আলোচনায় ফেরাতে ইরানকে লোভনীয় প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের
Published: 27th, June 2025 GMT
ইরানকে পরমাণু আলোচনার টেবিলে ফিরিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র ৩০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত সহায়তা করার, নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার এবং আটকে রাখা তহবিলের কোটি কোটি ডলার মুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। বিষয়টির সাথে পরিচিত চারটি সূত্রের বরাত দিয়ে শুক্রবার সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে ইরান ও ইসরায়েলে সামরিক হামলার তীব্রতার মধ্যেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যপ্রাচ্যের মূল খেলোয়াড়রা পর্দার আড়ালে ইরানিদের সাথে কথা বলেছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার পরেও এই আলোচনা চলতি সপ্তাহে অব্যাহত রয়েছে বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা জোর দিয়ে বলেছেন যে বেশ কয়েকটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এগুলো প্রাথমিক ও ধারাবাহিক বিকশিত হচ্ছে, যেখানে শুধু একটি আলোচনার অযোগ্য বিষয় রয়েছে-ইউরেনিয়াম শূন্য সমৃদ্ধকরণ। অবশ্য ইরান ধারাবাহিকভাবে বলেছে যে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ তাদের প্রয়োজন। তবে দুটি সূত্র সিএনএনকে জানিয়েছে, কমপক্ষে একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাবে ইরানের জন্য বেশ কয়েকটি প্রণোদনা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
গত শুক্রবার ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক হামলার আগের দিন হোয়াইট হাউসে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ এবং উপসাগরীয় অংশীদারদের মধ্যে গোপ বৈঠক হয়েছে। ঘন্টাব্যাপী বৈঠকের কিছু বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
আলোচনার বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে-ইরানের একটি নতুন অ-সমৃদ্ধকরণ পারমাণবিক কর্মসূচিতে আনুমানিক ২০-৩০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ যা বেসামরিক জ্বালানি উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হবে। এই অর্থ সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসবে না। বরং যুক্তরাষ্ট্রের আরব অংশীদাররা এই ব্যয় বহন করবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেছেন, “আমেরিকা ইরানের সাথে এই আলোচনার নেতৃত্ব দিতে ইচ্ছুক। পারমাণবিক কর্মসূচি নির্মাণের জন্য কাউকে অর্থ প্রদান করতে হবে, তবে আমরা সেই প্রতিশ্রুতি দেব না।”
অন্যান্য প্রণোদনার মধ্যে রয়েছে ইরানের উপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা এবং তেহরানের বিদেশী ব্যাংক অ্যাকাউন্টে থাকা ৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়ের অনুমতি দেওয়া।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য ক তর ষ ট র প রস ত ব
এছাড়াও পড়ুন:
শেষ হলো এক ছাদের নিচে ৩ খাতের প্রদর্শনী
দেশের আবাসন, নির্মাণ, পানি ও বিদ্যুৎ খাতের বিভিন্ন পণ্য নিয়ে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী আজ শনিবার শেষ হয়েছে। এতে ২০ দেশের দুই শতাধিক প্রতিষ্ঠান এক ছাদের নিচে তিন খাতের প্রায় সব ধরনের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করেছে।
প্রদর্শনীটির আয়োজন করে সেমস গ্লোবাল। এতে ওয়ালটন, এসিআই, রহিমআফরোজ, ওমেরা, এসএসজিসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্র্যান্ডগুলো তাদের সর্বশেষ পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করেছে। গত বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া এ প্রদর্শনী প্রতিদিনই ব্যবসায়ী, গ্রাহক ও দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয় বলে জানান আয়োজকেরা।
