ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন এলাকায় রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনে এক যাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে রেলওয়ের কর্মচারী (ট্রেনের পিএ অপারেটর) সাইফুল ইসলামকে (২৮) আটক করা হয়েছে। 

দুপুরে এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বোনারপাড়া রেলওয়ে থানার ওসি খায়রুল ইসলাম তালুকদার। ফোনে তিনি বলেন, ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি দাঁড়িয়েছিল। দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ট্রেনের টয়লেটে একজন নারী যাত্রীকে রেলওয়ের পিএ অপারেটর সাইফুল ইসলাম ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী নারী বিষয়টি ট্রেনে দায়িত্বরত রেলওয়ে পুলিশকে জানান। পরে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা সাইফুলকে আটক করেন। ট্রেনটি বগুড়ার সান্তাহার জংশন স্টেশনে পৌঁছানোর পর ভুক্তভোগী ও অভিযুক্তকে নামিয়ে নেওয়া হবে। পরে সিদ্ধান্ত হলে তাদের কমলাপুরে ফেরত পাঠানো হবে। ঘটনাস্থল ঢাকার কমলাপুর হওয়ায় সেখানেই মামলা করা হবে জানান তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আটক র কমল প র র লওয়

এছাড়াও পড়ুন:

ফ্রান্সে পত্রিকার ‘সর্বশেষ’ হকার আলী আকবরকে জাতীয় সম্মাননা দিচ্ছেন মাখোঁ

নাম আলী আকবর। থাকেন ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে। শহরটির পুরোনো অধিবাসীদের কাছে তিনি খুব পরিচিত মুখ। আকবর প্রতিদিনের পত্রিকা বগলদাবা করে বেরিয়ে পড়েন। মুখে বলতে থাকেন দৈনিক পত্রিকার তরতাজা শিরোনামগুলো। এভাবেই পত্রিকা পৌঁছে দেন পাঠকের হাতে। ৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এ কাজ করছেন তিনি।

এটুকু পড়েই বোঝা যাচ্ছে আলী আকবর একজন সংবাদপত্রের হকার। পাঠকের হাতে ছাপা পত্রিকা পৌঁছে দেওয়া তাঁর কাজ। তবে আকবরের আলাদা বিশেষত্ব আছে। হারিয়ে যেতে বসা পেশা পত্রিকার হকারি প্যারিসে এখন একমাত্র তিনিই ধরে রেখেছেন। অর্থাৎ প্যারিস তথা পুরো ফ্রান্সে পত্রিকার সর্বশেষ হকার তিনি। সম্ভবত ইউরোপেও।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ দেশটির অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ জাতীয় সম্মাননা ‘অর্ডার অব মেরিট’–এর জন্য আলী আকবরকে আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন দিয়েছেন। এটা সে দেশের সর্বোচ্চ সম্মাননারও একটি। আগামী মাসে আলী আকবরকে এ সম্মাননা দেওয়া হবে। ফরাসি সংস্কৃতিতে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি এ সম্মাননা পাচ্ছেন।

পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডিতে জন্ম আলী আকবরের। ষাটের দশকের শেষ ভাগে ইউরোপে পাড়ি জমান। শুরুতে যান নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডামে। সেখানে তিনি একটি ক্রুজ জাহাজে কাজ পান। পরে ১৯৭২ সালে ফ্রান্সে আসেন। বছরখানেক পর থিতু হন প্যারিসে। পত্রিকার হকারির কাজ নেন।

মজার বিষয় হলো, প্রেসিডেন্ট মাখোঁ নিজেও ছাত্রজীবনে আলী আকবরের কাছ থেকে পত্রিকা কিনতেন।

স্মৃতি হাতড়ে আলী আকবর বলেন, ‘১৯৭৩ সালের দিকে আমি যখন প্যারিসে পত্রিকার হকারি শুরু করি, তখন ৩৫ থেকে ৪০ জন এ কাজ করতেন। এখন আর কেউ নেই। আমি একাই রয়ে গেছি।’

দিন বদলের স্রোতে ছাপা পত্রিকা ক্রমেই জনপ্রিয়তা হারিয়েছে। মানুষ ডিজিটাল মাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। সময়ের এই বাঁকবদলে পত্রিকার হকাররাও ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছেন, পেশা বদলে ফেলছেন।

আলী আকবর বলেন, ‘আমি খুবই হতাশ। এখন সবকিছু ডিজিটাল মাধ্যমে চলে। মানুষ শুধু নিজের টেলিফোন (মুঠোফোন) দেখতে চায়।’

১৯৭৩ সালের দিকে আমি যখন প্যারিসে পত্রিকার হকারি শুরু করি, তখন ৩৫ থেকে ৪০ জন এ কাজ করতেন। এখন আর কেউ নেই। আমি একাই রয়ে গেছি।আলী আকবর, প্যারিসে পত্রিকার হকার

কেতাদুরস্ত ফ্যাশনশিল্পের জন্য পরিচিত প্যারিসের সেইন্ট জার্মেই এলাকার ক্যাফেগুলো ঘুরে আলী আকবর এখন বিখ্যাত ফরাসি পত্রিকা লা মঁদের মাত্র ৩০ কপি বিক্রি করতে পারেন। তিনি জানান, পত্রিকা বিক্রির টাকার অর্ধেক তিনি পান। তবে অবিক্রীত পত্রিকাগুলো ফেরত দেওয়ার সুযোগ নেই।

অথচ একসময় দৃশপট ছিল পুরো উল্টো। আলী আকবর জানান, ইন্টারনেট জমানার আগে পত্রিকার সন্ধ্যাকালীন মুদ্রণের পর প্রথম ঘণ্টায় প্রায় ৮০ কপি বিক্রি হয়ে যেত। তিনি বলেন, ‘সেসব দিনে পাঠকেরা দৈনিক পত্রিকা কেনার জন্য আমার চারপাশে ভিড় করতেন। আর এখন এক কপি পত্রিকা বিক্রি করতে আমাকেই পাঠকের পিছে পিছে ছুটতে হয়।’

পথে ঘুরে ঘুরে পাঠকের হাতে দৈনিক পত্রিকা পৌঁছে দেন আলী আকবর

সম্পর্কিত নিবন্ধ