রাইনোরিয়া মানে হলো নাক দিয়ে পানি বা শ্লেষ্মা বের হওয়া। এটি নাকের একটি সমস্যা। এটা কোনো রোগ নয়, রোগের উপসর্গ, যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নাসিকা ঝিল্লির প্রদাহের ফলে হয়ে থাকে। ঊর্ধ্ব শ্বাসনালির সংক্রমণ বা বাতাস, অ্যালার্জি এবং সরাসরি জীবাণু সংযোগের কারণে হতে পারে। সাধারণত সর্দি পাঁচ থেকে সাত দিন স্থায়ী থাকে। কিন্তু এ সমস্যা ক্রনিক হয়ে যেতে পারে।

কারণ

রাইনোরিয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।

ভাইরাসজনিত—সাধারণত রাইনোভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে: অ্যালার্জি; সাইনুসাইটিস; তাপমাত্রা পরিবর্তন; নাকের ভেতরে সংক্রমণ; নাকের পলিপ।

নার্ভজনিত—ভাসোমোটার রাইনাইটিস; কোনো কারণে ব্রেনের পানি নাক দিয়ে পড়ে, যাকে বলে সিএসএফ রাইনোরিয়া।

লক্ষণ

১.

নাক শির শির করা ২. নাক দিয়ে বারবার পানি পড়া ৩. হাঁচি–কাশি ৪. নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া ৫. গলা খুসখুস করা ৬. চোখ দিয়ে পানি পড়া ৭. মাথা ভার লাগা

চিকিৎসা

সাধারণত সর্দির চিকিৎসা হলো পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া, বেশি বেশি তরলজাতীয় খাবার ও পানি পান করা। নাকে গরম পানির ভাপ নেওয়া। অ্যালার্জির কারণে হলে যে যে পরিস্থিতিতে অ্যালার্জির উদ্ভব হয়, তা এড়িয়ে চলতে হবে। এ রোগের চিকিৎসায় প্রধান ওষুধ হলো অ্যান্টিহিস্টামিন, স্টেরয়েডজাতীয় নাকের ড্রপ। এ ছাড়া বয়সভেদে মন্টেলুকাস্টজাতীয় ট্যাবলেট বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে।

নাকের ড্রপ একনাগাড়ে অনেক দিন ব্যবহার করলে নাকে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই অবশ্যই একজন নাক কান গলা রোগবিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করতে হবে।

প্রতিকার

রাইনোরিয়া বা সর্দির সুচিকিৎসা না হলে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির আশঙ্কা থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, অ্যালার্জিক রাইনাইটিস থেকে শতাংশ ২৫ ভাগ রোগীর হাঁপানি হতে পারে। এ ছাড়া সর্দি থেকে সাইনুসাইটিস, নাকের পলিপও হতে পারে। ঘর, পর্দা, বিছানার চাদর ভালোভাবে পরিষ্কার রাখতে হবে। রাস্তায় বের হলে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। হাঁচির উদ্রেক হলে চেষ্টা করতে হবে নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে শিষ্টাচার মেনে হাঁচি দিতে। ঠান্ডাজাতীয় খাবার যেমন আইসক্রিম, অতিরিক্ত ঠান্ডা জুস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

ডা. এম আলমগীর চৌধুরী, অধ্যাপক, নাক কান গলা বিভাগ, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ, ধানমন্ডি, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ইন র য়

এছাড়াও পড়ুন:

ইউক্রেন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠকে ভূখণ্ড নিয়ে ‘কোনো আপস’ হয়নি: রুশ কর্মকর্তা

যুদ্ধের ইতি টানতে ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ‘কোনো আপস’ হয়নি। মস্কোয় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর এক রুশ কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও প্রেসিডেন্টের জামাতা জ্যারেড কুশনার মঙ্গলবার ক্রেমলিনে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে মারাত্মক যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতার অংশ হিসেবে তাঁরা এ বৈঠক করেন। এ বৈঠক প্রায় পাঁচ ঘণ্টা ধরে চলে এবং মধ্যরাতের পর শেষ হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ক্রেমলিনের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা কোনো আপসে পৌঁছাতে পারিনি। তবে মার্কিন কিছু প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা এগোতে পারে।’

উশাকভ মঙ্গলবারের আলোচনাকে ‘খুবই ইতিবাচক ও গঠনমূলক’ উল্লেখ করলেও তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘ওয়াশিংটন ও মস্কো— উভয় পক্ষের সামনে এখনো অনেক কাজ বাকি।’

মার্কিন প্রতিনিধিদল একটি শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করতে রাশিয়ার রাজধানীতে গিয়েছিল। সেখানে আগের ফাঁস হওয়া ২৮ দফা শান্তি পরিকল্পনার খসড়ার হালনাগাদ সংস্করণ নিয়ে আলোচনা হয়। ফাঁস হওয়া ‘খসড়াটি রাশিয়ার পক্ষে গেছে’— ইউক্রেন ও দেশটির মিত্রদের এমন কঠোর সমালোচনার মুখে ওয়াশিংটন এতে পরিবর্তন আনে।

কিয়েভ ও ইউরোপের পাল্টা প্রস্তাবটিরও নিন্দা করেছে ক্রেমলিন। পুতিন বারবার বলে আসছেন, এটি তাঁর দেশের কাছে ‘অগ্রহণযোগ্য’।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। মস্কো, রাশিয়া; ২ ডিসেম্বর, ২০২৫।

সম্পর্কিত নিবন্ধ