আজ প্রদর্শনীতে গিয়ে স্টলগুলোতে শেষ মুহূর্তের ব্যস্ততা দেখা যায়। সবাই ক্রেতা–দর্শনার্থীকে নিজেদের পণ্যসেবার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন। একই সঙ্গে আগ্রহীদের নাম, মুঠোফোন নম্বর সংগ্রহ করে রাখছিলেন বিক্রয় প্রতিনিধিরা। আয়োজকেরা জানান, প্রদর্শনীতে সব মিলিয়ে পাঁচ শতাধিক বুথ ও আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়ন ছিল।
ওয়ালটনের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি তাদের নতুন কেব্ল পণ্য প্রদর্শন করছে। এ বছরের জানুয়ারিতে কেব্লের ব্যবসায়ে আসে দেশীয় টেক ইলেকট্রনিকস প্রতিষ্ঠানটি। এখন দেশের বাজারের পাশাপাশি ৭টি দেশে কেব্ল রপ্তানি করছে বলে জানান ওয়ালটনের বিপণন কর্মকর্তা ইদ্রিস মোল্লা। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কাসহ সাত দেশে আমাদের পণ্য যাচ্ছে। আমাদের পণ্যের মধ্যে এলিভেটর এবং ক্রেনে ব্যবহার করার কেব্ল রয়েছে। তা ছাড়া ফায়ার অ্যালার্ম কেব্লও আছে আমাদের।’ প্রদর্শনীতে তাদের লিফটও দেখছেন ক্রেতারা।
এসিআইয়ের স্টলে গিয়ে দেখা যায়, দেশের ভ্রমণপিপাসুদের কথা চিন্তা করে পোর্টেবল এসির প্রদর্শনী করছে প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে যাঁরা তাঁবু টাঙিয়ে ক্যাম্প করতে পছন্দ করেন, তাঁদের জন্য ৫ থেকে ১৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় তাঁবুর পরিবেশ ঠান্ডা এ গরম করার ব্যবস্থা থাকবে। দেড় ঘণ্টার চার্জে এটি টানা ৮ ঘণ্টা ব্যবহার করা যাবে। তবে পণ্যটি এখনো বাজারে আসেনি। তাই এর দাম সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে পারেননি প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী নাবিল মোর্শেদ। প্রথম আলোকে তিনি জানান, পণ্যটি চীনে ব্যাপক চলছে। চায়না ইকো ফ্লো কোম্পানির একক পরিবেশক হিসেবে দেশের বাজার যাচাই করার জন্য প্রদর্শনীতে রাখা হয়েছে ১৫ কেজি ওজনের যন্ত্রটি। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি চীনের তৈরি ৫০০ ওয়াটের ১ ঘণ্টা ব্যাকআপের আইপিএস প্রদর্শনীতে নিয়ে আসে। এটির দাম ৭৭ হাজার ৯০০ টাকা।
সুপার স্টার কোম্পানি সৌরচালিত সেচপাম্প প্রদর্শনীতে নিয়ে আসে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধিরা জানান, খরচ কমে আসায় এখন কৃষিতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এই সোলার পাম্প।
ওমেরা সোলার তাদের তৈরি সোলার প্যানেল নিয়ে আসে। ওমরা সেলারের প্রধান ডিজাইনার আমির হামজা প্রথম আলোকে জানান, এখন দেশের বাজারের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় তাদের সোলার প্যানেল রপ্তানি হচ্ছে। দেশের মধ্যে পাহাড়ি এলাকায় ছোট আকারের সোলার প্যানেল বেশি বিক্রি হচ্ছে।
প্রদর্শনীর আবাসন অংশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের প্রকল্পগুলো নিয়ে আসে। তাদের আবাসিক ভবন ছাড়াও বিভিন্ন হোটেল এবং রিসোর্টে বিনিয়োগের জন্য ক্রেতা–দর্শনার্থীদের নানা অফার দিতে দেখা যায়। কুয়াকাটায় পাঁচ তারকা মানের হোটেল তৈরি করছে ম্যানগ্রোভ ইকো রিসোর্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান। ৫০ শতাংশ শেয়ারের মাধ্যমে প্রায় ৫ হাজার ইউনিটের মালিকানা বিক্রি করছে তারা। ৪ লাখ থেকে ৪০ লাখ টাকায় এই হোটেলের মালিকানা নেওয়ার অফার করা হয় প্রদর্শনীতে।
প্রদর্শনীর পানির অংশে বিভিন্ন পণ্যের সমাহার দেখা যায়। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে অফিস কিংবা কারখানার সুপেয় পানি বিশুদ্ধকরণের নানা প্রযুক্তি নিয়ে হাজির হয়েছিল বিভিন্ন কোম্পানি। ৫ থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিভিন্ন মানের পানি বিশুদ্ধকরণ যন্ত্র নিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানগুলো।