কারিশমার সতীন নন্দিতার যত প্রেম-বিয়েবিচ্ছেদ
Published: 27th, June 2025 GMT
কিছুদিন আগে মারা গেছেন বলিউড অভিনেত্রী কারিশমা কাপুরের প্রাক্তন স্বামী সঞ্জয় কাপুর। ব্যবসায়ী সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন কারিশমা ও সঞ্জয়ের বর্তমান স্ত্রী প্রিয়া সাচদেব। সঞ্জয়ের শেষকৃত্যে উপস্থিত ছিলেন তারা দুজনেই। তবে সঞ্জয়ের প্রথম স্ত্রী ফ্যাশন ডিজাইনার নন্দিতা মাহতানি ছিলেন না। ফলে এ নিয়ে বলিপাড়ায় কানাঘোষা চলছে। প্রাক্তন স্বামীকে বিদায় জানাতে শেষবারও কেন যাননি তা অবশ্য অজানা।
১৯৭৬ সালের জানুয়ারি মাসে মহারাষ্ট্রের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন নন্দিতা মাহতানি। বাবা-মা, ভাইবোনের সঙ্গে সেখানেই থাকতেন তিনি। তার বাবা ছিলেন ব্যবসায়ী। বাবার পথ অনুসরণ করে ক্যারিয়ার গড়েন নন্দিতার ভাই। নন্দিতা ও তার বোন দু’জনেই পেশায় ফ্যাশন ডিজাইনার। মুম্বাইয়ে স্কুল জীবনের পড়াশোনা শেষ করে উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমান নন্দিতা। লন্ডনের একটি কলেজ থেকে উচ্চতর ডিগ্রি নেন। ছোটবেলা থেকে ব্যবসায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করেন। কিছুদিনের জন্য পারিবারিক ব্যবসায় যুক্তও হন নন্দিতা। কিন্তু বেশি দিন সেখানে মন টেকেনি তার।
আরো পড়ুন:
আমাদের অনেক আগেই বিচ্ছেদ হওয়ার কথা ছিল: কাজল
৫০ বছর আগে ‘শোলে’ সিনেমার জন্য কে কত টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন?
১৯৯৮ সালে ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেন নন্দিতা। দুই বছর পর তার বোন লন্ডনে একটি ফ্যাশন স্টোর খোলেন। দোকান খোলার পর নন্দিতারও সেই দিকে আগ্রহ জন্মায়। পরে দুই বোন একসঙ্গে কাজ করতে শুরু করেন। বোনের সঙ্গে কাজ করার কিছুদিন পর নন্দিতা তার নিজের ব্যবসা শুরু করেন। লন্ডনের পাশাপাশি মুম্বাই, গোয়ায় নিজের ফ্যাশন স্টোর খোলেন তিনি। ক্যাটরিনা কাইফ, গৌরী খান, ডিনো মরিয়ার মতো তাবড় তাবড় তারকাদের পোশাক নকশা করেন তিনি। বেশ কয়েক বছর ভারতীয় তারকা ক্রিকেটার বিরাট কোহলির ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবেও কাজ করেন নন্দিতা।
২০১৯ সালে জনপ্রিয় কার্টুন সংস্থার সঙ্গে মিলে পোশাক তৈরি শুরু করেন নন্দিতা। নামকরা বহু পত্রিকার প্রচ্ছদের ফটোশুটও করেছেন। কানাঘুষা শোনা যায়, পেশাগত কাজ করতে গিয়ে একাধিক অভিনেতার সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান নন্দিতা। বলিপাড়ার অন্দরমহলে কান পাতলে শোনা যায়, বলিউড অভিনেতা ডিনো মরিয়ার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন নন্দিতা। তারা বিয়ে করারও পরিকল্পনা করেছিলেন।
লন্ডনে পড়াশোনার সময়ে সঞ্জয় কাপুরের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় নন্দিতার। দুই বছর সম্পর্কে থাকার পর ১৯৯৬ সালে বিয়ে করেন তারা। চার বছর সংসার করার পর ২০০০ সালে বিবাহবিচ্ছেদ হয় এই দম্পতির। বলিপাড়ার একাংশের দাবি, সঞ্জয়ের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর ডিনোর সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় হতে থাকে নন্দিতার। তাদের সম্পর্ককে পরবর্তী ধাপে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন ডিনো। কিন্তু সদ্য বিবাহবিচ্ছেদের পর নন্দিতা তা চাননি। ভবিষ্যৎ নিয়ে মতের অমিল হওয়ায় এ সম্পর্কে চিড় ধরে। পরে ডিনো-নন্দিতা সম্পর্কের ইতি টানেন।
