স্নাতকের ফলাফল ছাড়াই স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নিল চবির ফিন্যান্স বিভাগ
Published: 23rd, June 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ফিন্যান্স বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে গত ১৯ জুন। এর ১ মাস পূর্বে গত ১৯ মে বিভাগটির ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
এ ঘটনায় হতভম্ব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে সেশনজট দূর করতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে দাবি বিভাগটির।
জানা গেছে, বিভাগটির ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা গত ১৯ মে শুরু হয় । ইতোমধ্যে ২৭ মে ও ১৮ জুন আরও দু’টি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিকে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকের অনানুষ্ঠানিক ফলাফল প্রকাশ করা গত ১৯ জুন।
আরো পড়ুন:
চাকসু নির্বাচনের দাবি বিপ্লবী ছাত্রসমাজের
চবির প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ১ জুলাই
তবে ১৯ জুনের পূর্বেই বিভাগটির স্নাতকের অনানুষ্ঠানিক ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “সপ্তম সেমিস্টারে কিছু রিটেক, ইম্প্রুভ থাকার কারণে অষ্টম সেমিস্টারের ফলাফল প্রস্তুত থাকা সত্বেও আমরা দিতে পারিনি। তবে রেজাল্ট প্রস্তুত থাকায় সেটা খসড়া করে শিক্ষার্থীদের ১৯ জুনের আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
এ বিষয়ে ফিন্যান্স বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নেছারুল করিম বলেন, “আমরা মূলত সেশনজট দূর করতে ফল প্রকাশের পূর্বে স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেওয়া শুরু করেছি। আর স্নাতকের অষ্টম সেমিস্টারের পরীক্ষার পরই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা মাস্টার্সে প্রভিশনাল এডমিশন পান। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে রয়েছে। তবে সেখানে শর্ত রয়েছে, অষ্টম সেমিস্টারে কোনো শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হলে তিনি স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা দিতে পারবেন না।”
এদিকে বিভাগের অষ্টম সেমিস্টারে একটি কোর্সে অকৃতকার্য হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন এক নারী শিক্ষার্থী। অথচ স্নাতকোত্তরের পরীক্ষায় তিনিও অংশ নিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মো. এনায়েত উল্যা পাটওয়ারী বলেন, “স্নাতকের ফলাফল প্রকাশের পূর্বে স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা নেওয়ার কোনো নিয়ম নেই। কেউ যদি সেশনজট দূর করতে চান, তাহলে কেনো তিনি দ্রুত ফল প্রকাশ করছেন না?”
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র র পর ক ষ র ফল ফল ফল ফল প ১৯ জ ন
এছাড়াও পড়ুন:
আদালতে জেরার মুখে সাবেক সিইসি নূরুল হুদা বললেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে’
প্রায় এক ঘণ্টা কাঠগড়ায় বিমর্ষ হয়ে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে ছিলেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা। আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) মুস্তাফিজুর রহমান কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা নূরুল হুদার কাছে জানতে চান, তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন কি না?
জবাবে নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমি কোনো শপথ ভঙ্গ করিনি। একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় পাঁচজনকে দিয়ে। একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনার থাকেন, বাকি চারজন থাকেন নির্বাচন কমিশনার। একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধায়নে ১৭ লাখ কর্মকর্তা–কর্মচারী কাজ করেন। একটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যন্ত অঞ্চলের কোনো গ্রামের ভোটসংক্রান্ত সব তথ্য ঢাকায় বসে জানা সম্ভব নয়। প্রতিটি ভোটকেন্দ্র মনিটরিং করার কোনো সুযোগ থাকে না।’
এ পর্যায়ে সিএমএম সাবেক সিইসি নূরুল হুদার উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব ফেয়ার নির্বাচন করা? তখন নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। তবে নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য অনেক স্টেকহোল্ডার জড়িত থাকে। নির্বাচন আয়োজনের পর রিটার্নিং কর্মকর্তা গেজেট প্রকাশের পর নির্বাচন কমিশনের আর কিছুই করার থাকে না। বিষয়টি উচ্চ আদালতের ওপর ন্যস্ত থাকে।’
এ পর্যায়ে সিএমএম নূরুল হুদার উদ্দেশে বলেন, নির্বাচনের শিডিউল (তফসিল) ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব কী? জবাবে নূরুল হুদা বলেন, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, নির্বাচনের পর গেজেট হলে নির্বাচন কমিশনের আর কোনো ক্ষমতা থাকে না।’
এ পর্যায়ে সিএমএম সাবেক এই সিইসির কাছে নির্বাচনের আগে তৎকালীন আইজিপির (পুলিশের মহাপরিদর্শক) ভূমিকা জানতে চান। জবাবে নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘২০১৮ সালে নির্বাচনের আগে সাবেক আইজিপি আইনশৃঙ্খলার বিষয়টি মনিটরিং করেছিলেন। যে কারণে ওই নির্বাচনে সহিংসতার ঘটনা ঘটেনি।’
একপর্যায়ে আত্মপক্ষ সমর্থন করতে গিয়ে নূরুল হুদা আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, ২০১৮ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। সেই বিতর্কের দায় নির্বাচন কমিশনের নয়।’
নূরুল হুদার বক্তব্যের পর তাঁর আরেক আইনজীবী ওবায়দুল ইসলাম আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত, উনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। উনি পটুয়াখালীতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি ভীষণ অসুস্থ। তাঁর ডায়াবেটিস রয়েছে।’
নূরুল হুদাসহ আওয়ামী লীগ আমলের সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করে বিএনপি। দুপুরে ওই মামলা হওয়ার পর সন্ধ্যায় একদল লোক ‘মব’ তৈরি করে নূরুল হুদার উত্তরার বাসা থেকে তাঁকে ধরে এনে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার পর পুলিশে সোপর্দ করে। আজ পুলিশ ওই মামলায় নূরুল হুদাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে। উভয় পক্ষের শুনানি নিয়ে আদালত নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আদালতের কাঠগড়ায় নূরুল হুদার এক ঘণ্টা
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ কে এম নূরুল হুদার দুই হাত পেছনে নিয়ে হাতকড়া পরিয়ে সিএমএম আদালতকক্ষে তোলা হয়। তখন সময় বিকেল ৪টা ১০ মিনিট। কাঠগড়ায় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন নূরুল হুদা।
তখন একজন পুলিশ কনস্টেবল তাঁর মাথা থেকে হেলমেটটি খুলে ফেলেন। পরে চশমা পরেন নূরুল হুদা। একজন আইনজীবী জানতে চেয়েছিলেন তিনি কেমন আছেন? জবাবে নূরুল হুদা ঘাড় ডান দিকে ঘুরিয়ে ইঙ্গিত দিলেন, ভালো। এরপর কাঠগড়ায় মুখ ভার করে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।
নূরুল হুদাকে কাঠগড়ায় তোলার পাঁচ মিনিট পর ঢাকার সিএমএম মোস্তাফিজুর রহমান এজলাসে আসেন। নূরুল হুদার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন গ্রেপ্তার সাবেক সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন ও মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফয়সাল বিপ্লব। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সাবিনা আক্তারকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এরপর দিনের ভোট রাতে করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন খানের মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক সিইসি নূরুল হুদার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরতে শুরু করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটার (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী।
সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদাকে আজ সোমবার বিকেলে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। প্রহসনের নির্বাচন করার অভিযোগে করা একটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নূরুল হুদার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত