এখন তাঁরা চাঁদাবাজির দায়ে ধরা খাচ্ছে: ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি
Published: 7th, August 2025 GMT
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন, ‘মেধাবীরা মেধার কথা বলে, ইয়াং জেনারেশন করাপশনের বিরুদ্ধে কথা বলে, আবার সুযোগ পাইলে এগুলাই চুরি করে, এগুলাই আবার দুর্নীতি করে। এখন দেখেন নাই, সমন্বয়ক–টমন্বয়ক হইয়া আহারে দেশকে কী ভালোবাসে! এখন আবার চাঁদাবাজির দায়ে, ধর্ষণের দায়ে সবকিছুর দায়ে এগুলা ধরা খাচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এডুকেশনের মেইন পারপাসটাই হচ্ছে হারমোনিয়াস ডেভেলপমেন্ট তৈরি করা। যদি এই হারমোনিয়াস ডেভেলপমেন্ট করতে না পারে, দিস ইজ নট এডুকেশন। এটাকে বলা হয়, শুধু মানুষের মধ্যে শিক্ষা ঢোকানো হয়েছে মেশিন তৈরি করার জন্য, উৎপাদনের মেশিন তৈরি করার জন্য। কিন্তু এডুকেশনের মূল পারপাস এখানে সার্ভ হয় না। এ কারণে বলা হয়, যদি তুমি তোমার সন্তানকে তিনটি “আর” শিক্ষা দাও—রিডিং, রাইটিং এবং অ্যারিথমেটিক আর ফোর্থ “আর” হিসেবে যদি তুমি রিলিজিয়নকে না রাখো, পঞ্চম “আর” হিসেবে তুমি একজন রাসকেল পাবে।’
ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি বলেন, ‘সোসাইটিতে আমাদের জনসংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। কিন্তু মানুষের পরিমাণ কমে যাচ্ছে, মনুষ্যত্ববোধ কমে যাচ্ছে। প্রকাশ্য দিবালোকে পাথর মেরে হত্যা করা, এটা কোন বর্বরতার নজির আমরা স্থাপন করছি? সম্পদের মোহে নিজের ভাইকে হত্যা করা কোন বর্বরতার নজির? মাদক গ্রহণ না করতে পেরে নিজের পিতাকে হত্যা করা, এটা কোন বর্বরতার নজির? এই সোসাইটি কেন তৈরি হয়েছে? মুসলিম শিক্ষাব্যবস্থা, ইসলামি শিক্ষাব্যবস্থা, ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থা যে সোসাইটিতে আছে, সেই সোসাইটিতে তো ধর্ষণ জিরো পর্যায়ে। ইসলামিক দেশগুলোতে যাবেন, সেখানে জিরো পর্যায়ের ধর্ষণ হচ্ছে, করাপশনের পরিমাণ কম। অথচ যে সোসাইটিতে ওয়েস্টার্ন ফিলোসপির কথা আমরা বলি, সেখানে মানুষের সুইসাইডাল রেট অনেক বেশি। কারণ, তাঁরা সামাজিকীকরণ ভুলে গিয়েছে। সামাজিক বন্ধনগুলো থেকে তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।’
পশ্চিমা সংস্কৃতি কখনো মানুষকে শান্তি দিতে পারে না বলে মন্তব্য করেন নুরুল ইসলাম বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে সভ্যতা বিকৃতকারী জাতি হচ্ছে এই পশ্চিমারা। যাদের মধ্যে ধর্মীয় চেতনাগুলো হ্রাস পেয়েছে, হিংস্রতা ও বর্বরতা তাদের মধ্যে বাসা বেঁধেছে। আমাদের প্রাচ্যের প্রসিদ্ধ সংস্কৃতির মধ্যে পশ্চিমারা এই খেয়ালিপনা ঢুকিয়ে আমাদের ফ্যামিলি বন্ডিংসগুলো নষ্ট করে দিতে চায়।’
জেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হাসান আল মামুনের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ফকির মাহবুবুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় এইচআরডি সম্পাদক শরীফ মাহমুদ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা নাজমুল ইসলাম, সাবেক নায়েবে আমির মোসাদ্দেক ভূঁইয়া, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি খালেদ হাসান প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পকে হতাশ করে এবিসিতে ফিরছে ‘জিমি কিমেল লাইভ’
ছয় দিন বন্ধ থাকার পর আজ মঙ্গলবার থেকে সম্প্রচারে ফিরছে ‘জিমি কিমেল লাইভ’। যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মী ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড নিয়ে উপস্থাপক জিমি কিমেলের মন্তব্যের পর ট্রাম্প প্রশাসনের হুমকির মুখে ডিজনি মালিকানাধীন এবিসি নেটওয়ার্কের এই টেলিভিশন অনুষ্ঠানটির সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
এই অনুষ্ঠান বন্ধ করার পর বোধ হয় সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি এবিসির উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলেন। তবে এবার তাঁকে হতাশ হতে হচ্ছে।
গতকাল সোমবার ‘জিমি কিমেল লাইভ’ আবার সম্প্রচারে ফেরানোর ঘোষণা দেয় ডিজনি কর্তৃপক্ষ।‘জিমি কিমেল লাইভ’ রাতের বেলা প্রচার করা একটি কৌতুক অনুষ্ঠান। ১৫ সেপ্টেম্বর প্রচারিত অনুষ্ঠানে জিমি কিমেল বলেছিলেন, ‘মাগা (এমএজিএ) গ্যাং চার্লি কার্কের হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের চেষ্টা করছে।’
সেই রাতের অনুষ্ঠানে কিমেলের করা আরও কয়েকটি মন্তব্য তীব্র সমালোচনার জন্ম দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) চেয়ারম্যান ব্রেন্ডান কারও কিমেলের বক্তব্যের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এবিসির এই উপস্থাপক সম্ভবত সবচেয়ে অসুস্থ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। তিনি ডিজনির প্রতি জিমি কিমেলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।
আমাদের দেশের জন্য একটি আবেগময় পরিস্থিতিতে উত্তেজনার আগুন আরও ছড়িয়ে পড়া এড়াতে এবিসি নেটওয়ার্কের এই মধ্যরাতের কৌতুক অনুষ্ঠানটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।...ডিজনির বিবৃতিএরপর এবিসি কর্তৃপক্ষ ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ এই কমেডিয়ানের অনুষ্ঠানের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়। তাঁকেও সাময়িকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠান বন্ধ ও কিমেলকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়।
এ নিয়ে আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে ‘জিমি কিমেল লাইভ’ অনুষ্ঠান আবার সম্প্রচার শুরুর সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ জানানোর প্রচেষ্টায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ট্রাম্প নিয়মিত তাঁর ও তাঁর প্রশাসনের সমালোচনাকারী সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ও নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের হুমকি দিয়ে থাকেন।
এবিসি নেটওয়ার্কের মালিকদের চাপে বা যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের গণমাধ্যম ও যোগাযোগব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) চাপে পড়ে নয়; বরং বিনোদন সংস্থার স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।গতকাল সোমবার ‘জিমি কিমেল লাইভ’ আবার সম্প্রচারে ফেরানোর ঘোষণা দিয়ে ডিজনির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমাদের দেশের জন্য একটি আবেগময় পরিস্থিতিতে উত্তেজনার আগুন আরও ছড়িয়ে পড়া এড়াতে এবিসি নেটওয়ার্কের এই মধ্যরাতের কৌতুক অনুষ্ঠানটি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কারণ, আমাদের মনে হয়েছিল, কিমেলের কিছু মন্তব্য “অসময়ে বলে ফেলা বা সংবেদনশীল ছিল।”’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা গত কয়েক দিন এ নিয়ে জিমির সঙ্গে গভীরভাবে আলোচনার পর আজ থেকে শোটি আবার সম্প্রচারে আনার সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি।’
আরও পড়ুনট্রাম্পের মিত্র কার্কের হত্যা নিয়ে মন্তব্য করায় জিমি কিমেলের টিভি শো বন্ধ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫এ বিষয়ে জানা আছে এমন দুজন বলেন, ডিজনির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বব আইগার ও ডিজনি এন্টারটেইনমেন্টের সহপ্রধান ডানা ওয়ালডেন এ সপ্তাহান্তে কিমেলের সঙ্গে কথা বলেছেন।
এবিসি নেটওয়ার্কের মালিকদের চাপে বা যুক্তরাষ্ট্রে সব ধরনের গণমাধ্যম ও যোগাযোগব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের (এফসিসি) চাপে পড়ে নয়; বরং বিনোদন সংস্থার স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তাঁরা।
আজকের অনুষ্ঠানেই কিমেল বিষয়টি মিটমাট করে ফেলবেন বলেও আশা করা হচ্ছে। তবে কিমেল বা তাঁর প্রতিনিধিরা এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেননি।
আরও পড়ুনবিরোধী টিভি নেটওয়ার্কের লাইসেন্স ‘বাতিল’ করা উচিত: ট্রাম্প১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