অমিতাভ বচ্চনের পুত্র অভিষেক বচ্চনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান কারিশমা কাপুর খান। ২০০২ সালের অক্টোবর মাসে অমিতাভের ৬০তম জন্মদিন উদ্যাপন করার পাশাপাশি অভিষেক-কারিশমার সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে আনেন বচ্চন এবং কাপুর পরিবার। তাদের বাগদানও সম্পন্ন হয়। কিন্তু অভিষেকের সঙ্গে কারিশমার সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায়নি। বরং ভেঙে যায়।
২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে দিল্লির শিল্পপতি সঞ্জয় কাপুরের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেন কারিশমা কাপুর। নন্দিতার সঙ্গে আইনি বিচ্ছেদ হওয়ার ১০ দিনের মাথায় কারিশমাকে বিয়ে করেন সঞ্জয়। ১৩ বছর এক ছাদের তলায় সংসার করেন তারা। কিন্তু তাদের বিবাহিত জীবন সুখকর ছিল না। দুই সন্তানের বাবা-মা হওয়ার পরও ২০১৬ সালে বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন কারিশমা-সঞ্জয়। গুঞ্জন রয়েছে, কারিশমার সঙ্গে বিয়ের পরও সঞ্জয় প্রাক্তন স্ত্রী নন্দিতার সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখেন। এমনকি নিয়মিত শারীরিক চালিয়ে যান। বিষয়টি জানার পর আপত্তি জানান কারিশমা কাপুর। ফলে সঞ্জয় নানাভাবে কারিশমাকে অত্যাচার করতে থাকেন।
২০২১ সালে অভিনেতা বিদ্যুৎ জামওয়ালের সঙ্গে বাগদান সারেন নন্দিতা। আগরার তাজমহলে আংটিবদল করার পর তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান তারা। কিন্তু বিয়ের পিঁড়ি পর্যন্ত সেই সম্পর্ক এগোয়নি। দু’বছর পর বিদ্যুতের সঙ্গে ভেঙে যায় নন্দিতার সম্পর্ক।
সতীন কারিশমা কাপুরের চাচাতো ভাই রণবীর কাপুরের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন নন্দিতা। বলিউডের জোর গুঞ্জন, রণবীর-নন্দিতা ডেট করতেন। এক সাক্ষাৎকারে নন্দিতা প্রসঙ্গে রণবীর কাপুর বলেছিলেন—“আমার তখন সদ্য তারুণ্যের ছোঁয়া লেগেছে। নন্দিতাকে আমার খুব ভালো লাগত। সুন্দরী, নম্র স্বভাবের মেয়ে নন্দিতা। আমরা বেশ কয়েকবার নৈশভোজে গিয়েছিলাম।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব ব হব চ ছ দ র ন নন দ ত র নন দ ত নন দ ত র ব যবস য় ক জ কর হওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশের লাঠি নিয়ে তরুণকে পেটানোর ভিডিও ভাইরাল, ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা
নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুয়েল সাংমার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছ থেকে লাঠি কেড়ে নিয়ে দুর্জয় (১৮) নামের এক তরুণকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। মারধরের একটি ভিডিও ইতিমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় রায়হান কবীর নামের যুবদলের এক নেতা গত রোববার আটপাড়া আমলি আদালতে ইউএনওর বিরুদ্ধে একটি মামলার আবেদন করেন। পরে আদালতের বিচারক আবেদন আমলে নিয়ে ঘটনা তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কাছে মামলা করতে অনুমতি চান রায়হান।
