প্রথম ভারতীয় হিসেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে পা রাখলেন শুভাংশু শুক্লা
Published: 27th, June 2025 GMT
আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) পা রেখে ইতিহাস গড়েছেন ভারতীয় মহাকাশচারী গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লা। তিনিই প্রথম ভারতীয়, যিনি কক্ষপথে অবস্থিত এই মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্রে প্রবেশ করলেন।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বেসরকারি মহাকাশ সংস্থা অ্যাক্সিয়ম স্পেস পরিচালিত অভিযান অ্যাক্সিয়ম-৪ সফলভাবে মহাকাশ স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার ভোরে চার সদস্যের ক্রু সেখানে প্রবেশ করেন। সম্প্রচারে সেই দৃশ্য সরাসরি দেখা যায়।
এর আগে বুধবার অ্যাক্স-৪ মিশনটি উৎক্ষেপণ করা হয়। এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন নাসার সাবেক অভিজ্ঞ মহাকাশচারী পেগি হুইটসন। পাইলটের দায়িত্ব পালন করেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুক্লা। বাকি দুই সদস্য হলেন পোল্যান্ডের স্লাভোস উজনানস্কি-ভিসনেভস্কি এবং হাঙ্গেরির তিবোর কাপু। তাঁরা সবাই আগামী দুই সপ্তাহ আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গবেষণা ও বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক কার্যক্রমে অংশ নেবেন।
শুভাংশু শুক্লা ভারতীয় বিমানবাহিনীর একজন অভিজ্ঞ কর্মকর্তা। তাঁর এই মহাকাশযাত্রা ভারতের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। কারণ, এর আগে ১৯৮৪ সালে মাত্র একবার কোনো ভারতীয় মহাকাশে গিয়েছিলেন। সেবার রাকেশ শর্মা সোভিয়েত ইউনিয়নের সয়ুজ ক্যাপসুলে চড়ে মহাকাশ পাড়ি দিয়েছিলেন। দীর্ঘ ৪১ বছর পর আবার এক ভারতীয়ের মহাকাশযাত্রা নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিল।
অভিযানটি নাসা, ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো, ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থা (ইসা) এবং স্পেসএক্সের যৌথ উদ্যোগে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এতে আরও অংশ নেবেন ইউরোপের দুই মহাকাশচারী। চার দশকের বেশি সময় পর নিজ নিজ দেশের পক্ষ থেকে তাঁরা মহাকাশ অভিযানে অংশ নিচ্ছেন।
দুই সপ্তাহের এই অভিযানে চার সদস্যের ক্রু দলটি মোট ৬০টি বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করবেন। এর মধ্যে সাতটি গবেষণার পরিকল্পনা করেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো)।
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) অ্যাক্স-৪ মিশনে গ্রুপ ক্যাপ্টেন শুভাংশু শুক্লার জন্য একটি আসন ও প্রশিক্ষণের খরচ বাবদ প্রায় ৫ কোটি ৯০ লাখ ডলার ব্যয় করেছে। সংস্থাটি বলছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে (আইএসএস) এই সফরের মাধ্যমে শুক্লা যে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন, তা ভারতের ভবিষ্যৎ মানব মহাকাশ অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ইসরো জানিয়েছে, ২০২৭ সালের মধ্যে তারা প্রথমবারের মতো মহাকাশে মানুষসহ অভিযান সম্পন্ন করতে চায়। পাশাপাশি ২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন স্থাপন এবং ২০৪০ সালের মধ্যে কোনো ভারতীয়কে চাঁদের মাটিতে নামানোর পরিকল্পনাও রয়েছে তাদের।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জকসু নির্বাচন: ছাত্রদলের প্যানেলকে ‘ভাড়াটিয়া’ আখ্যা দিয়ে একাংশের
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ও ছাত্রঅধিকার পরিষদ যৌথভাবে ঘোষিত প্যানেলকে কেন্দ্র করে তীব্র বিরোধ দেখা দিয়েছে। ঘোষিত প্যানেলকে ‘ভাড়াটিয়া’ উল্লেখ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন ছাত্রদলের একাংশের নেতাকর্মীরা।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ‘ঐক্যবদ্ধ নির্ভীক জবিয়ান’ নামের সমন্বিত প্যানেল ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
বিচারকের ছেলে হত্যার প্রতিবাদে ইবিতে বিক্ষোভ
নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে আশুগঞ্জ সার কারখানায় সমাবেশ
এ সময় কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরসহ শাখা ছাত্রদলের বহু নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। প্যানেল ঘোষণার পরই ১৮তম ব্যাচের ৩০–৩৫ জনের একটি গ্রুপ স্লোগান দিতে শুরু করলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
তারা ‘ভুয়া ভুয়া’, ‘আঠারো আঠারো’, ‘গর্জে উঠো আঠারো’, ‘অন্যায়ের বিরুদ্ধে আঠারো’ ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে প্যানেল ঘোষণার প্রতিবাদ জানান। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিলও করেন।
তাদের অভিযোগ, ঘোষিত প্যানেলটি ছাত্রদলের প্রকৃত কর্মীদের বাদ দিয়ে ‘ভাড়াটিয়া’ দিয়ে সাজানো হয়েছে।
বিক্ষোভরত নেতাকর্মীরা দাবি করেন, জকসু নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলে যদি ১৮ ব্যাচের কেউ স্থান পায়, তাহলে তাকে অবশ্যই ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী হতে হবে এবং ব্যাচটি থেকে পাঁচজনকে স্থান দিতে হবে। অন্যথায় প্যানেল ঘোষণা হওয়ার আগে প্রতিটি মনোনীত প্রার্থীর সাংগঠনিক পরিচয় স্পষ্ট করে জানাতে হবে।
এসব দাবি না মানা হলে ‘ঐক্যবদ্ধ ১৮ ব্যাচ’ নামে আলাদা এক্সক্লুসিভ প্যানেল ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এদিকে ঘোষিত সমন্বিত প্যানেলে গুরুত্বপূর্ণ পদ পেয়েছেন শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব (সহ-সভাপতি), শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক খাদিজাতুল কুবরা (সাধারণ সম্পাদক) এবং আহ্বায়ক সদস্য বিএম আতিকুর রমান তানজিল (সহ-সাধারণ সম্পাদক)।
প্যানেলের অন্যান্য সম্পাদক পদে রয়েছেন—মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র সম্পাদক অনিক কুমার দাস, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক নুসরাত চৌধুরী জাফরিন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মো. মাশফিকুল ইসলাম রাইন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শাওন, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক অর্ঘ্য শ্রেষ্ঠ দাস, আন্তর্জাতিক সম্পাদক অপু মুন্সী, সাহিত্য ও সংস্কৃতি সম্পাদক তাকরিম আহমেদ, ক্রীড়া সম্পাদক মো. কামরুল হাসান নাফিজ, পরিবহন সম্পাদক মাহিদ হাসান, সমাজসেবা ও শিক্ষার্থীকল্যাণ সম্পাদক মো. আনন বিন রহমান এবং পাঠাগার ও সেমিনার সম্পাদক রিয়াসাল রাকিব।
নির্বাহী সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন—ইমরান হাসান ইমন, সাদমান সাম্য, সুলতান মাহমুদ শুভ, মনিরুজ্জামান মনির, তৌহিদুল ইসলাম তানিম ও মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ। আরও একজন নির্বাহী সদস্যের নাম পরে জানানো হবে বলে জানা গেছে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী