চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ। আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে এই মানববন্ধন হয়।

‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলন’ এর ব্যানারে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের নানা সমস্যার সমাধান চাকসু নির্বাচনের মাধ্যমেই সম্ভব। দীর্ঘদিন ধরে এই নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সাংগঠনিক ও প্রতিনিধিত্বশীল অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

এর আগে গত বুধবার ও বৃহস্পতিবারও একই দাবিতে মানববন্ধন করেন সংস্কার আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। তাঁরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা না এলে কঠোর কর্মসূচিতে যাবেন।

মানববন্ধনে স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসির (স্যাড) কেন্দ্রীয় মুখপাত্র জগলুল আহমেদ বলেন, বড় বড় ছাত্রসংগঠনগুলো নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধা ছাড়া কিছুই ভাবে না। তাদের আন্দোলনও নির্ভর করে দলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের সাড়া পাওয়ার ওপর। ছাত্র-শিক্ষকের এই রাজনীতি শিক্ষার্থীদের কোনো সুফল দেয়নি।

জগলুল আহমেদ আরও বলেন, এখানে নতুন কোনো বন্দোবস্ত নেই, সবই প্রহসন। এই প্রহসনের অবসান একমাত্র সম্ভব চাকসু নির্বাচনের মাধ্যমে।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আবির বিন জাবেদ বলেন, বর্তমান প্রশাসন নতুন কী করেছে, সেটাই প্রশ্ন। আগের প্রশাসন যে দুটি হল নির্মাণ করেছিল, নতুন প্রশাসন কেবল সেগুলো উদ্বোধন করেছে। একমাত্র নতুন উদ্যোগ ছিল সমাবর্তন, সেটিও হয়েছে দুর্ভোগের মাধ্যমে।

আবির বিন জাবেদ আরও বলেন, ‘সমাবর্তনের পর প্রথম কাজ হিসেবে চাকসু নির্বাচনের আশ্বাস দিয়েছিল প্রশাসন। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা সে আশ্বাসের বাস্তবায়ন দেখতে পাচ্ছি না।’

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তাসনীম জাহান বলেন, ‘চাকসু আমাদের অধিকার। আমাদের পড়াশোনা ফেলে কেন বারবার আন্দোলন করতে হবে? আমি চাই, আমার নির্বাচিত প্রতিনিধি আমার কথা বলুক।’

কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব রোমান রহমান, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী তাহসান হাবীব, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী তাহসিনা রহমান, ইনসানিয়ত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কেফায়েত উল্লাহ প্রমুখ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম চাকসু নির্বাচন হয় ১৯৭০ সালে। নিয়ম অনুযায়ী প্রতি শিক্ষাবর্ষে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ছয়বার এ নির্বাচন হয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। পরে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের মুখোমুখি অবস্থান, সংঘর্ষ ও অনুকূল পরিবেশ না থাকায় আর কোনো নির্বাচন হয়নি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মন্দির ভেঙে দেওয়ার ঘটনা মনকেও ভেঙে দিয়েছে: ঐক্য পরিষদের সভাপতি

রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গামন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় মন ভেঙে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নির্মল রোজারিও। তিনি বলেন, এই মন্দির ভাঙার জন্য সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে।

আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে নির্মল রোজারিও এ কথাগুলো বলেন।

সম্প্রতি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গামন্দির ও প্রতিমা ভাঙচুরের প্রতিবাদে এই মানববন্ধন করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। মানববন্ধন থেকে লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে আটক পরেশ চন্দ্র শীল ও তাঁর ছেলে বিষ্ণু চন্দ্র শীলকে পিটিয়ে পুলিশে দেওয়া, যশোরের অভয়নগরে বর্বরোচিত হামলা, প্রশাসনের সংখ্যালঘু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধমূলক আচরণসহ সারা দেশে চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতার প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।

মানববন্ধনে নির্মল রোজারিও বলেন, প্রত্যাশা ছিল অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সাম্প্রদায়িক ঘটনা থেকে রেহাই পাওয়া যাবে। কিন্তু সে আশার গুড়ে বালি। মন্দিরের ওপর হামলা হৃদয়কে ভেঙে দিয়েছে। মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা, মসজিদ—এগুলো পবিত্র স্থান এবং অনুভূতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকে। সুতরাং মন্দির ভাঙার স্পষ্ট ব্যাখ্যা সরকারকে দিতে হবে।

গত বড়দিনে ১৭টি গির্জায় অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে দাবি করে নির্মল রোজারিও বলেন, এই সরকার মুখে শুধু সম্প্রীতির কথা বলে, কিন্তু সম্প্রীতি রক্ষায় যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সে ক্ষেত্রে দুর্বলতা রয়েছে। কেন এই মন্দির ভাঙা হয়েছে, তা তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়ে তিনি মন্দিরটিকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান। সব ধর্মের মানুষ এখানে নিরাপদে বসবাস করবে, সম্প্রীতির মধ্যে বসবাস করবে—এমন দেশ দেখতে চান বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অন্যতম সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক। তিনি বলেন, ‘দেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি চরম আকার ধারণ করেছে। সরকারের উসকানিতে, সরকারি লোকদের কথাবার্তায় সাম্প্রদায়িক শক্তি বা মব ভায়োলেন্সের নামে যারা কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, তারা আরও উৎসাহিত হচ্ছে।’

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়িক শক্তি তৎপর রয়েছে উল্লেখ করে নিমচন্দ্র ভৌমিক বলেন, সরকারের উদ্যোগে একটি মন্দির বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার দেশকে যে অবস্থায় নিয়ে যাচ্ছে, এ অবস্থা দেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেকে আনবে। এ থেকে পরিত্রাণে সব গণতান্ত্রিক শক্তি, অসাম্প্রদায়িক শক্তিকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের মানববন্ধন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যশোরে অধিগ্রহণ ছাড়া বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন স্থাপনের কাজ বন্ধ করে দিলেন জমিমালিকেরা
  • জমির মালিককে না জানিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপনের প্রতিবাদে মানববন্ধ
  • চবি বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের ফলাফল পুনর্মূল্যায়নের দাবি
  • রিমান্ড শেষে সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল কারাগারে
  • রিমান্ড শেষে সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল আবার আদালতে
  • বন্দরে সরকারি খাল ও বাজার অবমুক্তির জন্য  মানববন্ধন
  • মন্দির ভেঙে দেওয়ার ঘটনা মনকেও ভেঙে দিয়েছে: ঐক্য পরিষদের সভাপতি
  • প্রহসনের নির্বাচনে অনিয়মে আরও যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁদেরকে আমরা খুঁজছি: রাষ্ট্রপক্ষ
  • সাবেক সিইসি নূরুল হুদাকে আবার রিমান্ডে চায় পুলিশ