মারধরের শিকার দুর্জয় উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় দিনমজুর। বাদী রায়হান কবীর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং মোবারকপুর গ্রামের প্রয়াত ফয়েজ উদ্দিনের ছেলে।
এলাকাবাসী, ইউএনও কার্যালয় ও মামলার আরজি সূত্রে জানা গেছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ২৪ মার্চ দুপুরে বানিয়াজান ইউনিয়ন পরিষদে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হয়। ইউনিয়নের ২ হাজার ৩৭ জন উপকারভোগীর মধ্যে জনপ্রতি ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। সেখানে চাল নিতে আসা উপকারভোগীরা সিরিয়াল না মানায় বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ ছাড়া চাল পাচারের খবর পেয়ে ইউএনও রুয়েল সাংমা সেখানে উপস্থিত হন। এ সময় ইউএনও পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে উপকারভোগী দুর্জয় নামের এক তরুণকে মারধর করেন।
ঘটনার পাঁচ মাস পর রোববার যুবদল নেতা রায়হান কবীর এ নিয়ে আদালতে মামলার আবেদন করেন। মামলায় ইউএনওকে একমাত্র বিবাদী করা হয়। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন বলে জানান বাদীর আইনজীবী মিজানুর রহমান।
এ বিষয়ে বাদী রায়হান কবীর বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। ইউএনও ওই দিন দুপুরে পুলিশ নিয়ে পরিষদে উপস্থিত হয়ে পুলিশের কাছ থেকে লাঠি নিয়ে দুর্জয়কে মারধর করে একপর্যায়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে যান। আমরা চেষ্টা করেও তাঁকে প্রতিহত করতে পারিনি। একজন নিরীহ নাগরিককে সরকারি আমলা হয়ে তিনি মারধর করতে পারেন না। বিষয়টি এলাকায় ক্ষোভ ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হওয়ায় ন্যায়বিচারের দাবিতে আমি ছয়জনকে সাক্ষী করে মামলা করেছি। মারধরের একটি ভিডিও সংযুক্ত করা হয়েছে।’
জানতে চাইলে ভুক্তভোগী দুর্জয় মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার মা হুসনা আক্তার অসুস্থ থাহনে আমি সেই দিন সাড়ে ১২টার সময় ভিজিএফের চাউল আনতাম যাই। ফরে লোকজনের ঠেলাধাক্কায় পরিষদের সামনে দেওয়া বাঁশের বেড়া খুইল্লা গেলে আমি সামনে গিয়া পইড়া যাই। এ সময় ইউএনও স্যার আইয়া আমারে মারধর করেন। পরে আমারে চারটা পর্যন্ত আটকাইয়া রাইখা একটা কাগজে স্বাক্ষর কইরা ছাইড়া দিছে। আমি কোনো চাউল লুটপাট করার লোক না।’
অভিযোগের বিষয়ে ইউএনও রুয়েল সাংমা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কাউকে মারধর করিনি। এটা আমাকে নিয়ে বিভিন্ন মহলের চক্রান্ত চলছে। রমজানের ঈদের সময় কিছু বিশৃঙ্খল জনতা ভিজিএফের মালামাল লুট করে নিয়ে যাচ্ছিল। তখন কিছু উচ্ছৃঙ্খল জনতাকে আমরা ধরছি, ধরার পরে তারা আমার সঙ্গে উদ্ধত আচরণ করে। আমি তো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তাকে ক্যাপচার করছি। ওখানে পুলিশ বা অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছিল না। তবে আমি কাউকেই কোনো মারধর করিনি।’
পিবিআইয়ের ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. রকিবুল আক্তার বলেন, ‘এ রকম একটি বিষয় শুনেছি। তবে আদালতের আদেশটি এখনো অফিশিয়ালি পাইনি।’
জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাসের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, রোববার এ নিয়ে একটি ডাক ফাইল কার্যালয়ে এসেছে। বিষয়টি তদন্তাধীন।