ডাকসুর প্যানেল ঘোষণা করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন
Published: 7th, August 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে সবার আগে সম্ভাব্য প্যানেল ঘোষণা করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ডাকসু ভবনের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল ঘোষণা দেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল মাহবুবুর রহমান নাহিয়ান।
ডাকসুতে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী হিসেবে সংগঠনটির ঢাবির শাখার সাবেক সভাপতি ইয়াসিন আরাফাত, জিএস হিসেবে ঢাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক খায়রুল আহসান মারজান এবং এজিএস হিসেবে নির্বাচন করবেন সংগঠনটির ঢাবি শাখার বর্তমান সভাপতি সাইফ মুহাম্মদ আলাউদ্দিন।
আরো পড়ুন:
বিতর্কিত ছবির স্থানে খালেদা জিয়ার উক্তি টানাল শিবির
শেখ হাসিনার রাজনীতি টিকিয়ে রাখতে বর্ণচোরা ষড়যন্ত্র করছে বামরা: ঢাবি শিবির
এছাড়া অন্যান্য পদগুলোতে আবু বকর (শিক্ষা ও গবেষণা), মোহাম্মদ আলী ( ইসলামিক স্টাডিজ), আব্দুর রহমান মাহফুজ (ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ), প্লাবন আহমেদ (ইইই), জুরাইয়া আক্তার (মলিকিউলার সাইন্স), ইলিয়াস তালুকদার (আইবি), মুঈনুল ইসলাম (ইসলামের ইতিহাস), ইয়াসিন আরাফাত (সমাজবিজ্ঞান), ইমরান হোসাইন (ব্যাংকিং), ইসমাইল হোসাইন (ইসলামের ইতিহাস), সাব্বির আহমেদ (ইতিহাস), মানসুরুল হক শান্ত (ফিন্যান্স), মোসা.
লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি আবু বকর বলেন, “আমাদের প্যানেল থেকে নির্বাচিত হলে আমরা নারী শিক্ষার্থীদের হলে বৈদ্যুতিক পাখা অথবা শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা, রেজিস্ট্রার অফিসকে ডিজিটালাইজড করা, নিরাপদ, বৈষম্যহীন ও সহনশীল শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত, শতভাগ আবাসন সুবিধা ও আবাসন মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া, গবেষণাভিত্তিক স্কলারশিপ ও ল্যাব সুবিধা বৃদ্ধি, ডিজিটাল লাইব্রেরি ও স্মার্ট ক্লাসরুমের ব্যবস্থা, অনলাইন ক্লাস ও পরীক্ষা সিস্টেম এবং তৎপরবর্তী কার্যক্রম গুলোকে আরও উন্নত ও সহজীকরন, বিভাগ ও হল পর্যায়ে দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধে ছাত্র-অভিযোগ সেল গঠন, মেডিকেল ব্যবস্থাকে উন্নত করার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তায় হেল্পলাইন ও কাউন্সেলিং সেবা চালু, ক্যারিয়ার গাইডেন্স, ইন্টার্নশিপ ও স্কিল ট্রেনিং নিশ্চিত, প্রতিটি শিক্ষার্থীর মাথাপিছু ব্যয়কে যথাযথ স্বচ্ছতার সহিত কাজে লাগানো এবং সব ছাত্র সংগঠনের রাজনৈতিক সহাবস্থান ও গঠনমূলক ছাত্র রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করাসহ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে একটি গণমুখী ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে প্রশাসনকে বাধ্য করার দীপ্ত প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সব নাগরিকের অধিকার নিশ্চিতে ছাত্র রাজনীতি সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। একইসঙ্গে ছাত্র রাজনীতির নামে হল দখল, সিট বানিজ্য, গেস্টরুম-গণরুম কালচার, চাঁদাবাজি, শিক্ষকদের মানহানি, ক্যাম্পাসকে মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত করা, খুন, ধর্ষণসহ সন্ত্রাসী কার্যক্রমের প্রতিযোগিতাও হয়েছে ছাত্র রাজনীতির নামে। ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণমূলক ছাত্র রাজনীতি সবসময়ই চর্চা করে আসছে এবং বিগত প্রায় তিন যুগ সকল অপরাধপ্রবণতা থেকে মুক্ত থেকে শিক্ষার্থীবান্ধব ভূমিকা পালনের চেষ্টা করছে।”
তিনি আরো বলেন, “ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র সংসদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীবান্ধব অধিকার আদায়ের প্রতিযোগিতামূলক ছাত্র রাজনীতিতে বিশ্বাস করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ। আর এটি বাস্তবায়নের অন্যতম মাধ্যম হতে পারে নিয়মিত ছাত্র সংসদ নির্বাচন। তাই আমরা নিয়মিত ডাকসুসহ সব ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে এসেছি এবং ডাকসু নির্বাচন আদায়ের আন্দোলনে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্বদান ও সচেতনতামূলক গণসংযোগ চালিয়েছি।”
আবু বকর বলেন, “সময়মতো ডাকসু আয়োজন হলে শিক্ষার্থীরা তাদের নির্বাচিত প্রতিনিধি পাবে। কিন্তু আপনারা ইতোমধ্যেই হয়ত লক্ষ্য করেছেন যে, কেউ কেউ তাদের নিজস্ব প্রস্তুতির ঘাটতি কিংবা জনসমর্থনের অভাবে এবং পরাজিত হওয়ার ভয়ে ডাকসু আয়োজনকে স্বাগত জানাচ্ছে না। ডাকসু বানচালে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে। আমরা তাদের ডাকসুবিরোধী প্রচারণা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।”
নিজেদের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এই প্যানেল ঘোষণা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে শিক্ষার্থীদের বৃহত্তর স্বার্থে প্রয়োজনে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে অংশ নিতেও আলোচনার সুযোগ আছে মনে করে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসল ম ক স ট ড জ ছ ত র র জন ত স গঠনট র ম হ ম মদ
এছাড়াও পড়ুন:
তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সঙ্গে বৈঠক করেছে। এতে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যতের ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে অবহিত হওয়ার চেষ্টা করে আইএমএফের প্রতিনিধিদল।
পোশাকশিল্পের মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এতে বলা হয়, রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ বুধবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিএমইএর নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা, রশিদ আহমেদ হোসাইনী প্রমুখ। অন্যদিকে আইএমএফের প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংস্থাটির জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ কিয়াও চেন, জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ রুইফেং ঝাং ও অর্থনীতিবিদ আয়া সাইদ।
উভয় পক্ষের আলোচনায় পোশাক রপ্তানিতে মার্কিন শুল্কের সম্ভাব্য প্রভাব, বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের প্রভাব, শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং মূল্য সংযোজিত পণ্য বৈচিত্র্যকরণের কৌশল গুরুত্ব পায়। সেই সঙ্গে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সম্ভাব্য প্রভাব, ব্যবসায়ের পরিচালন ব্যয় কমানো ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য করণীয় বিষয়েও আলোচনা হয়।
আইএমএফের প্রতিনিধিদের কাছে জাতীয় অর্থনীতিতে তৈরি পোশাকশিল্পের অবদানসহ শিল্পের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন বিজিএমইএর নেতারা। তাঁরা শিল্পের কৌশলগত রূপকল্প তুলে ধরে জানান, পোশাকশিল্প বর্তমানে শ্রমনির্ভর মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য সংযোজিত পণ্য, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে। তারই অংশ হিসেবে কৃত্রিম তন্তু ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইলভিত্তিক পোশাক তৈরির সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, তাঁদের বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ ইতিমধ্যে তৈরি পোশাকশিল্পে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ, বন্দর ব্যবস্থাপনায় দক্ষতার উন্নয়ন, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ, সুদের হার এক অঙ্কে নামিয়ে আনা, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন। এ ছাড়া এলডিসি থেকে উত্তরণের পর শুল্কসুবিধা বজায় রাখতে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ), যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) এবং অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (ইপিএ) সই করার বিষয়ে সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছে।