প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়ে জিডিপির ৫% করবে ন্যাটো দেশগুলো
Published: 26th, June 2025 GMT
পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো তাদের জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় বাড়াতে সম্মত হয়েছে। আগামী ১০ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে। গতকাল বুধবার নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ শহরে দুই দিনব্যাপী সম্মেলন শেষে জোটভুক্ত ৩২টি দেশ এক যৌথ বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সদস্যরাষ্ট্রগুলো ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিবছর জিডিপির ৫ শতাংশ মূল প্রতিরক্ষা চাহিদা এবং প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট খাতে বিনিয়োগের অঙ্গীকার করছে। এ চুক্তিকে ‘সবার জন্য একটি মহান বিজয়’ বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জিডিপির ৫ শতাংশ দুই ভাগে ভাগ করা হবে। সাড়ে ৩ শতাংশ বরাদ্দ হবে মূল প্রতিরক্ষা খাতে। অপর দিকে বাকি দেড় শতাংশ ব্যয় করা হবে নিরাপত্তাসংশ্লিষ্ট অন্যান্য খাত, যেমন সাইবার নিরাপত্তা ও অবকাঠামো উন্নয়নে।
দ্বিতীয় মেয়াদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোকে জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর কথা বলে আসছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। না হলে ন্যাটো থেকে বের হয়ে যাওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন তিনি। তাই এবারের সম্মেলনে সবার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ট্রাম্প। তবে গতকাল সম্মেলনের শেষ দিন বেশ ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেছে তাঁকে।
এ জন্য অবশ্য আয়োজকদের কিছুটা কৃতিত্ব রয়েছে। সম্মেলনের শুরু থেকেই ট্রাম্পকে সন্তুষ্ট রাখতে বেশ সতর্কতার সঙ্গে সবকিছু করা হয়েছিল।
প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, এটি সবার জন্য একটি বিশাল বিজয়। আমরা খুব শিগগিরই সমতায় পৌঁছাব। আর এটাই হওয়া উচিত। আমি দীর্ঘদিন ধরে তাদের (ন্যাটোভুক্ত দেশকে) জিডিপির ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর কথা বলে আসছি। এখন তারা সেটাই করছে। আমি মনে করি, এটি একটি বড় খবর হতে যাচ্ছে।’
সম্মেলনের আয়োজক ন্যাটোর মহাসচিব মার্ক রুত্তে সাংবাদিকদের জানান, মঙ্গলবার নেদ্যারল্যান্ডসের রাজা উইলেম আলেক্সান্দার রাজপ্রাসাদে ট্রাম্পের সম্মানে নৈশভোজ আয়োজন করেছিলেন। নৈশভোজে ট্রাম্প ‘ফুরফুরে মেজাজে’ ছিলেন।
মার্ক রুত্তে বলেন, ‘নিরাপদ থাকতে হলে আমাদের আরও এগিয়ে আসতে হবে, এ বিষয়ে সব মিত্রদেশ একমত।’ তিনি আরও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোর প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে ইউরোপের দেশগুলো ও কানাডাকে জোটের ‘ভার বহনের’ বড় একটি অংশ নিজেদের কাঁধে তুলে নিতে হবে।
ন্যাটোর মিত্ররা বলছে, রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবিলার জন্য প্রতিরক্ষা খাতের ব্যয় বৃদ্ধি যেমন জরুরি, তেমনি ট্রাম্পকে জোটে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত রাখার জন্যও দরকার এটি। কারণ, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছেন, ন্যাটোর প্রতিরক্ষায় ইউরোপের দেশগুলো খুব সামান্য অর্থ ব্যয় করে।
এ প্রসঙ্গে বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী বার্ট ডে ওয়েভার বলেন, ‘ইউরোপিয়ান হিসেবে আমাদের বোঝা উচিত, ইতিহাস থেকে আমাদের দীর্ঘবিরতি নেওয়ার দিন এখন শেষ।’ তিনি আরও বলেন, এ ‘কঠিন মুহূর্তে’ ইউরোপকে তার নিজের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ড প র ৫ শত র জন য ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
জকসু নির্বাচন: ছাত্রদলের প্যানেলকে ‘ভাড়াটিয়া’ আখ্যা দিয়ে একাংশের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও ছাত্রঅধিকার পরিষদ যৌথভাবে ঘোষিত প্যানেলকে কেন্দ্র করে তীব্র বিরোধ দেখা দিয়েছে। ঘোষিত প্যানেলকে ‘ভাড়াটিয়া’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রদলের একাংশের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ নামের সমন্বিত প্যানেল ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
বিচারকের ছেলে হত্যার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ
নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে আশুগঞ্জ সার কারখানায় সমাবেশ
এ সময় কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরসহ শাখা ছাত্রদলের বহু নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। প্যানেল ঘোষণার পরই ১৮তম ব্যাচের ৩০–৩৫ জনের একটি গ্রুপ স্লোগান দিতে শুরু করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
তারা ‘ভুয়া ভুয়া’, ‘আঠারো আঠারো’, ‘গর্জে উঠো আঠারো’, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে আঠারো’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে প্যানেল ঘোষণার প্রতিবাদ জানান। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিলও করেন।
তাদের অভিযোগ, ঘোষিত প্যানেলটি ছাত্রদলের প্রকৃত কর্মীদের বাদ দিয়ে ‘ভাড়াটিয়া’ দিয়ে সাজানো হয়েছে।
বিক্ষোভরত নেতাকর্মীরা দাবি করেন, জকসু নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলে যদি ১৮ ব্যাচের কেউ স্থান পায়, তাহলে তাকে অবশ্যই ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী হতে হবে এবং ব্যাচটি থেকে পাঁচজনকে স্থান দিতে হবে। অন্যথায় প্যানেল ঘোষণা হওয়ার আগে প্রতিটি মনোনীত প্রার্থীর সাংগঠনিক পরিচয় স্পষ্ট করে জানাতে হবে।
এসব দাবি না মানা হলে ‘ঐক্যবদ্ধ ১৮ ব্যাচ’ নামে আলাদা এক্সক্লুসিভ প্যানেল ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এদিকে ঘোষিত সমন্বিত প্যানেলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব (সহ-সভাপতি), শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক খাদিজাতুল কুবরা (সাধারণ সম্পাদক) এবং আহ্বায়ক সদস্য বিএম আতিকুর রমান তানজিল (সহ-সাধারণ সম্পাদক)।
প্যানেলের অন্যান্য সম্পাদক পদে রয়েছেন—মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক অনিক কুমার দাস, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক নুসরাত চৌধুরী জাফরিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. মাশফিকুল ইসলাম রাইন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শাওন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক অর্ঘ্য শ্রেষ্ঠ দাস, আন্তর্জাতিক সম্পাদক অপু মুন্সী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক তাকরিম আহমেদ, ক্রীড়া সম্পাদক মো. কামরুল হাসান নাফিজ, পরিবহন সম্পাদক মাহিদ হাসান, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক মো. আনন বিন রহমান এবং পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক রিয়াসাল রাকিব।
নির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন—ইমরান হাসান ইমন, সাদমান সাম্য, সুলতান মাহমুদ শুভ, মনিরুজ্জামান মনির, তৌহিদুল ইসলাম তানিম ও মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ। আরও একজন নির্বাহী সদস্যের নাম পরে জানানো হবে বলে জানা গেছে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী