কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার বিরুদ্ধে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন স্ত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার পাকুন্দিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানান তিনি। ভুক্তভোগী তরুণীর ভাষ্য, তাদের আড়াই বছরের একমাত্র সন্তানকেও কৌশলে নিজের কাছে নিয়ে গেছেন। এমনকি, পুরোনো তারিখে তালাক দিয়েছেন তাঁকে।

এ বিষয়ে ৩০ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী সুমাইয়া আক্তার হাসি (২৫)। তিনি উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি চারটেকি গ্রামের তাজউদ্দিনের মেয়ে। অভিযোগ ও সংবাদ সম্মেলন থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে হাসির বিয়ে হয় তারাকান্দি গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে রাজিন সালেহের (৩১) সঙ্গে। রাজিন পেশায় একটি মাদ্রাসার কম্পিউটার অপারেটর। তাদের আড়াই বছর বয়সী একটি মেয়ে আছে।

হাসির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই সালেহ যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন। তখন স্ত্রী-সন্তানের খরচও বহন করতেন না। তাঁর বাবার বাড়ি থেকে খরচ চালানো হতো। এক পর্যায়ে হাসিকে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কয়েকবার লোক পাঠিয়ে ভালো ভালো কথা বলে বাড়ি নিয়ে যান সালেহ। এর পরও খারাপ আচরণের কারণে হাসি বাবার বাড়ি চলে আসেন।

ইউএনওর কাছে দেওয়া অভিযোগে হাসি লিখেছেন, সালেহ হুমকি দিচ্ছেন, তিনি এখন এনসিপির বড় নেতা। দেশ চালান, যা বলবেন, তাই হবে। হাসি ইউএনওর কাছে ঘটনার তদন্ত করে স্বামীর সংসারে শান্তিপূর্ণভাবে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।

এদিকে এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য সচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমের সই করা চিঠিতে গত ২৯ জুন রাজিন সালেহকে প্রধান সমন্বয়কারী করে দলের পাকুন্দিয়া উপজেলার ১৮ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। এর দুই দিন আগে ২৭ জুন সালেহ নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে হাসিকে তালাক দিয়েছেন। সেটি নোটিশ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে পাঠিয়েছেন ৩ জুলাই। কিন্তু নোটিশ হাসি গ্রহণ করেননি বলে জানিয়েছেন সালেহ।

এনসিপি নেতা রাজিন সালেহ এ বিষয়ে বলেন, ‘হাসির চলাফেরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়েছিল। আচার-আচরণও খারাপ ছিল। বনিবনা হচ্ছিল না। সেই কারণেই তালাক দিয়েছেন।’ তাঁর দাবি, একটি রাজনৈতিক মহল তাঁর সুনাম নষ্ট করতে এসব অভিযোগ তোলাচ্ছে।

পাকুন্দিয়ার ইউএনও মো.

বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর রাজিন সালেহকে নোটিশ করেছিলাম মীমাংসায় বসার জন্য। কিন্তু পরে জানা গেছে, তিনি আগেই তালাক দিয়েছেন। ফলে এটি এখন আইনি প্রক্রিয়ায় চলে গেছে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এনস প এনস প

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাভেল পাস ছাড়া সেন্টমার্টিনের টিকিট বিক্রি: কেয়ারি সিন্দাবাদকে জরিমানা

সরকার অনুমোদিত ট্রাভেল পাস ছাড়া অবৈধভাবে পর্যটকদের কাছে টিকিট বিক্রির অভিযোগে সেন্টমার্টিনগামী কেয়ারি সিন্দাবাদ জাহাজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া জেটিঘাট থেকে সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল শুরু হয়। যাত্রার আগে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত অনিয়ম শনাক্ত করলে কেয়ারি সিন্দাবাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

আরো পড়ুন:

ময়মনসিংহে ক্লিনিকে অভিযানে কারাদণ্ড-জরিমানা 

ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযানে বাধা, এনসিপি নেতাকে আসামি করে মামলা

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী বলেন, “তিনজন পর্যটকের কাছে ১৮০০ টাকা করে ট্রাভেল পাস ছাড়া (কিউআর কোডবিহীন) সরাসরি টিকিট বিক্রির সত্যতা পাওয়ায় জাহাজ কর্তৃপক্ষকে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।” 

তিনি আরো বলেন, “নির্দেশনা অনুযায়ী এভাবে টিকিট বিক্রি করা যাবে না। প্রথমদিন হওয়ায় গ্রেপ্তার করা হয়নি, মুচলেকা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। পরবর্তীতে এমন অনিয়ম হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন চৌধুরী জানান, কেবল কক্সবাজারের স্থানীয়রা জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই করে টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। অন্যান্য পর্যটকদের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে সরকার অনুমোদিত ট্রাভেল পাস নিতে হবে।

এদিকে, ১ নভেম্বর সেন্টমার্টিন পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হলেও রাত্রিযাপনের অনুমতি না থাকায় পর্যটকরা তখন আগ্রহ দেখাননি। তবে, আজ ১ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই মাস রাত্রিযাপনের সুযোগ থাকায় মৌসুমের প্রতীক্ষিত জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে। প্রথমদিন সেন্ট মার্টিনগামী যাত্রী ছিলেন ১ হাজার ১৭৪ জন পর্যটক।

জাহাজ মালিকদের সংগঠন ‘সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’-এর সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, প্রশাসন মোট ৬টি জাহাজকে অনুমতি দিয়েছে। যাত্রীর সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রথমদিন ৩টি জাহাজ চলাচল করেছে। সেগুলো হলো- এমভি কর্ণফুলী এক্সপ্রেস, এমভি বারো আউলিয়া ও কেয়ারি সিন্দাবাদ। 

মৌসুমের প্রথম দিনের কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নান বলেন, ‘সেন্টমার্টিন ভ্রমণের ওপর সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন কঠোর অবস্থানে আছে। পর্যটকদের নিরাপত্তা, হয়রানি রোধ ও পরিবেশ রক্ষায় নেওয়া ব্যবস্থা নিয়মিত তদারকি করা হবে।”

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার রিজিয়নের প্রধান (অতিরিক্ত ডিআইজি) আপেল মাহমুদ জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তা ও বিধিনিষেধ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্লিনিকের বাথরুম থেকে নবজাতক উদ্ধার, দায়িত্ব নিলেন ইউএনও
  • আরো ৭৭ উপজেলায় নতুন ইউএনও
  • ৭৭ উপজেলায় নতুন ইউএনও
  • ট্রাভেল পাস ছাড়া সেন্টমার্টিনের টিকিট বিক্রি: কেয়ারি সিন্দাবাদকে জরিমানা