ট্রেন শিডিউল, ব্যাংকে হয়রানি বন্ধে চবি শিক্ষার্থীদের সমাবেশ
Published: 9th, July 2025 GMT
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে শাটল ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ও ব্যাংকে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রতিদিন। এসব সমস্যা নিরসনে প্রশাসনের উদাসীনতায় ক্ষোভ জানিয়ে ছাত্রসমাবেশ করেছে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের চবি শাখা।
মঙ্গলবার দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেলস্টেশন প্রাঙ্গণে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনের নেতারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে শাটল ট্রেনের সময়সূচি ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ব্যাংক কার্যক্রমে ধীরগতি ও লোকবল সংকটে শিক্ষার্থীদের সময় নষ্ট হচ্ছে। এসব সমস্যার কথা বারবার প্রশাসনকে জানালেও দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ নেই।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সংগঠক রিশাদ আমিন বর্ণের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি ধ্রুব বড়ুয়াসহ মোহাম্মদ আকিব, এমদাদ উল্লাহ প্রমুখ।
ধ্রুব বড়ুয়া বলেন, এখানকার অধিকাংশ শিক্ষার্থী দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাদের অনেকেই টিউশনি করে খরচ চালায়। ফলে সময় তাদের কাছে অনেক মূল্যবান। অথচ ট্রেন শিডিউল বিপর্যয় ও ব্যাংকে হয়রানি তাদের সেই সময় কেড়ে নেয়। এ অবস্থা চলতে পারে না। সংগঠন সদস্য মোহাম্মদ আকিব বলেন, ‘প্রশাসন চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা বলে সেমিনারে যায়, অথচ নিজের বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটল ট্রেনের শিডিউল ঠিক রাখতে পারে না। ব্যাংকের লাইন আর ট্রেনের সময়সূচির এই নৈরাজ্য শিক্ষার্থীদের প্রোডাক্টিভ সময় হরণ করছে। এটা বন্ধে অবিলম্বে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে হবে।’
এমদাদ উল্লাহ বলেন, ‘ছাত্র শ্রমিকদের রক্তের বিনিময়ে আমরা নতুন ক্যাম্পাস পেয়েছি। কিন্তু সমস্যাগুলো আগের মতোই রয়ে গেছে। যেন একজন শিক্ষার্থী মারা না গেলে প্রশাসনের টনক নড়ে না! প্রশাসন যদি উদাসীন থাকে, তাহলে ছাত্রসমাজ আন্দোলনের পথেই যাবে।’
বক্তারা অবিলম্বে শাটল ট্রেনের শিডিউল স্বাভাবিক করা এবং ব্যাংক কার্যক্রমে শিক্ষার্থীবান্ধব সেবা নিশ্চিতের দাবি জানান। দাবি না মানা হলে আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ড উল
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে ১২০টি দোকান উচ্ছেদ
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টের বালিয়াড়ি ও ঝাউবাগান দখল করে গড়ে তোলা ১২০টির বেশি অবৈধ দোকানপাট (চার চাকার টংঘর) উচ্ছেদ করেছে জেলা প্রশাসন। আজ রোববার বেলা দুইটা থেকে বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত চলা এই যৌথ অভিযানে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের কয়েক শ সদস্য অংশ নেন। অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগে একজনকে আটক করা হলেও সামগ্রিকভাবে শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে স্থাপনা নির্মাণ না করার বিষয়ে আগেই উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ছিল।
সকালে সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, বেলা ১১টার পর থেকে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা অবৈধ দোকানপাট সরানোর চেষ্টা চালান। তবে দোকানমালিকেরা নানা অজুহাত দিলে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী মাইকিং করে বেলা দুইটা পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দেন। তিনি ঘোষণা দেন, এরপরও দোকান না সরালে যৌথ বাহিনী উচ্ছেদে নামবে।
একই সময়ে ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান ও অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, ‘কার্ড থাকুক বা না থাকুক, ঝাউবাগানের ভেতর কোনো দোকান রাখা যাবে না।’
দুপুর গড়িয়ে গেলেও দোকান না সরায় খননযন্ত্র (এক্সকাভেটর) দিয়ে অবৈধ দোকান ভাঙার কাজ শুরু হয়। পরে দোকানমালিকেরা ঝাউবাগানের ভেতরে রাখা দোকান সরিয়ে সৈকত সড়কের পাশে রাখতে শুরু করেন। এতে সাময়িকভাবে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। পরে পুলিশ মাইকিং করে দোকানগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিতে অনুরোধ জানায়। বিকেল চারটার দিকে এক্সকাভেটর দিয়ে কয়েকটি দোকান ভাঙা শুরু হলে বাকিগুলো সরিয়ে নেওয়া হয়।
যৌথ অভিযানে নেতৃত্ব দেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম। উপস্থিত ছিলেন ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ, সেনাবাহিনীর মেজর আরিফ শাহরিয়ার, সদর ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহমেদ পেয়ার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আজিম খান প্রমুখ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২০ সেপ্টেম্বর রাতে সুগন্ধা সৈকতের বালিয়াড়ি দখল করে দেড় শতাধিক চার চাকার টংঘর দোকান বসানো হয়। জেলা প্রশাসন ও ট্যুরিস্ট পুলিশের তৎপরতায় দোকানগুলো সরিয়ে দিলে পরে মসজিদের উত্তর পাশের ঝাউবাগানে নতুন করে দোকান বসানো হয়। এতে পর্যটকদের নিরাপদ চলাচল ব্যাহত হচ্ছিল।
ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোনো সংঘাত ছাড়াই যৌথ বাহিনী ঝাউবাগানের ভেতর থেকে ১২০টির বেশি দোকান উচ্ছেদ করতে সক্ষম হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে কেউ বালিয়াড়ি বা ঝাউবাগানে অবৈধ স্থাপনা করতে না পারে, সেদিকেও নজর রাখা হবে।’
পুলিশ জানায়, সুগন্ধা সৈকতের বালিয়াড়িতে আরও কয়েক শ দোকানপাট রয়েছে। আগামী ১৬ অক্টোবরের মধ্যে এগুলো নিজ উদ্যোগে সরানোর সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এর আগে শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক নেতা ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় নতুন স্থাপনাগুলো ১১ অক্টোবর রাতের মধ্যে এবং পুরোনো স্থাপনাগুলো ১৬ অক্টোবরের মধ্যে সরাতে হবে। এরপর শহরজুড়ে মাইকিং করে বিষয়টি জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মান্নান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রথম দিনের অভিযানে ১২০টির মতো দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। অবশিষ্টগুলো ১৭ অক্টোবরের মধ্যে সরানো হবে। একই সঙ্গে সৈকতের ময়লা-আবর্জনাও পরিষ্কার করা হচ্ছে। আমরা চাই, কোনো পর্যটক যেন সৈকতে এসে ভোগান্তিতে না পড়েন।’