যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেছেন, ইরান তার সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম কোথাও সরিয়ে নিয়েছে—এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্যের কথা তাঁর জানা নেই। গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে হেগসেথ এ কথা বলেন। হেগসেথের কথা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথার প্রতিধ্বনি। এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেছেন ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস করা হয়েছে।
গত শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর বোমারু বিমানগুলো ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনার ওপর হামলা চালায়, যেখানে ৩০ হাজার পাউন্ড ওজনের এক ডজনের বেশি ‘বাংকার-বাস্টার’ বোমা ব্যবহার করা হয়।
এ হামলার ফলাফল গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে, যাতে বোঝা যায় এটি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিকে কতটা পিছিয়ে দিতে পেরেছে।
হেগসেথ বলেন, ‘আমি এমন কোনো গোয়েন্দা তথ্য দেখিনি বা জানি না, যা বলছে যেসব জিনিস যেখানে থাকার কথা ছিল, সেগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে বা অন্য কোথাও নেওয়া হয়েছে।’
■ প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ইরানে হামলাকে সফল বলে আখ্যায়িত করেন। ■ যুক্তরাষ্ট্রের হামলার সফলতাকে সাংবাদিকেরা খাটো করছেন বলে দাবি হেগসেথের।সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনের পুরোটা পর্যবেক্ষণ করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি তাঁর প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকে সমর্থন করে বলেন, কিছু সরিয়ে নিতে অনেক সময় লাগত।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্মে ট্রাম্প লিখেছেন, ‘ফর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার বাইরে যেসব গাড়ি আর ছোট ট্রাক ছিল, সেগুলো ছিল কংক্রিট শ্রমিকদের, যাঁরা টানেলের মুখ ঢাকার কাজ করছিলেন। কোনো কিছুই ওই স্থাপনা থেকে সরানো হয়নি।’ তবে তিনি এ দাবির পক্ষে কোনো প্রমাণ দেননি।
বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ সতর্ক করে বলেছেন, হামলার আগেই ইরান সম্ভবত ফোর্দোর গভীর ভূগর্ভস্থ স্থাপনাটি থেকে অস্ত্র তৈরির উপযোগী মাত্রার উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের একটি মজুত সরিয়ে ফেলেছে এবং তারা এটি এমন কোনো গোপন স্থানে লুকিয়ে রাখতে পারে, যার অবস্থান ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র বা জাতিসংঘের পরমাণু পরিদর্শকদের অজানা।
বিশেষজ্ঞরা উল্লেখ করেছেন, ম্যাক্সার টেকনোলজিসের স্যাটেলাইট চিত্রে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ফোর্দো পারমাণবিক স্থাপনায় অস্বাভাবিক তৎপরতা দেখা গেছে। চিত্রে দেখা যায়, স্থাপনাটির একটি প্রবেশপথের বাইরে দীর্ঘ লাইনে অনেক যানবাহন অপেক্ষা করছে।
রোববার রয়টার্সকে এক জ্যেষ্ঠ ইরানি সূত্র জানিয়েছেন, হামলার আগেই ৬০ শতাংশ মাত্রার উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের বেশির ভাগ অংশ একটি স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।
ফিন্যান্সিয়াল টাইমস ইউরোপীয় গোয়েন্দা মূল্যায়নের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ইরানের উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত মূলত অক্ষত রয়েছে। কারণ, এগুলো শুধু ফোর্দোতে কেন্দ্রীভূত ছিল না।
এ দাবিগুলো অস্বীকার করে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের হামলার সফলতাকে সাংবাদিকেরা খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করছেন।
র্যাটক্লিফ, হেগসেথ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল ড্যান কেইন বৃহস্পতিবার একটি গোপন ব্রিফিংয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের ১০০ সদস্যের সবার সঙ্গে এ হামলার বিস্তারিত তথ্য শেয়ার করেন।
পেন্টাগনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এ হামলাকে ঐতিহাসিকভাবে সফল বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি এমন এক সময়ে এ মন্তব্য করেছেন, যখন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বৃহস্পতিবার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র যদি আবার কোনো হামলা চালায়, তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলো ইরানের পাল্টা আঘাতের লক্ষ্য হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র
এছাড়াও পড়ুন:
রোনালদোর বাগ্দানের আংটির দাম কত
দীর্ঘদিনের প্রেমিকা জর্জিনা রদ্রিগেজকে গত পরশু বিয়ের প্রস্তাব দেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। ইনস্টাগ্রামে জর্জিনা একটি ছবি পোস্ট করে বিষয়টি সবাইকে জানান। ছবিতে দেখা যায়, নিজের আংটি পরা হাতটি রোনালদোর হাতের ওপর রেখেছেন জর্জিনা। আংটিটি ইতিমধ্যেই সবার নজর কেড়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা চলছে, এই আংটির দাম কত হতে পারে?
