিযোগে নিষিদ্ধ করে। এ ছাড়া কানাডা ও যুক্তরাজ্যও ২০২২ সালে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর দেশে চলমান বিক্ষোভ দমন অভিযানের জন্য তাঁকে নিষেধাজ্ঞা দেয়।

বাঘেরির মৃত্যুর পর ইরান সরকার আহমাদ বাহিদিকে (সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) অন্তর্বর্তী সেনাপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে।

বাঘেরির পাশাপাশি ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ডস কর্পসের প্রধান হোসেইন সালামি ও সশস্ত্র বাহিনীর উপপ্রধান গোলাম আলি রাশিদও নিহত হয়েছেন। এই হামলায় ইরানের ছয় পরমাণু বিজ্ঞানীও প্রাণ হারিয়েছেন।

এই হামলা এমন সময় ঘটল, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও ইরান আগামী রোববার ওমানের মাসকাটে পারমাণবিক আলোচনার আরেকটি রাউন্ড শুরু করতে যাচ্ছিল। হামলার ফলে আলোচনা স্থবির হয়ে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর দ্য ইকোনমিক টাইমসের।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল সশস ত র ব হ ন র আইআরজ স

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