বিশ্বের অন্যতম বড় ফ্যাশন ও লাইফস্টাইল প্রকাশনা ‘এল’ এই প্রশ্নের উত্তর জেনেছে। মূল উৎপত্তিস্থল ফ্রান্সে হলেও তাদের ৪৫টি আন্তর্জাতিক সংস্করণের মধ্যে ‘এল’ অস্ট্রেলিয়া সংস্করণ এক গয়নার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছে। সেই বিশেষজ্ঞের মতে, জর্জিনার হাতে শোভা পাওয়া এই আংটির দাম ১ কোটি ডলারের (প্রায় ১২১ কোটি ৮২ লাখ টাকা) বেশি হতে পারে।
জর্জিনার পোস্ট করা সেই ছবির ক্যাপশনেই পরিষ্কার, রোনালদোর বিয়ের প্রস্তাবে তাঁর সম্মতি আছে, ‘হ্যাঁ, আমি রাজি। এই জীবনে এবং আমার অন্য সব জন্মেও।’ অর্থাৎ পরিচয়ের ৯ বছর পর তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক এখন চূড়ান্ত পরিণতি পাওয়ার অপেক্ষায়।
আরও পড়ুনঅবশেষে জর্জিনাকে বিয়ের প্রস্তাব রোনালদোর ২১ ঘণ্টা আগেআংটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতঝলমলে আংটিটি গয়নার বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণের চেষ্টা করেছেন। এক বিশেষজ্ঞের মতে, আংটির মাঝে ওভাল আকৃতি করে কাটা হীরকখণ্ডটির অন্তত ২২ ক্যারেটের বেশি। আবার কারও মতে, ২৫ থেকে ৩০ ক্যারেট হতে পারে, তাহলে শুধু হীরকখণ্ডের দামই হবে আনুমানিক ২০ থেকে ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। এই দাম নির্ভর করছে হীরকখণ্ডটির গুণগত মান, কাটিং ও রঙের ওপর।
নিউইয়র্ক পোস্টের গসিপ কলাম ‘পেজ সিক্স’ জানিয়েছে, আংটির মাঝের পাথরটি যদি ৩০ ক্যারেটের নিখুঁত ডি-কালারের হয় এবং তার আশপাশে বড় আকারের হীরা ও প্লাটিনাম সেটিং থাকে, তাহলে এর দাম ২০ থেকে ৫০ লাখ ডলার পর্যন্ত হতে পারে।
অস্ট্রেলিয়ার গয়নার ব্র্যান্ড কুশলা হুইটিংয়ের জেনারেল ম্যানেজার আন্না হুইটিং ‘এল অস্ট্রেলিয়া’কে এ বিষয়ে বলেন, ‘ওভাল-কাট করা মাঝের হীরকখণ্ড ২৫ ক্যারেটের বেশি অনুমান করছি। এর লম্বাটে আকার পাথর আঙুলে দেয় দারুণ এক শৈল্পিক ছোঁয়া।’
হুইটিং ব্যাখ্যা করেন, ‘মূল পাথরের দুই পাশে রয়েছে দুটি ছোট হীরকখণ্ড, প্রতিটি প্রায় এক ক্যারেট, যা মিলিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ভারসাম্যপূর্ণ থ্রি-স্টোন ডিজাইন। আংটিটি প্লাটিনাম বা হোয়াইট গোল্ড দিয়ে বানানো, যেখানে ডাবল-ক্ল সেটিং ব্যবহার করা হয়েছে, যা মাঝের পাথরটিকে উঁচুতে ধরে রাখে, ফলে আলো সেখানে সহজে প্রবেশ করে উজ্জ্বলতা বাড়ায় ও নিরাপদ রাখে।’
আর দাম? হুইটিং বলেন, ‘পাথরের আকার, গুণমান ও কারিগরি বিবেচনায়, আগের অনুমানের চেয়েও এর দাম বেশি হতে পারে। আমার মতে, এটি কয়েক কোটি মার্কিন ডলার হবে।’
গয়নার আরেক বিশেষজ্ঞ মনিকা রুগেরিনো বলেন, ‘আমি মনে করি মাঝের হীরকখণ্ডটি ১৫ ক্যারেটের বেশি, পাশে রয়েছে দুটি ছোট ওভাল বা পেয়ার-শেপড পাথর। বর্তমানে ওভাল, পেয়ার ও মারকুইজ কাটের মতো ফ্যান্সি কাট জনপ্রিয়তা পাচ্ছে, আর ফ্যাশন কিছুটা পুরোনো যুগের নকশায় ফিরে যাচ্ছে। এখানে আমি বুলগারির (ইতালিয়ান ফ্যাশন হাউস) ‘গ্রিফি’ ডিজাইনের ছোঁয়া দেখি, যা একসময় এলিজাবেথ টেলর ও সোফিয়া লরেন পরিধান করতেন।’